Advertisement
Advertisement

Breaking News

Sannyasi Deshonayok Review

‘গুমনামি বাবা’র চরিত্রে নজর কাড়লেন ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়, কেমন হল ‘সন্ন্যাসী দেশনায়ক’? পড়ুন রিভিউ

নেতাজি সতীর্থ মেহের আলির ভূমিকায় নজর কেড়েছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়।

Film Review of Sannyasi Deshonayok | Sangbad Pratidin
Published by: Akash Misra
  • Posted:October 26, 2022 7:04 pm
  • Updated:October 26, 2022 7:06 pm

নির্মল ধর: নেতাজির মৃত্যুরহস্য নিয়ে এখনও কোনও নিশ্চিত সমাধানে পৌঁছনো গেল না। তার পেছনে কেন্দ্রীয় সরকারের দীর্ঘ্য টালবাহানা, ফরেনসিক রিপোর্ট নিয়ে লুকোছাপা, স্বয়ং পণ্ডিত নেহরুর সত্য প্রকাশে একধরনের ইচ্ছাকৃত অনীহা বহু বছর ধরে কাজ করেই চলেছে। আটের দশকে উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় গুমনামি বাবা নামে যে সন্ন্যাসীর দেখা পেয়েছিলেন তাঁরা অনেকেই বলেছেন ওই সন্ন্যাসীই আসলে নেতাজি। এইতো ক’দিন আগেই খবরে এসেছিল বিখ্যাত হাতের লেখা বিশেষজ্ঞ কার্ট গারেট আবারও জানিয়েছেন গুমনামি বাবা এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্রের হাতের লেখা একইরকম। তাঁকে না জানিয়েই ১৯৬২ সালে গুমনামি বাবার লেখা একটি চিঠি ও ১৯৩৪ সালে লেখা নেতাজির একটি চিঠি পাঠিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয় দুটি চিঠির লেখক কি একজন? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন “হ্যাঁ”! আগেও এই একই বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সমাধানে আসা যায়নি। ১৯৮৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর গুমনমি বাবার মৃত্যু ঘটে ফাইজাবাদের রাম ভবনে। কিন্তু খবরটি জানা যায় বেশ কিছুদিন পর। তাঁর মৃতদেহ কেউ দেখেননি, শ্মশানঘাটে রেজিষ্টারেও কোনও নাম লেখা নেই। অথচ গুমনামি বাবার দাঁতের ডি এন এ পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে নেতাজির ডি এন এ একই। কিন্তু উত্তর প্রদেশের সরকার নিয়োজিত বিষ্ণু সহায় কমিশনের রিপোর্ট স্পষ্ট করে জানিয়েছে গুমনামি বাবা নেতাজির শিষ্য ছিলেন, নেতাজি নয়। কিন্তু নেতাজিকে যাঁরা চিনতেন, জানতেন – তাঁদের অনেকেই, বিশেষ করে লীলা রায়,একাধিক সরকারি অফিসার দেখা করে কথা বলেছেন গুমনামি বাবার সঙ্গে এবং তাঁরাও নিশ্চিত বাবাই আসলে নেতাজি। কিন্তু খোদ বাবা নিজেকে বলতেন “মহাকাল”। বিপ্লবী দেশনায়ক থেকে তাঁর এই আধ্যাত্মিক চেতনায় পরিবর্তন কেন এবং কীভাবে এসেছিল সেই পর্বটি অজানাই থেকে গিয়েছে এখনও পর্যন্ত!

