সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাগরিকপঞ্জি আর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে অনেকদিন ধরেই সরব দেশের বুদ্ধিজীবী মহল। দিন কয়েক আগেই বিশিষ্টজনদের ‘কাগজ দেখাব না’ ভিডিওয় প্রত্যেকের গলায় শোনা গিয়েছিল এক কথা, এক সুর- ‘কাগজ আমরা দেখাব না’। স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী, রূপম ইসলাম, নন্দনা সেন, তিলোত্তমা সোম, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়, কঙ্কনা সেনশর্মার মতো অনেকেই কণ্ঠ চড়িয়েছিলেন CAA’র বিরুদ্ধে। সেই সূত্র ধরেই বুধবার বঙ্গ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ রাজ্যের বিদ্বজ্জনদের ঠুকেছেন। বললেন, “বিশিষ্টরা নির্বোধ, নেমকহারাম”। দিলীপের এমন বেফাঁস মন্তব্যের পরই তাঁকে পালটা দিলেন প্রবীণ অভিনেতা ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়।
“কোনও রাজনৈতিক দলের বিশিষ্ট পদে আসীন থেকে কেউ কীভাবে এরকম কদর্য মন্তব্য করতে পারেন?” প্রশ্ন তুলেছেন ধৃতিমান। অভিনেতার কথায়, “ভাষা নির্বাচনের ক্ষেত্রে আরও সংযত হওয়া উচিত ছিল। শালীনতা বজায় রাখাও উচিত ছিল।” দিন দুয়েক আগেই CAA, NRC বিরোধীদের গুলি করে মারার মন্তব্যের পর ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছেন রাজ্যের বিজেপি সভাপতি দিলীপ। এমনকী, তাঁর দলের দলের সদস্যদের একাংশও ক্ষুব্ধ হয়েছেন সেই মন্তব্যে। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনেই ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায় পালটা দিলেন দিলীপকে। বললেন, “উনি ক্ষমতায় এলে গুলি করবেন বলেছিলেন। ভাগ্যিস, আমাদের হাতে এখনও আরও কিছু সময় রয়েছে।” এরপরও খানিক ব্যাঙ্গাত্মকভাবেই ধৃতিমান আরও বলেন, “উনি তো রাজনৈতিক দলের একটা বড় পদে আসীন, কাজেই আমাদের মতো ছোটখাট ব্যক্তিদের নিয়ে না ভাবলেও চলবে ওঁর!”
[আরও পড়ুন: ‘বুদ্ধিজীবীরা নেমকহারাম, ননসেন্স’, বিদ্বজ্জনদের বেনজির আক্রমণ দিলীপ ঘোষের]
বুধবার কলকাতার বিজেপি দপ্তরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, “যেসব বুদ্ধিজীবীরা পরজীবীর মতো অন্যের ঘাড়ে বসে খাচ্ছেন, তারা কী বললেন না বললেন, তাতে দিলীপ ঘোষের কিচ্ছু যায় আসে না! যারা আমার বিরোধীতা করেছেন, তাঁরা আগে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখুন। ওদেরকে জিজ্ঞেস করতে চাই, যে আপনারা যখন এয়ারপোর্টে ঢুকবেন পরিচয়পত্র ছাড়া আপনাদের ঢুকতে দেবে তো? এই ননসেন্সরা জানেই যে রেশনের দোকান থেকে ট্রেন-বিমান সবজায়গায় বিনা পরিচয়পত্র ছাড়া নামিয়ে দেবে আপনাদের। সিনেমার টিকিট না কেটে কি পিছনের দরজা দিয়ে ঢোকেন? লোককে বোকা বানানো হচ্ছে যে কাগজ নেই! নেমকহারাম এঁরা। হ্যাঁ, কাগজ তো অনেকেরই নেই, তা আমরা জানি। এদের ডায়লগবাজি মানুষদের বিভ্রান্ত করে।”
[আরও পড়ুন: বছর কয়েক পর ফের বাংলা ছবিতে বিদ্যা বালান! জেনে নিন বিস্তারিত]
এদিন স্বস্তিকার নামোল্লেখ না করেই তোপ দাগেন দিলীপ, “যাঁরা CAA বিরোধী প্রচার করছেন, ওই ভিডিওতে এমন ব্যক্তিও রয়েছেন যিনি বিদেশে গিয়ে সোনার জিনিস চুরি করে দেশের মান-সম্মান ডুবিয়েছেন। বিদেশে আমাদের নাক-কান কাটিয়ে এসেছেন।” রাজ্য বিজেপি সভাপতির সুর টেনেই অভিনেত্রী তথা বিজেপির নতুন সদস্য কাঞ্চনা মৈত্র বলেন, “CAA, NRC নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের উর্দ্ধে গিয়ে দেশের কথা ভাবুন।”