Advertisement
Advertisement
বনি সেনগুপ্ত

কালিম্পংয়ের কটেজে সে এক রোমহর্ষক অভিজ্ঞতা! ‘ভূতচক্র’-র ফাঁকে গল্প শোনালেন বনি

‘ঘোস্ট হান্টার্স’ থেকে ‘গার্লস নাইট আউট’, সব নিয়েই অকপট অভিনেতা।

Tollywood actor Bonny Sengupta narrates ghost sighting
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:July 8, 2019 9:31 pm
  • Updated:July 8, 2019 9:36 pm

মুক্তি পেল ‘ভূতচক্র প্রাইভেট লিমিটেড’। অভিনয়ের ফাঁকে নিজের ভৌতিক অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন সুখেন দাসের নাতি বনি সেনগুপ্ত। আড্ডায় কোয়েল মুখোপাধ্যায়।

‘ভূতচক্র প্রাইভেট লিমিটেড’ মুক্তি পেল সম্প্রতি। ছবিতে তোমার চরিত্রটা সম্পর্কে কিছু বল।

Advertisement

বনি: আমার চরিত্রের নাম বনি। হ্যাঁ। এই প্রথম আমি আমার নামেই অভিনয় করছি। (হাসি)। তবে বনি সেনগুপ্ত নয়। বনি রায়। ছবিতে দেখানো হয়েছে, আমি খুব ফ্লার্ট করতে ভালবাসি। এমনিতে খুব ভীতু, কিন্তু সেটা বাইরে প্রকাশ করে না। গল্পটা তিন বন্ধুর। আমি ছাড়াও আছে অমিত (সোহম চক্রবর্তী) আর নিমো (গৌরব চক্রবর্তী)। নিমো সবচেয়ে বেশি ভীতু, আমি তার পরেই। এবার ছবিতে এদের তিন জনের হাতে একটা ‘ভূতচক্র’ আসে। সেটা আবার অমিতের ঠাকুরদাদার বাবার বানানো। এবার টিভিতে ওরা বিজ্ঞাপন দেয়। তা দেখে ক্লায়েন্ট ডেকে পাঠায়। একটা বাড়িতে ভূত ধরতে যায় ওরা। সেখানে গিয়ে আসল ভূতেদের কাণ্ডকারখানার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তার পর কী হয়, তা নিয়েই গল্প। আসলে তো এই তিন বন্ধু ঢপবাজ! ওরা এটাও জানে না যে ওই ‘ভূতচক্র’ যন্ত্রটা কীভাবে চালাতে হয়! কিন্তু দাবি করে, ভূত থাকলে, খুঁজে ধরে দেবে। এই ছবিটা হরর আর কমেডির মিশেল। ভয়ও আছে, মজাও আছে।

Advertisement

বনি, এই যে ভূত খোঁজা ব্যাপারটা, এটা বিদেশে খুবই জনপ্রিয়। অনেক শো হয় এই নিয়ে। দেশেও গত কয়েক বছর ধরে এই ধরনের অনুষ্ঠান হচ্ছে। যেমন ধরো, ‘ঘোস্ট হান্টার্স’-ই বা ‘এমটিভি গার্লস নাইট আউট’! জানতে চাইব, তুমি কী এই ধরনের অনুষ্ঠান দেখেছো বা দেখো?

বনি: ‘ঘোস্ট হান্টার্স’ দেখতাম, এমটিভির শোটাও দেখতাম। কিন্তু আমার মনে হয়, ‘গার্লস নাইট আউট’ শো’টা একটু হলেও স্ক্রিপ্টেড ছিল। এএক্সএনেরটা রিয়েলিস্টিক লাগত। দেখো, আমি মনে করি, দু’ধরনের এনার্জিই আছে এই পৃথিবীতে। পজিটিভ এনার্জিও যেমন আছে, নেগেটিভও আছে।

ভূতে বিশ্বাস করো?

বনি: কিছু যে একটা এনার্জি আছে, সেটা বিশ্বাস করি।

ভূতে ভয় পাও?

