Advertisement
Advertisement
Kho Gaye Hum Kahan Movie Review

সোশাল মিডিয়ার ফাঁদ পাতা ভুবনে! ‘খো গয়ে হাম কাঁহা’ তুলে ধরে নেট প্রজন্মের ‘ভালো-মন্দের’ গল্প

নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে এই ছবি।

Kho Gaye Hum Kahan Movie Review: Ananya Panday, Siddhant Chaturvedi, Adarsh Gourav’s film is a reality check
Published by: Akash Misra
  • Posted:December 27, 2023 4:47 pm
  • Updated:December 28, 2023 11:09 am

আকাশ মিশ্র:  লাইক, লাভ, হেট কিংবা হাসি! ছবি দিলেই বার বার রিফ্রেশ। ডিপিতে কে লাইক দিল, কে দিল লাভ। কেই বা রেগে আগুন। ছবি আপলোড করে অধীর অপেক্ষা, প্রিয়জন কি ছবিটা দেখেছে? কমেন্ট বক্সে কটা মেসেজ। ভালো লাগলে স্টেটাস আপডেট। খারাপ লাগলেও তাই। ভালোবাসা, ঘৃণার দাম এখন মাত্র একটা ক্লিক। ট্রোলিংয়ের বন্যায় ব্যক্তি ইমেজ ছারখার। কিংবা মিউচুয়াল ফ্রেন্ড দেখে বন্ধু নির্বাচন। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম, প্রেম থেকে বিয়ে কিংবা বিচ্ছেদ। সোশাল মিডিয়ায় আমরা সবাই। সম্প্রতি এক সমীক্ষা জানিয়েছে, আমরা নাকি দিনের ১৮ ঘণ্টাই কাটাই সোশাল মিডিয়ায়! তাও অজান্তে। শুধুই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের পেজের ওঠানামায়। এ এক অদ্ভুত নেশা! পরিচালক অর্জুন ভারিন সিং ঠিক এই বিষয়কেই সঙ্গী করেই গল্প ফাঁদলেন তিন বন্ধুর। ইমাদ (সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী), আহানা (অনন্যা পাণ্ডে) এবং নীলের (আদর্শ গৌরব)। এই তিনজনের আলাদা আলাদা সমস্যা, আলাদা আলাদা কনফিউশন। কিন্তু কোথাও বুঝি আমার-আপনার ভিতরে বাস করছে এই তিনজনই। এই তিনজনই যেন সোশাল মিডিয়ায় আমার-আপনার চরিত্রে অভিনয় করছে।

হ্যাঁ, পরিচালক অর্জুন, বিশেষ করে চিত্রনাট্যকার জোয়া আখতার ও রিমা কাগতি ঠিক এইভাবেই গল্প বুনেছেন। যেখানে ইমাদ,আহানা ও নীল- সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইয়ং জেনকেই প্রতিনিধিত্ব করে। ইমাদ, আহানা ও নীল। তিন স্কুলবন্ধু। এদের জীবনের প্রতিটা সুতো একে অপরের সঙ্গে বাঁধা। তিনজনই সংশয়ে আচ্ছন্ন। তিনজনেই আটকে রয়েছেন সোশাল মিডিয়ার দুনিয়াতে। যে দুনিয়ায় ব্যক্তি শুধুই খুশির ঝলকে আটকে। বাস্তব থেকে শত হস্ত দূরে। একে অপরকে শুধুই দেখা যাওয়া। অমুক মাঝে মধ্যেই উড়ে যাচ্ছেন বিদেশে! আর আপনার দৌড় বড়জোর দিঘা কিংবা মন্দারমণি। অমুকে পরছে লুই ভিতোঁ। আর আপনার পোশাকে গড়িয়াহাটের ছাপ। সোশাল মিডিয়ার সূত্র ধরে অনায়াসে আপনি ঢুকে যাচ্ছেন অন্যের রঙিন জীবনে। পাওয়া-না পাওয়ার খেলায়। এ যেন নিজেই এক হতাশার অ্যাপ ডাউনলোড করা। পিছিয়ে যাওয়া মানসিকতা অজান্তেই উর্বর হচ্ছে। ফলাফল, এক আজব ইঁদুর দৌড়। ছোট ডানা নিয়েই অ্যান্টার্কটিকায় পাড়ি দেওয়ার দিবাস্বপ্নতে ভেসে যাওয়া। পরিচালক অর্জুন, তিন বন্ধুর পেশাগত, ব্যক্তিগত সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে উপরের সব কটি উপাদানকেই সুচারুভাবে সাজালেন। আর ‘চোখে আঙুল দাদা’র মতো টেনে নিয়ে আসলেন কল্কি কোয়েচলিনকে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কাকভোরে বাদশা-বন্দনা, ‘ডাঙ্কি’র শোয়ে হলে পুড়ল দেদার আতসবাজি, ‘লুট পুট গয়া’ শাহরুখ ভক্তরা]

