সুপর্ণা মজুমদার: ‘মার্ডার ইন দ্য হিলস’ (Murder in the Hills)। অতএব খুনের গল্প বোঝাই যাচ্ছে। বোঝার বোঝা আবার অনেকে। ছোট্ট একটা মাথায় আর কত রাখা যায়! রহস্য গল্পের প্রতি বাঙালির আকর্ষণ কখনও কমে না। আবার এক্ষেত্রে প্রত্যাশাও অনেক। সেই প্রত্যাশার ভার কাঁধে নিয়ে ওয়েব সিরিজ তৈরি করেছেন পরিচালক অঞ্জন দত্ত (Anjan Dutt)। সিরিজে অভিনয়ও করেছেন তিনি। সাধের দার্জিলিংকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে গল্প। তবে তাতে প্রত্যাশা সেভাবে পূরণ হল না। রহস্য নিয়ে ভাববো, নাকি দার্জিলিং দেখব বুঝেই উঠতে পারলাম না।
স্কচের দাম থেকে ক্ষমতা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা এই সিরিজ না দেখলে জানা যেত না। এক্কেবারে বিলিতি মেজাজেই সিরিজ শুরু হয়। গল্প বলতে শুরু করে অমিতাভ (অর্জুন চক্রবর্তী)। ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম করতে গিয়ে মুম্বইয়ে বিপাকে পড়েছিল অমিতাভ। সেই কারণেই দার্জিলিংয়ে (Darjeeling) থাকতে হচ্ছে তাঁকে। প্রেমিকা শিলার (অনিন্দিতা বসু) অনুরোধে প্রখ্যাত অভিনেতা টনির (অঞ্জন দত্ত) জন্মদিনের পার্টিতে যায় সে। পার্টিতে ছিল টনির বন্ধু তথা লেখক রঞ্জন (রজত গঙ্গোপাধ্যায়), ডিএসপি শুভঙ্কর (রাজদীপ গুপ্ত), পরিচালক বিজয় (সৌরভ চক্রবর্তী), টনির প্রেমিকা তথা ডাক্তার নিমা (সন্দীপ্তা সেন) এবং প্রাক্তন ফুটবল খেলোয়াড় তথা শিলার প্রাক্তন প্রেমিক বব (সুপ্রভাত দাস)। মদ-মাংস নিয়ে কিছুক্ষণের চর্চা চলার পরই আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে টনির মৃত্যু হয়। কিন্তু পরে জানা যায় টনিকে খুন করা হয়েছে? কে এই খুন করল? কেনই বা খুন হতে হল প্রখ্যাত অভিনেতাকে?
আট এপিসোডের এই সিরিজে রহস্য অবশ্যই আছে। তবে তাকে ছাপিয়ে গিয়েছে অঞ্জন দত্তের দার্জিলিং প্রেম। আর তাতেই সময়ে সময়ে গল্পের গতিপথ হারিয়ে গিয়েছে। অঞ্জন দত্তের সিনেমা কিংবা সিরিজ মানেই তাতে সংগীত পরিচালক নীল দত্ত। সেই ধারা ‘মার্ডার ইন দ্য হিলস’ সিরিজের ক্ষেত্রেও বজায় রয়েছে। তবে সব অংশে গানের তেমন প্রয়োজন ছিল বলে মনে হয়নি। অর্জুনের (Arjun Chakrabarty) অভিনয় ভাল। অনিন্দিতা বসু (Anindita Bose), রজত গঙ্গোপাধ্যায়, রাজদীপ গুপ্ত নজর কেড়েছেন। সন্দীপ্তার (Sandipta Sen) ডার্ক লিপস্টিক চোখে পড়েছে। সুপ্রভাতের চরিত্রের মধ্যে কিছুটা দেবদাসের মিল খুঁজে পাওয়া গেল।
গল্পে বৃত্ত মেলাতে গেলে নির্দিষ্ট গতিপথেই চলতে হয়, এক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। ক্লাইম্যাক্সে যেনতেন প্রকারেণ অঙ্ক যেন মেলাতেই হত। সে তো না হয় হল! কিন্তু গল্পের রহস্য ফাঁস হওয়ার পর এতটা আবেগের ইঞ্জেকশন না দিলেও চলত। এখনকার দর্শকদের মনে হয় সমস্ত কিছু হরলিক্সের মতো গুলিয়ে না খাইয়ে দিলেও চলে। মতামত ব্যক্তিগত। বাকিটা না হয় হইচই (Hoichoi) প্ল্যাটফর্মে দেখে আপনারাই বিচার করে নেবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.