৫ চৈত্র  ১৪২৯  সোমবার ২০ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

Jhund Review: শুধু লড়াইয়ের কাহিনি নয়, বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে তৈরি অমিতাভ বচ্চনের ‘ঝুণ্ড’ কেমন হল?

Published by: Suparna Majumder |    Posted: March 4, 2022 8:41 pm|    Updated: March 4, 2022 8:41 pm

Here is the Review of Amitabh Bachchan starrer film Jhund | Sangbad Pratidin

নির্মল ধর: মারাঠি পরিচালক নাগরাজ মঞ্জুলে (Nagraj Manjule) প্রথম থেকেই সামাজিক বিষয় নিয়ে ছবি করেন। তাঁর আগের কয়েকটি ছবি ‘ফান্দ্রি’ এবং ‘সাইরাত’ জাতীয় পুরস্কার জিতেছিল। তাঁরই চিত্রনাট্যে তৈরি হয়েছিল হিন্দি ছবি ‘হাইওয়ে’। এবার তিনি নিজে হিন্দি ছবি পরিচালনা করলেন। ‘ঝুণ্ড’-এর (Jhund Film) কাহিনিটি বাস্তব। সত্যি ঘটনা অবলম্বনে তৈরি।

Amitabh with Vijay Barse

নাগপুর শহরের বিজয় ভারসে নামে একজন সমাজকর্মী বস্তি এলাকার দুস্থ, বিপথে যাওয়া কিশোর ও তরুণদের উন্নতির জন্য কাজ করে গিয়েছেন। বেপথু কিশোর-তরুণদের ফুটবলের নেশা ধরিয়ে দিয়েছিলেন। তৈরি হয়েছিল স্লাম সকার নামের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। বিজয় নিজে ছিলেন তার প্রধান। তাঁরই নেতৃত্বে নাগপুরের একাধিক বস্তি এলাকায় গড়ে উঠেছিল ফুটবল ক্লাব। এমনকী, একটা সময় তিনি বস্তির ছেলেদের নিয়ে তৈরি ফুটবল দল নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় গিয়েছিলেন জর্জিয়ায়। ছবির কাহিনি বলতে এটুকুই।

Amitabh in Jhund

কিন্তু নাগরাজ মঞ্জুলে চিত্রনাট্যের মধ্যে অত্যন্ত সুন্দরভাবে বুনে দিয়েছেন নাগপুর রেল ইয়ার্ড সংলগ্ন বস্তির জীবন। তাঁদের দারিদ্র, তাঁদের লড়াই, তাঁদের বিপথে যাওয়ার কারণগুলোও বিশ্লেষণ করেছেন। সেখান থেকেই তিনি তুলে এনেছেন ছবির অধিকাংশ শিল্পীদের। অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan) অভিনয় করেছেন বিজয় বোরাডের ভূমিকায়। পেশায় তিনি অধ্যাপক। কিন্তু অধ্যাপনা থেকে অবসর নেওয়ার পর তাঁর জীবনের অনেকটা অংশই কাটে এই সব প্রান্তিক ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মানসিক ও সামাজিক উন্নয়নের কাজে। তিনি বার বার বাধা পেয়েছেন সমাজের উচ্চশ্রেণির কাছ। প্রশাসনের আধিকারিক এবং রাজনীতিকরাও তাঁকে ছেড়ে কথা বলেননি। কিন্তু বিজয় নিজের লক্ষ্যে স্থির। শেষপর্যন্ত নিজের সমস্ত সম্পত্তি বন্ধক দিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দলকে নিয়ে যাওয়ার আর্থিক ব্যবস্থাও তিনি করেন।

Jhund 1

[আরও পড়ুন: ‘পোষ্যকে ফেলে আসবে না, তারাও পরিবারের সদস্য, শেখাচ্ছে ইউক্রেন’, মন্তব্য স্বস্তিকার]

