সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বাংলা থেকে সুদূর পশ্চিমের দেশ৷ জার্মানির মাটিতে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ মঞ্চস্থ করবেন পুরুলিয়ার ছৌ শিল্পীরা৷ সেদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কার্লসরুহে সামার ডে ফেস্টিভ্যালে যোগ দিতে পুরুলিয়া থেকে ইতিমধ্যেই রওনা হয়েছেন পাঁচ শিল্পী।
[আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় ফের ট্রোলড ডিজাইনার সব্যসাচী, কেন জানেন?]
পাঁচ ছৌ শিল্পী ছাড়াও বাংলার তিন হস্তশিল্পীও জার্মানির ওই উৎসবে যোগ দেবেন৷ ছৌ শিল্পকলার সঙ্গে মাদুর, পটচিত্র, কাঁথা স্টিচের নানা কাজ ওই উৎসবে তুলে ধরবেন। পুরুলিয়ার ছৌ শিল্পীরা সোমবার সন্ধ্যায় পুরুলিয়া থেকে রওনা হন৷ তাঁরা কলকাতা থেকে আকাশপথে জার্মানি যাবেন বুধবার রাতে। জার্মানির কার্লসরুহেতে আগামী ১৩ এবং ১৪ জুলাই সামার ডে ফেস্টিভ্যাল। পুরুলিয়ার ছৌ শিল্পীরা দু’দিনই তাদের দুটি ছৌ পালা ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ ও ‘বালি বধ’ তুলে ধরবেন।
বলরামপুরের মালডির মিতালি ছৌ দল ও পাঁড়দ্দা বীরেন কালিন্দী ছৌ নৃত্য পার্টি – মূলত এই দুটি দলই জার্মানিতে নিজেদের পারফরম্যান্স তুলে ধরবেন৷ এই দুটি দলের পরিচালনায় যিনি রয়েছেন, তাঁর নাম জগন্নাথ কালিন্দী। তিনি বলেন, ‘আমি এর আগে ছৌ নাচতে আটবার বিদেশ গিয়েছি। আশা করছি, সমগ্র ছৌ দলকে নিয়ে সেরাটাই তুলে ধরতে পারব।’ দলের বাকি সদস্যরা পশুপতি মাহাতো, অনিল মাহাতো, বলরাম কালিন্দী, বিজয়কিশোর মাহালি। তাঁদের বাড়ি বলরামপুরের পাঁড়দ্দা ও মালডিতে। পশ্চিম মেদিনীপুরের মাদুরশিল্পী মিঠুরানি জানা, পটচিত্রে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার হাজেরা চিত্রকর ও কাঁথা স্টিচে বীরভূমের নানুরের আফরোজা খাতুন – এই তিন হস্তশিল্পীও নিজেদের হাতের কাজ তুলে ধরতে যাচ্ছেন জার্মানিতে৷
[আরও পড়ুন: ভারত সত্যিই খুব বড় ধরনের একটা বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে: অঞ্জন দত্ত]
অতীতে ছৌ–র আঁতুড়ঘরে তাঁদের সেভাবে কদর না থাকলেও, এখন অবশ্য সেই করুণ চিত্র পালটেছে৷ রাজ্য সরকারের লোকপ্রসার প্রকল্পের হাত ধরে ছৌ শিল্পীদের সুদিন ফিরেছে৷ শুধু বিদেশ বা রাজ্যের বাইরে নয়, পুরুলিয়াতেও তাঁরা বহু অনুষ্ঠান করার সুযোগ পাচ্ছেন।সরকারি ভাতা মিলছে। ফলে দৈনন্দিন সংসার চালানোর চিন্তা আর নেই৷ তাই আবার নতু্ন করে বর্তমান প্রজন্মও ঝুঁকছে ছৌ–র দিকে৷