এক-দু’বছর নয়। দশ বছরের ছোট নিক জোনাসকে বিয়ে করতে চলেছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। অন্য দিকে অনুপ জলোটার গার্লফ্রেন্ড সাঁইত্রিশ বছরের ছোট। এটা কি ঠিক? বিতর্ক শুনলেন শুভঙ্কর চক্রবর্তী।
বেশি বয়সি পুরুষ কেরিয়ারে বাধা হয়ে দাঁড়ায়
অনন্য ঘোষ (ব্যাঙ্ককর্মী)
কমবয়সি ছেলেকে বিয়ের করার ব্যাপারটা কিন্তু বেশ পুরনো। এ রকম বিয়ের উদাহরণ অনেক আছে। অনুষ্কা শর্মা, সোহা আলি খান, ঐশ্বর্য রাই কিংবা নেহা ধুপিয়া, এঁদের প্রত্যেকের বর বয়সে ছোট। এবং কমবয়সি ছেলেদের বিয়ে করে এঁরাও যথেষ্ট খুশি। আসলে এখন বেশিরভাগ মেয়েই কেরিয়ার সচেতন। তাদের ধারণা যদি তারা সমবয়সি বা নিজের চেয়ে বড় কাউকে বিয়ে করে, তবে সেই পুরুষটি কেরিয়ারে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। কোথাও একটা মেল ইগো কাজ করতে পারে। কমবয়সি কাউকে বিয়ে করলে এ রকম সমস্যার সম্ভাবনা কম। একজন মহিলার এই মনে হওয়া কিন্তু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই। আশেপাশে এরকম বিয়ে আকছার হচ্ছে এবং হয়েছে। মজার বিষয় যখনই এ রকম বিয়ে বিনোদন জগতে হয় তখনই সেটা ট্রেন্ড। বাস্তবে এই ট্রেন্ড অনেক আগেই শুরু।
[ পুজোয় সাজুন হ্যান্ডলুমের শাড়িতে, জেনে নিন কোথা থেকে করবেন শপিং ]
সার্থিকা প্রধান (ছাত্রী)
মেয়েদের মধ্যে একটা মাদারলি ব্যাপার থাকে। তারা চায় বয়ফ্রেন্ড বা হাজব্যান্ডকে পরামর্শ দিতে। উলটোদিকের মানুষটাকে সমানভাবে বুঝতেও যেমন চেষ্টা করে ঠিক তেমনই প্রয়োজনে তাকে বকা-ঝকা করতেও পছন্দ করে। এতে আমি কোনও ভুল দেখি না। এটা বলতে কোনও কুণ্ঠা নেই যে আমার বাবা আমার মায়ের থেকে বয়সে ছোট। দু’জনেই কিন্তু দিব্যি এতগুলো বছর সংসার করে কাটিয়ে দিল। আমিও কমবয়সি ছেলে ডেট করেছি। তাদের বুঝতে সুবিধে হয়েছে। যে কোনও রিলেশনে ম্যাচিওরিটি, ট্রাস্ট এবং একে অপরের প্রতি আস্থা রাখাটা জরুরি। বয়স গুরুত্বহীন। এখনকার মেয়েরা স্বাধীনচেতা। নিজের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নেয়। তাই কম-বেশি বয়সের ব্যাপারটা তাদের উপরেই ছেড়ে দেওয়া উচিত।
বয়স নয়, মনের মিলই আসল
অঙ্কিত বাগচী (ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল প্রোগ্রামার)
মহিলারা একটু বেশি বয়সি পুরুষ পছন্দ করে। কারণ সেই পুরুষদের জীবন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা বেশি। কোনও বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা বা কোনও টাফ সিচুয়েশন হ্যান্ডল করার ক্ষমতাও বেশি। কমবয়সী ছেলেরা আবেগপ্রবণ হয়, তাই তাদের সিদ্ধান্তে বাস্তবতার অভাব থাকে। ভুলত্রুটির সম্ভাবনাও প্রচুর। বিবাহিত জীবনে আর্থিক সচ্ছলতাও দরকার। সেখানেও একজন এজেড পুরুষই এগিয়ে। তাদের ভারিক্কি ব্যাপারটা মহিলাদের ভীষণ অ্যাট্র্যাক্ট করে। তারা সহজে মহিলাদের মানসিক চাহিদা বুঝতে পারে। করিনা-সইফের বিয়েটা এ কারণেই টিকে গেল। অঙ্কিতা কানোয়ারের চেয়ে মিলিন্দ সোমন পঁচিশ বছরের বড়। শুভশ্রী যেমন রাজ চক্রবর্তীর চেয়ে বয়সে অনেক ছোট। কই তাঁরা তো ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে দেননি।
অনন্যা ঘোষ দস্তিদার (শিক্ষিকা)
বৈবাহিক সম্পর্কে বয়স পুরোপুরি অপ্রাসঙ্গিক। দু’জনের মেন্টাল ওয়েভলেংথ সেখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শচীন তেণ্ডুলকর তাঁর স্ত্রী অঞ্জলির থেকে পাঁচ বছরের ছোট। কী সুন্দর তাঁদের দাম্পত্যজীবন! আবার সইফ আলি খানের প্রাক্তন স্ত্রী অমৃতা তাঁর থেকে প্রায় ১২ বছরের বড় হওয়া সত্ত্বেও সেই বিয়ে কিন্তু টেকেনি। পরে সইফ বিয়ে করলেন এগারো বছরের ছোট করিনাকে। ছ’বছরের সুখী দাম্পত্যজীবন। ২৮ বছরের গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে অনুপ জলোটার আড়াই বছরের সম্পর্ক। এখনও অটুট! তাই জীবনসঙ্গী বাছার ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ে সবারই স্বাধীনতা থাকা উচিত। সেখানে বয়স কখনও ফ্যাক্টর হতে পারে না। আর বয়সে ছোট কোনও পুরুষকে বিয়ে করে আমি দারুণ ট্রেন্ড সেট করে ফেললাম, এটা ভীষণ বোকা-বোকা।
[ ‘রাহুল নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে টায়ার্ড হয়ে গেছি’ ]