বনি: ভয় পাই না। কিন্তু যেহেতু আমি নিজে এক্সপিরিয়েন্স করেছি, তাই ভূতে বিশ্বাস করি।

এক্সপিরিয়েন্স করেছো? মানে ভূত দেখেছো?

বনি: হ্যাঁ, একদম।

[ আরও পড়ুন: ‘সাঁঝবাতি’র শুটিং সেট থেকে ভিডিও শেয়ার করলেন দেব খোদ ]

বলছো কী? তা, ভৌতিক অভিজ্ঞতা শেয়ার করা যাবে কিছু?

বনি: ছোটবেলার একটা ঘটনা বলছি। তখন আমার ১২ কি ১৩ বছর বয়স। কালিম্পং বেড়াতে গিয়েছিলাম। পাপার (অনুপ সেনগুপ্ত) একটা ছবিতে শুটিং করতে যাওয়া হয়েছিল। আমাদের থাকার ব্যবস্থা যে কটেজে হয়েছিল, সেটা বাকিগুলোর তুলনায় বেশ অনেকটাই দূরে ছিল। কারণ, সেইসময় বাকি কটেজগুলো সব ভরতি ছিল। তো, কটেজের বারান্দায় আমি একদিন একটা বাচ্চার ছায়ামূর্তি দেখেছিলাম। ভয় পেয়ে পাপা আর মাকে জানিয়েওছিলাম। তবে, আমি একা নয়। ওখানে যাওয়ার পর থেকেই অদ্ভুত সব ঘটনা সকলের সঙ্গে ঘটছিল। পাপা আর মায়ের মধ্যে ঝামেলা হচ্ছিল, দিদার শরীরটাও হঠাৎ করে খারাপ হয়ে গিয়েছিল। মানে, র‌্যান্ডাম সব ভুলভাল ঘটনা ঘটছিল। তার পর আমরা স্টাফকে জিজ্ঞাসা করি। জানতে পারি যে, ওই কটেজ-মালিকের শিশুসন্তানকে একদিন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু ও ওই ঘরেই লকড হয়ে গিয়েছিল। তার পর দমবন্ধ হয়ে মারা যায়। ওর খেলনাগুলো সব ওই ঘরেরই একটা বাক্সে রাখা ছিল। আমি সেখানে গিয়ে ওটা খুলে ফেলি। তার পর থেকেই সব ঘটতে শুরু করে। স্টাফরা বলেছিল, সাধারণত ওই ঘরটা ওরা কাউকে দেয় না। রোজ বিকেলে ওই বাক্সটার উপর ধুপধুনো দেয়, ফুল-মিষ্টি দিয়ে পুজো করে। কিন্তু সব কটেজ ফুল অকুপেন্সি থাকায় আমাদের ওখানে থাকতে দিয়েছিল।

বুঝলাম। তা এই ছবির শুটিং করতে যে টিটাগড় রাজবাড়িতে গিয়েছিলে, সেখানে কোনও অশরীরীর অস্তিত্ব অনুভব করেছিলে?

বনি: না। আসলে ওখানে আমাদের এত বড় ইউনিট গিয়েছিল, যে আমাদের পাগলামি দেখে ভূতেরা থাকলেও হয়তো পালিয়েই গিয়েছিল। (হাসি) আমরা যে রাজবাড়িতে শুটিং করেছি, সেটা জঙ্গলের ভিতরে। এমনিতেই ভৌতিক পরিবেশ। তার মধ্যে আবার রাতে শুটিং হত বেশি। কবরস্থানেও শুটিং করেছি। রাত তিনটে পর্যন্ত। একটা তো গা শিরশিরানি ভাব আসেই। তবে হ্যাঁ, ওই রাজবাড়িটা দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে এখানে তো ডেফিনেটলি ভূত আছেই। তবে খুঁজে দেখার আর ইচ্ছা হয়নি। (হাসি)

‘ভূতচক্র প্রাইভেট লিমিটেড’ ছবিতে তুমি ভূত খুঁজতে বেরোও। বাস্তবে এমন কিছু ঘটলে কাকে সঙ্গী করবে?

