BREAKING NEWS

১০ চৈত্র  ১৪২৯  শনিবার ২৫ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

শীতের মরশুমে বেগুন চাষে বিপুল লক্ষ্মীলাভ, নজর কাড়লেন আশাপুরের কৃষকরা

Published by: Sayani Sen |    Posted: January 19, 2020 4:47 pm|    Updated: January 19, 2020 4:47 pm

Farmers earn more money to cultivates Brinjal in Maldah

বাবুল হক, মালদহ: আশাপুরের বেগুন। নামডাক রয়েছে গোটা মালদহ জেলাজুড়েই। স্বাদেও মিষ্টি এবং সুস্বাদু। এই বেগুন ফলিয়ে এবার মুখে চওড়া হাসি মালদহের চাঁচোল মহকুমার কৃষকদের। চাঁচোল মহকুমাজুড়েই বেগুনের অত্যধিক ফলন হয়। শুধু নিজেরাই লাভের মুখ দেখছেন তা নয়, তাঁরা দিশা দেখাচ্ছেন জেলার অন্য কৃষকদেরও। তাঁদের বক্তব্য, বিভিন্নভাবে সরকারি সাহায্য মেলায় এবছর বেগুন চাষে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। শীতের মরশুমে ‘আশাপুরের বেগুন’ বিক্রি করে মোটা টাকা রোজগার করছেন চাঁচোল মহকুমার অধিকাংশ কৃষকই। কয়েক বছর পর মালদহের চাঁচোলে বেগুনের বেশ ফলন ভাল হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি দপ্তর। 

চাঁচোল-১ নম্বর ব্লকের মতিহারপুর, সন্তোষপুর, কুশমাই, শিবপুর, খানপুর, গালিমপুর-সহ অন্তত ২৫টি গ্রামের কৃষকরা বেগুন ফলিয়ে খুব খুশি। বেশ ভাল দামও মিলছে। চাষিরা জানান, চাঁচোলের আশাপুরের বেগুন গোটা রাজ্যে বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ। সাধারণ বেগুনের বেশ কয়েক রকমের প্রজাতি রয়েছে। গুটি বেগুন, কাঁটাযুক্ত বেগুন ও সাদা বেগুন। কিন্তু মালদহের মানুষের কাছে আশাপুরের বেগুনেরই বেশি নামডাক। চাঁচোল মহাকুমার খরবা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আশাপুরে সবচেয়ে বেশি বেগুনের চাষ হয়। বর্তমানে সরকারি সহযোগিতা পেয়ে অধিকাংশ কৃষকই বেগুন চাষ শুরু করেছেন। অত্যন্ত সুস্বাদু আশাপুরের বেগুনের ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকরা এই বছর অন্তত তিনগুণ লাভ করতে চলেছেন।

BRINJAL

[আরও পড়ুন: সাগরদিঘিতে শুরু আপেল চাষ, বিপুল অর্থলাভের সম্ভাবনা]

মালদহ জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, চাঁচোল মহকুমায় প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়। এবার জমির পরিধি অনেকটা বেড়েছে। প্রতি এক বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করতে খরচ হয় মাত্র সাত থেকে আট হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে ১৫০ থেকে ২০০ মন বেগুন উৎপাদন হয়। বর্তমানে উৎপাদিত বেগুন বাজারে পাইকারদের কাছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা মন হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। যা গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি। চাঁচোল মহকুমার এই বেগুন শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি, এমনকী ঝাড়খণ্ড এবং লাগোয়া অসমেও রপ্তানি শুরু হয়েছে।
মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের বক্তব্য, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কৃষি দপ্তরের মাধ্যমে বেগুন চাষে নানা রকমের সহায়তা মিলেছে। রাসায়নিক সার বাদ দিয়ে জৈবসার প্রয়োগ করে যে বেগুন ভাল মতো উৎপাদন করা সম্ভব তা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্তারা হাতেকলমে করে দেখালেন। এজন্য কৃষি দপ্তর থেকে সমস্ত দিক দিয়ে প্রশিক্ষণ, আর্থিক সহযোগিতা, বিনামূল্যে চারা গাছ ও বীজ দেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সঠিক পদ্ধতি জেনে বেগুন চাষ করেই এই বছর বিপুল লাভ হচ্ছে।

BRINJAL

[আরও পড়ুন: জায়গার অভাবে শোওয়ার ঘরেই মাশরুম চাষ, বিপুল লক্ষ্মীলাভ বৃদ্ধ দম্পতির]

মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গালিমপুর গ্রামের কৃষক সাইদুল শেখ, মতিউর রহমান, সাহেব আলিদের কারও ১৫ বিঘা, কারও ১০ বিঘা, কারও পাঁচ বিঘা জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে। প্রত্যেকেই মাত্রাছাড়া ফলন পেয়েছেন। এমনকী জমির উৎপাদিত ৯০ শতাংশ বেগুন পাইকারদের মাধ্যমে বাজারে রপ্তানির কাজ ইতিমধ্যে তাঁরা সেরে ফেলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, মালদহের আশাপুরের পাশাপাশি নবাবগঞ্জের বেগুনও বিখ্যাত। যদিও সেই বেগুন এখনও জমি থেকে ওঠেনি। তার আগেই চাঁচোলের প্রসিদ্ধ আশাপুরের বেগুন বাজারে ঢুকে গিয়েছে। মালদহ জেলা পরিষদের কৃষি ও সেচ বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ রফিকুল হাসান বলেন, “কৃষকদের বিভিন্ন ফসল সবজি উৎপাদনের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে নানাভাবে সহযোগিতা করছে। ঋণ প্রদান, চারাগাছ বিলি, জৈব সার প্রয়োগ পদ্ধতি এবং চাষের প্রশিক্ষণ সরকার বিনামূল্যে কৃষকদের দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।”

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে