Advertisement
Advertisement
Purulia

বীররসের ছৌ হারাচ্ছে সাবেকিয়ানা, অতীতের গরিমা ফেরাতে বিশেষ কর্মশালা পুরুলিয়ায়

লোকশিল্পের পুনরুজ্জীবনে উদ্যোগী এই সংগঠন।

Workshop organised to protect tradition in Chhow dance in Purulia | Sangbad Pratidin

ছবি: সুনীতা সিং।

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:August 28, 2023 5:00 pm
  • Updated:August 28, 2023 6:18 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: আঁতুড়ঘর থেকে বিদেশ পাড়ি দিয়েছে আগেই। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুরুলিয়ার (Purulia) বীররসের ছৌ নৃত্যে বাইরের নানা প্রভাব আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে এই প্রাচীন লোকশিল্পের সাবেকিয়ানা। হারিয়ে যাচ্ছে এই শিল্পকলার অতীতের মাধুর্য। তাই আদি ধারাকে ধরে রাখতেই পুরুলিয়ার মানভূম কালচারাল আকাদেমির উদ্যোগে ও পুরুলিয়া জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় দু’দিন ধরে ‘ছৌ লোক আঙ্গিকের কর্মশালা’ হয়ে গেল গত সপ্তাহান্তে। শহর পুরুলিয়ার রবীন্দ্র ভবনে এই কর্মশালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো। কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা বিভাগের রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো, প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি, মানভূম কালচারাল আকাদেমির সভাপতি হংসেশ্বর মাহাতো, কুড়মি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সুনীল মাহাতো, লোকসংস্কৃতি গবেষক সুভাষ রায় প্রমুখ।

ছবি: সুনীতা সিং।

জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের আধিকারিক সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী বলেন, “ছৌ নাচ যাতে অতীতের গরিমাকে ধরে রাখতে পারে। আগের মাধুর্যকে ধরে রেখেই যাতে এর ব্যাপ্তি আরও ঘটে সেই কারণেই আমাদের এই কর্মশালা। ” সমগ্র জেলা জুড়ে বাছাই করে শিল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকা ২৫০ জনকে নিয়ে এই কর্মশালা হয়। এদিনের কর্মশালায় প্রয়াত আট কিংবদন্তি ছৌ-শিল্পকে (Chhow Dance) শ্রদ্ধা জানানো হয় আয়োজকদের তরফে। সেই সঙ্গে সংগীত নাটক আকাদেমির তরফে সদ্য রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত ভুবন কুমারকে কর্মশালার মঞ্চ থেকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ছাত্র সংসদ নির্বাচন কবে? টিএমসিপি-র সভা থেকে ইঙ্গিত দিলেন তৃণমূল নেত্রী]

এই কর্মশালায় (Workshop) যে শুধু শিল্পীরাই অংশ নিলেন, তা নন। ছৌ নাচের দলের ম্যানেজারদেরকেও এই কর্মশালায় আহ্বান করা হয়। উদ্দেশ্য একটাই, অতীতের ধারাকে সম্পূর্ণভাবে ধরে রাখা। রাজ্যের লোকপ্রসার প্রকল্পের মধ্য দিয়ে অন্যান্য লোক শিল্পের সঙ্গে ছৌ নাচের যে পুনরুজ্জীবন ঘটেছে কর্মশালায় অংশ নেওয়া ম্যানেজার, শিল্পী-সহ অতিথিরাও তা আরও একবার স্বীকার করেন। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই রাজ্যের সুবিধা পেয়ে এই আঙ্গিক-সহ অন্যান্য লোকশিল্পীরা রাজ্য সরকার বিরোধী প্রচার করছে বলে রবীন্দ্র ভবনের ওই মঞ্চ থেকেই সরাসরি অভিযোগ করেন পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি। তাঁর কথায়, “আজ রাজ্য সরকারের জন্যই ছৌ-সহ নানান লোকশিল্পের পুনরুজ্জীবন ঘটেছে। রাজ্যের সুবিধা নিয়ে আমি সরকার বিরোধী প্রচার করব, এটা মেনে নেওয়া যায় না।” শিল্পীদের প্রতি তাঁর আহ্বান, “আপনারাও তো শিল্পী মানুষ। নিজের উপলব্ধি দিয়ে বোঝার চেষ্টা করুন। লোকশিল্পের পুনরুজ্জীবনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য সরকারের ভূমিকা কতখানি।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: কর্তব্যে ‘গাফিলতি’, বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে সাসপেন্ড দত্তপুকুরের IC ও নীলগঞ্জ ফাঁড়ির OC]

এদিনের কর্মশালায় ছৌ নৃত্যের নামকরণ, প্রকারভেদ ও তার বিস্তার নিয়ে বক্তব্য রাখেন মানভূম কালচারাল আকাদেমির হংসেশ্বর মাহাতো। এছাড়া পুরুলিয়ার ছৌ-এর উৎস সন্ধানে অজিত মিত্র, বিবর্তনের ধারায় ছৌ মলয় চৌধুরী, ছৌ নাচের পৌরাণিক ও লৌকিক প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন লোকসংস্কৃতি গবেষক সুভাষ রায়। রবিবার বিবর্তনের ধারায় ছৌ মুখোশ, ছৌ নাচে লোকবাদ্য ও পোষাকের ব্যবহার ও বিবর্তন, ছৌ নাচে ঝুমুরের (Jhumur) প্রয়োগ ও বিবর্তন সেই সঙ্গে পুরুলিয়ার মহিলা ছৌ দল ও শিল্পী সম্প্রদায় এই বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়েছে। কর্মশালাতে একাধিক ছৌ নাচের অনুষ্ঠানও হয়। প্রয়াত যে ৮ শিল্পীকে এদিন শ্রদ্ধা জানানো হয় তাঁরা হলেন, মধু রায়, রাসু হাঁড়ি, রামনাথ কুমার, সূর্যকান্ত সহিস, পদ্মশ্রী গম্ভীর সিং মুড়া, প্রভুদাস কুমার, ধনঞ্জয়(ধুন্ধা মাহাতো), পদ্মশ্রী নেপাল মাহাতো।

ছবি: সুনীতা সিং।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