[আরও পড়ুন: ‘বল্লভপুরের রূপকথা’র রিভিউ: মজাদার উপস্থাপনায় বাজিমাত পরিচালক অনির্বাণের]

পরিচালক অম্লান কুসুম ঘোষ গুমনামি বাবার জীবন রহস্য নিয়ে তৈরি করেছেন নতুন ছবি “সন্ন্যাসী দেশনায়ক” (Sannyasi Deshonayok )। খানিকটা তথ্য চিত্রের কাঠামোয় বানানো হয়েছে ছবিটি। তবে কেন্দ্র বিন্দু কিন্তু গুমনামি বাবা এবং নেতাজিই। একদল ফিল্মের ছাত্র তাঁদের মাস্টার মশাইয়ের অকস্মাৎ মৃত্যুর খবর পেয়ে উত্তর প্রদেশ যায় তাঁর খোঁজ করতে। ওই মাষ্টারমশাইও গিয়েছিলেন গুমনামি রহস্য উদঘাটন করতে। প্রায় করে ফেলেছিলেন আরকি! ঠিক তখনই তিনি খুন হয়ে যান। কেন খুন হলেন, কারা করলো সেটাও কিন্তু রহস্য রয়ে গিয়েছে ছবিতে। যেমন অম্লানের চিত্রনাট্য বেশ স্পষ্ট করেই গুমনামি বাবাকে নেতাজি প্রতিপন্ন করতে চেয়েও শেষ পর্যন্ত এক জটিল ধাঁধাঁয় আটকে পড়েছে। অবশ্য সেজন্য দায়ী আমাদের দেশের কিছু রাজনৈতিক দল ও নেতার ব্যক্তিগত স্বার্থ, সেটাও স্পষ্ট করেই দিয়েছেন তিনি। ছবিটির নির্মাণে তাঁর আন্তরিকতায় কোনও ফাঁক নেই, ফাঁকিও নেই। তিনি প্রকাশিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই বানিয়েছেন ছবিটি। রহস্য যা রয়েছে এখনও, তা রয়েছে সংসদের গোপন অপ্রকাশিত তথ্যে। কিন্তু সেখানে হাত দেবার জো নেই যে!

Advertisement

Advertisement

সুন্দর ভাবে সাজানো হলেও, ছাত্রদলের পিকনিক করার মেজাজে ঘোরাফেরা বা আড্ডা দেওয়ার ব্যাপারটা ভাল লাগেনি। যেখানে পরিচালক গুমনামি বাবা এবং নেতাজির কথা বলেছেন, সেখানে যথেষ্ট আন্তরিক। ছবির ফটোগ্রাফি, আবহ সঙ্গীত পরিবেশ মাফিক। সব চাইতে ভাল লেগেছে ‘গুমনামি বাবা’র চরিত্রে ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংবেদনশীল অভিনয়। তিনি খুব নিচু লয়ে রেখেছেন তাঁর উচ্চারণ, স্বরে ফুটেছে আধ্যাত্মিক গাম্ভীর্য, ব্যক্তিত্ব। তবে অবাক করে দিয়েছেন নেতাজি সতীর্থ মেহের আলির ভূমিকায় শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। প্রায় সমান্তরাল চরিত্র পেয়ে ভিক্টর এর পাশে দাঁড়িয়ে শাশ্বত খুবই জীবন্ত। ছোট্ট চরিত্র লীলা রায়ের ভূমিকায় লকেট চট্টোপাধ্যায়ও নজর কেড়েছেন।

ছবিটি দেখতে বসে তথ্যের ভান্ডার নিয়ে বিশেষ বিব্রত হতে হয়, যখন দর্শক বুঝতে পারেন – হাতের নাগালে সব প্রমাণ এসেও কেন যে সত্যিটা প্রকাশ করা হল না সেটা ভেবে। এর পেছনে শুধুই কি রাজনীতি? নাকি কারও বা কোনও গোষ্ঠীর কিছু স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে। সেই রহস্যের সমাধান কী আদৌ হবে কোনও দিন? দর্শকের কাছে ছবিটি এই প্রশ্নটি রেখে যায়।

[আরও পড়ুন: জমল না পায়েল-ইশার সমকামী সম্পর্কের রসায়ন, পড়ুন ‘হ্যালো রিমেম্বার মি’ সিরিজের রিভিউ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