এই ছবির সবচেয়ে বড় প্রাণশক্তি এর চিত্রনাট্য। জোয়া ও রিমার পটু হাতে চিত্রনাট্যে কোনও ফাঁক নেই। এই ছবির সাবপ্লটে আসক্তি এবং তার ভয়ংকর ফলাফলকে খুবই সহজে সাজিয়েছেন তাঁরা। পরিচালক অর্জুনও পাকা হাতে এগল্পকে সঠিক দিশায় এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। যেখানে প্রত্যেকটা দৃশ্যই একটু একটু করে গল্পের গভীরে ঢুকতে সাহায্য করেছে। তবে এত ভালো স্বত্ত্বেও খুঁত রয়েছে। এই ছবিতে কল্কির চরিত্রটা আরেকটু যত্ন দাবি করে। ছবির দৈর্ঘ্যর আরেকটু ছোট হলে আরও বেশি টান টান হত। 

Advertisement
কল্কি কোয়েচলিন।

চাঙ্কি পাণ্ডের কন্যা অনন্যা মূলত খবরে থাকেন আদিত্য রায় কাপুরের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জনে। তাঁর অভিনয় দক্ষতা এযাবৎ অবহেলিতই ছিল। যদিও ‘গেহেরাইয়া’ ছবিতে তাঁর চরিত্রটি অনেকেরই নজর কেড়েছিল। সেই ছবির পর এই ছবিতেও অনন্যা সব ট্রোলারকে ভুল প্রমাণ করেছেন। সঠিক গল্পে তিনি যে তাক লাগিয়ে দিতে পারেন, তাঁর প্রমাণ আহানা চরিত্র। অনেক দৃশ্যেই অনন্যা শুধু চোখ দিয়ে অভিনয় করে গিয়েছেন। আর অনন্যার উপযুক্ত সঙ্গত সিদ্ধান্ত ও আদর্শ। তবে এই ছবির আসল চমকই হল কল্কি। কল্কিই এই ছবিকে গভীরতা দেয়। সোশাল মিডিয়ায় এক রঙিন জগতের অন্ধকারকে কল্কিই যেন সামনে তুলে ধরেন। ঠিক বিবেকের মতো। আসলে ‘খো গয়ে হাম কাহা’ এমনই এক ছবি। শেষ হওয়ার পরেও রেশ রেখে যায়। ফোন নামিয়ে কিছুক্ষণ ভাবতে বাধ্য করে, কোন জগতের দিকে তাকিয়ে রয়েছি! এক কোন সমাজ? যার মাপকাঠি লাইক, লাভ, হাসির বোতামে! এ থেকে কি আমাদের মুক্তি নেই?

[আরও পড়ুন: ভক্তি বড় বালাই! এক্স হ্যান্ডেলে ৫০ মিনিট শাহরুখের ‘ডাঙ্কি’র লাইভ স্ট্রিম, রিভিউ দিলেন দর্শকরা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