বিজয়ের এই লড়াইয়ের পাশাপাশি পরিচালক রেখে দিয়েছেন অঙ্কুশ বা ডন নামের এক তরুণকে। তাকেই বলা যেতে পারে, এই চিত্রনাট্যের প্রতিনায়ক। বস্তির আস্তাকুঁড়ে থেকে চুরি, বাটপাড়ি, খুন, নেশায় জড়িয়ে থাকা অঙ্কুশ যেভাবে ধীরে ধীরে সমাজের মূল স্রোতে ফেরে, সেটাই চিত্রনাট্যে একটু বেশি জায়গা নিয়েছে। এমনকী, কলেজের এক তরুণী খেলোয়াড়ের (রিঙ্কু রাজগুরু) সঙ্গে অঙ্কুশের একটু নরম রোম্যান্টিক আবহ তৈরি করেছেন।

Jhund film

তবে এ ছবিতে দেখার মতো জায়গাটি হল, সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চনের পাশে দাঁড়িয়ে আকাশ, প্রশান্ত এবং রিঙ্কু রাজগুরু-সহ প্রায় একডজন তরুণ অভিনেতা-অভিনেত্রীদের প্রাণবন্ত অভিনয়। মাঝখানে একটি জায়গায় নাগরাজ এই ছেলেমেয়েগুলির ব্যক্তিগত জীবনের কাহিনিও তথ্যচিত্রের মতো করে শুনিয়ে দিয়েছেন। যেখানে দেখানো হয়েছে একজন ব্যাঞ্জো বাদকের ট্র্যাজিক মৃত্যু।

তবে এই ছবিরও বেশ কিছু ব্যবসায়িক গুণ বা দোষ রয়েছে। ছবির ক্যামেরার কাজ, সংগীতের ব্যবহার এবং গানগুলির দৃশ্যায়ন সবই ব্যবসায়িক ঢংয়ে। অজয়-অতুলের লেখা গান বস্তিবাসীর জীবনকেই তুলে আনে। গত কয়েক বছর ধরে অমিতাভ বচ্চন বলিউডি কমার্শিয়াল সিনেমার চৌহদ্দি থেকে বেরিয়ে ‘গুলাবো সিতাবো’, ‘চেহরে’র মতো ছবি করছেন। এই ‘ঝুন্ড’ ছবিটিও সেই ধারার।

Jhund

ছবির শেষপর্বে অঙ্কুশের পাসপোর্ট পাওয়া নিয়ে পুলিশি বাধা এলে আদালতে দাঁড়িয়ে বিজয় বিচারকের সামনে যে বক্তব্য রাখেন, সেখানে সত্যি কথা বলতে অনেকগুলো সামাজিক সত্য উচ্চারিত হয়ে যায়। বিশেষ করে, শহরের প্রান্তিক মানুষরা কীভাবে তাঁদের জীবনকে শুধু বাঁচিয়ে রাখার জন্য আজীবন লড়াই করে চলে, তার হয়েই সওয়াল করেছেন তিনি। বলতে চেয়েছেন, বাঁচার জন্য এই মানুষগুলোর লড়াইকে আমরা অস্বীকার করতে পারি না। আমরাই দেওয়াল তুলি বস্তি আর প্রাসাদ, শিক্ষা আর অশিক্ষার মাঝে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এঁদের ব্রাত্য করে রাখি। একটু রাজনৈতিক বক্তৃতার মতো লাগলেও কথাগুলি অকাট্য সত্য। তাই নাগরাজের এই ছবি শুধু বিজয়ের লড়াইয়ের কাহিনি নয়, বস্তির উন্নয়নের কার্যক্রমও নয়। এটি একটি সামাজিক দায়।

 

  • ছবি – ঝুণ্ড
  • অভিনয়ে – অমিতাভ বচ্চন, আকাশ তোসর, রিঙ্কু রাজগুরু, কিশোর কদম
  • পরিচালনা – নাগরাজ মঞ্জুলে

[আরও পড়ুন: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত শেন ওয়ার্ন]

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে