Advertisement
Advertisement

Breaking News

‘বাঁশি’ ছবি দিয়েই ইন্ডাস্ট্রিতে ফিরতে চেয়েছিলেন, শুটিং অসম্পূর্ণ রেখেই চলে গেলেন ‘সাহেব’

টলিউডে কাজ না পাওয়ার অভিমান নিয়েই চলে গেলেন তাপস পাল।

TaPas Pal's last film 'Banshi' was under post production
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:February 18, 2020 5:35 pm
  • Updated:February 18, 2020 5:38 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “তোর ছবি দিয়েই বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন করে ফিরতে চাই”, মন্তব্য তাপস পালের। অভিনয়ের প্রতি কতটা অনুরাগ থাকলে একটা মানুষ রুপোলি জগৎ থেকে সরে যাওয়ার দীর্ঘ দিন বাদেও এমন কাতর আরজি জানাতে পারেন! টলিউড থেকে কেন তাঁকে আর কোনও পরিচালক-প্রযোজক ডাকেন না? উঠতি পরিচালক তুহিন সিনহার কাছে আক্ষেপ জানিয়েছিলেন আটের দশকের বাংলা ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সুপারস্টার তাপস পাল।

সেই সৌম্যদর্শন, মুক্তঝরা হাসিতে মুগ্ধ করেছিলেন দর্শককুলকে। হিল্লোল তুলেছিলেন তরুণীদের মনেও। ‘দাদার কীর্তি’ থেকে ‘সাহেব’, ‘বৈদুর্য রহস্য’, ‘গুরুদক্ষিণা’ একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন। কিন্তু সেই অভিনেতাকেই কিনা কালের নিয়মে টলিউড ইন্ডাস্ট্রি বেমালুম ভুলে গেল? একাধিকবার আক্ষেপ জানিয়েছিলেন অভিনেতা। রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন ঠিকই! কিন্তু যে জন্য তাঁর এত পরিচিতি, হাজার হলেও সেই ‘অভিনেতা’ সত্ত্বাকে তো ভোলা সম্ভব নয়! ৩ মাস আগেই এক বাংলা ছবির শুটিং  করেছিলেন তাপস পাল। সিনেমার নাম ‘বাঁশি’। শুটিংয়ের কয়েকটা দৃশ্য অবশ্য বাকি রয়ে গিয়েছে। ডাবিংটা আর করে ওঠা হয়নি শারীরীক অসুস্থতার জন্য। ‘বাঁশি’ দিয়েই আবার বাঙালি দর্শকদের মনে জায়গা করে নিতে মুখিয়ে ছিলেন। কিন্তু সে কাজ আর শেষ করে যেতে পারলেন না।

Advertisement

Advertisement

ছবিতে তাপস পালের চরিত্রের নাম ছিল খগেন দত্ত। বাঁশি ছবিতে তাপস পালের সঙ্গে কাজ করা প্রসঙ্গে স্মৃতিমেদুর পরিচালক তুহিন সিনহা। বললেন, “আমার দুর্ভাগ্য! বাঁশি দিয়ে ওনার সেই ফেরার ইচ্ছে আর পূরণ করা হল না। আরও কাজ করতে চেয়েছিলেন টলিউডে। আক্ষেপ করতেন যে টলিউড কেন আর তাঁকে ডাকে না। কী বিনম্র আচরণ। শুটিংয়ের সময়ে কত কাছ থেকে দেখেছি। শরীরীক অসুস্থতার জন্য মাঝেমধ্যে ভুলে যেতেন। টেকনিশিয়ান-সহকর্মীদের সঙ্গে অমায়িক ব্যবহার করতেন। খেতে ভালবাসতেন। কিন্তু শেষের দিকে কিছু খেতে পারতেন না। ডাল-ভাত, ভাজা, মশলা ছাড়া খাবার খেতেন। লিকার চা খেতেন। বেশ রসিক মানুষ ছিলেন। কাজের ফাঁকে কী আড্ডাই না দিতেন। অভিনয়ের প্রতি তাঁর আনুরাগ্য রীতিমতো দেখে শেখার মতো। কিন্তু একটা সমযের পর ইন্ডাস্ট্রি থেকে ব্রাত্যই রয়ে গিয়েছেন। রাজনীতিক নন, মানুষ আসলে অভিনেতা তাপস পালকেই চেয়েছিলেন।”

[আরও পড়ুন: ‘চলে গেল আমার প্রথম অভিনেতা’, তাপস পালের মৃত্যুতে শোকবিহ্বল মাধুরী দীক্ষিত ]

দীর্ঘ দিন ইন্ডাস্ট্রির বাইরে। শেষ তাঁকে দেখা গিয়েছিল অঙ্কুশ হাজরা এবং নুসরত জাহান অভিনীত ‘খিলাড়ি’ ছবিতে। ২০১৩ সাল। শেষবার অভিনয় করলেন। রাজনীতির ময়দানে অপ্রতিরোধ্য ইনিংস খেললেন ২০১৪ সালেও। দ্বিতীয়বার সাংসদ হলেন চন্দননগর ভূমিপুত্র তাপস পাল। রাজনৈতিক কেরিয়ারের পাশাপাশি তখন সিনেমাও করছেন। কিন্তু বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা রোজভ্যালির সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে সিবিআইয়ের নজরে পড়েন। তারপর থেকেই ইন্ডাস্ট্রি হোক কিংবা রাজনৈতিক ময়দান, একটু একটু করে স্পটলাইট থেকে সরতে থাকেন তাপস পাল। বলা ভাল, পরিস্থিতির চাপে সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সুপারস্টার। কিন্তু পরবর্তীতে ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁকে আর কেউ ডাকলেন না। কেন? এই প্রশ্ন একাধিকবার উঁকি দিয়েছে তাপস পালের মনে। অভিমানও করেছিলেন! শেষ দিকে বড় আক্ষেপ ছিল, কেন টলিউড তাঁকে আর কোনও ছবিতে নেয় না!

[আরও পড়ুন: ‘ও আর কোনওদিন এখানে পা রাখবে না’, ঘরের ছেলে তাপসের মৃত্যুতে বিষাদ চন্দননগরে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