বনি: আমি কৌশানিকে (মুখোপাধ্যায়) নিয়ে যাব। ও সাহসী আছে।

আচ্ছা! কৌশানি সাহসী আর তুমি ভীতূ?

বনি: হ্যাঁ। (হাসি) ও এমনিতে ভূতে ভয় পায়। কিন্তু সেটা লুকিয়ে সামনে বেশ সাহস দেখায়। তাই, ওকেই নিয়ে যাব।

বনি, ২০১৪ সালে তোমার কেরিয়ার শুরু। পাঁচ বছর হয়ে গেল। তোমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ কী বলে, কতটা বদলেছো বা আদৌ কি বদলেছো?

বনি: কনফিডেন্স বেড়ে গিয়েছে, এটুকু বলতে পারি। টেকনিক্যালি অনেকটা গ্রো করেছি। তবে অভিনয়ের ব্যাপার তো পরিচালক, দর্শকরা বলবেন!

তোমার তো বাড়িতেই বোদ্ধারা রয়েছেন। বাবা পরিচালক অনুপ সেনগুপ্ত, মা অভিনেত্রী পিয়া। তা, ওদের চোখে তোমার সেরা অভিনয় কোন ছবিতে?

বনি: ‘পারবো না আমি ছাড়তে তোকে।’ ছবিটা ওদের খুব পছন্দ। আমারও। দ্বিতীয় হবে এই ‘ভূতচক্র প্রাইভেট লিমিটেড’ ছবিটা।

কৌশানি কী ছবিটা দেখেছে? ও কী বলছে?

বনি: ও দেখে ফেলেছে এরই মধ্যে। (হাসি) ও খুব মজা পেয়েছে। আমাদের দু’জনের একটা কমন ব্যাপার হল, আমরা একসঙ্গে প্রচুর ছবি দেখি। ‘স্ত্রী’ দেখে খুব ভাল লেগেছিল। হরর কমেডির ছবি। এই ছবিটা দেখেও কৌশানির ভাল লেগেছে। ও বলল, এই রকম বাংলা ছবি ও আগে দেখেনি। দর্শকদেরও বলব, ছবিটা হলে এসে দেখুন। 

[ আরও পড়ুন: নয়া ছবির পোস্টারে ‘রনংদেহি’ কঙ্গনা, দেখুন তাঁর ঝলক ]

এর পর কী কী ছবি আসছে?

বনি: ‘জানবাজ’ আসছে। ২৬ জুলাই মুক্তি। আরও একটা ছবি মুক্তি পাবে সেপ্টেম্বরে, নাম ঠিক হয়নি। এছাড়াও আছে সুজিত মণ্ডল আর পরিচালক রাজীবের ছবি।

তার মানে তো এখন খুব ব্যস্ত। তাহলে কৌশানির সঙ্গে বিয়েটা এ বছর হচ্ছে না, তাই তো? সময় বের করবে কোথা থেকে?

বনি: (জোরে হাসি) না, না, না। আরে আমি এখন ২৮! তিরিশের আগে বিয়ে করব না।

শেষ প্রশ্ন। বনি তুমি, সুখেন দাসের নাতি। পিয়া এবং অনুপ সেনগুপ্তর ছেলে। এই পরিচয় তোমার কাছে আশীর্বাদ না অতিরিক্ত চাপের কারণ?

বনি: দু’টোই। যেহেতু দাদুর নামের সঙ্গে আমার নাম জড়িত, কাজেই একটা বার্ডেন তো আছেই। প্রথম বার কাজ করতে গিয়েই সেটা বুঝেছি। কিন্তু সুবিধাও রয়েছে। যেমন বাবা-মা-দাদুর সূত্রে চেনাশোনাটা সহজ হয়ে যায়। যদিও সেই সূত্রে কাজ পাই না আমি। সেটা আমায় অডিশন দিয়েই পেতে হয়। নিজের যোগ্যতাতেই কাজ পেতে হয়। আর চার বছর অপেক্ষা করে আমি কাজ পেয়েছি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