সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের সরগরম টালিগঞ্জের টেলিপাড়া। বকেয়া পারিশ্রমিক না পাওয়ায় শিল্পীরা রুষ্ট। টলিউডের অন্দরে অবশ্য এই অসন্তোষ আজকের নয়। বহুদিন থেকেই পারিশ্রমিক নিয়ে শিল্পীদের মধ্যে দানা বাঁধছিল অসন্তোষ। এবার পারিশ্রমিকের বকেয়া টাকা না মেলায় বিস্ফোরক টেলিজগতের একাধিক শিল্পী এবং কলাকুশলীদের একাংশ। শনিবার অর্থাৎ ২৫ মে এক জরুরি সাংবাদিক বৈঠক ডাকা হয় শিল্পীদের সংগঠন আর্টিস্ট ফোরামের তরফে। সেই বৈঠকেই উঠে আসে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযোগ, মূলত দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া সংস্থা এবং তার কর্ণধার তথা প্রযোজক রানা সরকারের বিরুদ্ধে।
[আরও পড়ুন: আপনার গৃহকোণ ‘অদল বদল’ করতে আসছেন কাঞ্চন ]
নানারকম আইনি অজুহাতে দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিকের অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং কলাকুশলীদের প্রাপ্য টাকা আটকে রেখেছে প্রযোজক রানা সরকার এবং তাঁর সংস্থা দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া। শুধু তাই নয়, এই প্রযোজনা সংস্থার বিরুদ্ধে উঠেছে আরও গুরুতর অভিযোগ। ২০১৮-১৯ আর্থিক বর্ষে ধারাবাহিকের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের পারিশ্রমিক থেকে সবমিলিয়ে মোট প্রায় ২০-২৫ লক্ষ টাকা টিডিএস বাবদ কেটে নিলেও, আজ অবধি তা জমা পড়েনি সরকারি কোষাগারে। শনিবার আর্টিস্ট ফোরামের বৈঠকে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্যও প্রকাশ্যে আসে। উল্লেখ্য, পারিশ্রমিক থেকে কেটে নেওয়া টিডিএস বাবদ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না পড়া এক গুরুতর অপরাধ। এক্ষেত্রে, নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ নিয়ে অভিযোগকারীরা আদালতের দ্বারস্থ হলে গুরুতর আইনি জটিলতায় ফাঁসতে পারেন রানা সরকার এবং তাঁর প্রযোজনা সংস্থা। যদিও, এপ্রসঙ্গে নির্বাক টলিপাড়ার অনেকেই। ক্ষোভে ফুঁসলেও কাজ যাওয়ার ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ একাধিক শিল্পীরা। তবে, মাসের পর মাস পারিশ্রমিক না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে আর্টিস্ট ফোরামের কার্যকরী সভাপতি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় জরুরি সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন।
[আরও পড়ুন: অতি বড় ঘরনি না পায় ঘর! চিরাচরিত ধারণার সংজ্ঞা বদলাতে আসছে চারু]
অন্যদিকে, রানা সরকার বেশ কয়েক মাস ধরেই নিখোঁজ। একাধিক মাধ্যম মারফত তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে নিষ্ফল হয় সকলেই। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে প্রসেনজিৎ বলেন, “প্রযোজকদের অনেক সময় ৭-১০ দিন দেরি হতেই পারে। সেই নিয়ে প্রযোজকের সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে। কিন্তু রানা সরকারের সঙ্গে তো কোনওরকম যোগাযোগই করা সম্ভব হচ্ছে না। এইভাবে অনির্দিষ্টকাল চলতে পারে না।” টেলিপাড়ার একাধিক সূত্রের খবর, রানা সরকার মেল মারফত নির্দিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। অন্যদিকে, অভিযোগকারীরা আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন কি না, তা সাংবাদিক বৈঠকে স্পষ্ট করেননি কেউই। ‘জয় বাবা লোকনাথ’, ‘মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য’, ‘খনার বচন’ ধারাবাহিকের পক্ষ থেকেই বিশেষ করে উঠেছে এই অভিযোগ। অতএব, বকেয়া টাকা না পাওয়ায় টলিপাড়ার অন্দরে চলা দীর্ঘদিনের এই সমস্যার কিনারা কিন্তু এখনও ধোঁয়াশাই রয়ে গিয়েছে। কেন দিনের পর দিন এহেন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, আর কেনই বা এখনও অবধি কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি প্রযোজকের বিরুদ্ধে, প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।