Advertisement
Advertisement
Here are procedure of farming cat fish

লাখপতি হতে চান? জেনে নিন আধুনিক পদ্ধতিতে জলাশয়ে শিঙি মাছ চাষের পদ্ধতি

ইদানীং চাহিদার তুলনায় অনেকটাই কমেছে শিঙি মাছ চাষ।

Here are procedure of farming cat fish । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:January 25, 2023 5:18 pm
  • Updated:January 25, 2023 5:18 pm

ডোবা, খাল, বিল ইত্যাদি এবং পুরনো পুকুর-সহ বিভিন্ন জলাশয়ে প্রচুর পরিমাণে আগে শিঙি মাছ পাওয়া যেত। বর্তমানে এই মাছ যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের দেশের অসংখ্য জলাশয় রয়েছে। সেখানে শিঙি মাছ চাষ করা সম্ভব। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্প জাতীয় মাছের চেয়ে লাভজনকভাবে শিঙি মাছ চাষ করা যেতে পারে। লিখেছেন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের শস্য শ্যামলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের মৎস্য বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ ড. স্বাগত ঘোষ। পড়ুন প্রথম পর্ব।

আমাদের দেশে শিঙি মাছ অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মাছ, খেতে খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। এই মাছের চাহিদা এবং বাজারমূল্য যথেষ্ট বেশি। অতিরিক্ত শ্বসনঅঙ্গ থাকায় জলজ পরিবেশের বাইরেও অনেকক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে। ফলে জীবন্ত অবস্থায় বাজারজাত করা যায়। অতীতে প্রাকৃতিক জলাভূমি যেমন- ডোবা, খাল, বিল ইত্যাদি এবং পুরনো পুকুরে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া গেলেও, বর্তমানে এই মাছের প্রাপ্যতা খুবই কম। জলজ পরিবেশ বিভিন্ন কারণে বিপন্ন হওয়ায় প্রজনন এবং বিচরণক্ষেত্র সীমিত হয়ে পড়েছে। ফলে মাছটি এখন যথেষ্ট পরিমানে পাওয়া যাচ্ছে না। অত্যন্ত সুস্বাদু এই মাছটিকে রক্ষা করা এবং চাষের জন্য প্রয়োজনীয় পোনা উৎপাদনের লক্ষ্যে শস্য শ্যামলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে কৃত্রিম প্রজনন, পোনা উৎপাদন এবং চাষের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশের অসংখ্য জলাশয়, যেমন-পুকুর, ডোবা, নালা, খাল, বিলসহ অনেক নিচু জলাভূমি রয়েছে, যেখানে শিঙি মাছ চাষ করা সম্ভব। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্প জাতীয় মাছের চেয়ে লাভজনকভাবে শিঙি মাছ চাষ করা যেতে পারে।
শিঙিমাছ চাষের বৈশিষ্ট্য

Advertisement
  • অধিক ঘনত্বে এই মাছ চাষ করা যায়।
  •  কম গভীরতা সম্পন্ন পুকুরেও চাষ করা যায়।
  • জীবন্ত মাছ বাজারজাত করা যায়।
  • তুলনামূলকভাবে বাজারমূল্যও অধিক।

[আরও পড়ুন: গণেশ, কালী, কৃষ্ণ হয়ে পুকুরে ফুটছে মুক্তো! নবান্নের উদ্যোগে ডিজাইনার মুক্তোচাষ রাজ্যে]

প্রজনন ও চাষ ব্যবস্থা
শিঙি মাছের চাষ লাভজনক এবং বানিজ্যিক ভাবে চাষের উপযোগী হলেও পোনার অপ্রতুলতার জন্য চাষ তেমন জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। প্রাকৃতিক ভাবে উৎপাদিত পোনা ব্যাপকভাবে চাষবাদের জন্য যথেষ্ট নয়। এই জন্যই কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন একান্ত জরুরি। কৃত্রিম প্রজনন ও চাষ ব্যবস্থাপনার দিকগুলি হল-
প্রজননক্ষম মাছ সংগ্রহ ও পরিচর্যা

Advertisement
  • কৃত্রিম প্রজননের জন্য ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি মাসে প্রাকৃতিক উৎস থেকে সুস্থ সবল স্ত্রী ও পুরুষ মাছ সংগ্রহ করতে হবে।
  • প্রতি বিঘায় ২৪,০০০ টি মাছ মজুত করা যেতে পারে ।
  • মজুতকৃত মাছকে প্রতিদিন দেহের ওজনের শতকরা ৫-৬ ভাগ হারে সম্পূরক খাবার দিতে হবে।
  • বাজারে প্রচলিত বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত খাবার ব্যবহার করা যেতে পারে অথবা শতকরা ২৫ ভাগ ফিসমিল, ১৫ ভাগ সয়াবিন মিল, ১৬ ভাগ চালের গুঁড়ো, ১৬ ভাগ গমের ভুসি, ১৫ ভাগ বাদাম খোল, ৫ ভাগ স্টার্চ পাউডার, ৫ ভাগ ফিসঅয়েল, ০.০৩ ভাগ ভিটামিন-সি, ০.০১ ভাগ ভিটামিন-ই, ২.৯৬ ভাগ অন্যান্য ভিটামিন ও খনিজ সহযোগে খাবার তৈরি করে মাছকে খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়।
  • মাঝে মাঝে জাল টেনে মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে।

শিঙিমাছের কৃত্রিম প্রজনন
শিঙি মাছ এক বছর বয়সেই প্রজননের উপযোগী হয়। সাধারণত মে থেকে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস পর্যন্ত এরা প্রজনন করে থকে। কৃত্রিম প্রজননের জন্য সুস্থ সবল স্ত্রী ও পুরুষ বাছাই করতে হবে।
পুকুর থেকে মাছ ধরে দ্রুত এবং সাধারন সাবধানতার সাথে সিমেন্টের ট্যাঙ্কে বা হাপায় স্থানান্তরিত করতে হবে এবং ক্রমাগত ৬-৮ ঘণ্টা জলের প্রবাহ দিতে হবে।
হরমোন ইঞ্জেকশন প্রয়োগ ও প্রজনন

  • শিঙি মাছের ক্ষেত্রে স্ত্রী ও পুরুষ উভয় মাছকেই হরমোন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়।
  • মাছের পরিপক্কতা এবং প্রজননের সময়ের উপর ভিত্তি করে স্ত্রী মাছকে প্রতি কেজি দেহ ওজনের জন্য ২ মিলিলিটার এবং পুরুষ মাছকে ১ মিলিলিটার কৃত্রিম হরমোন ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করতে হয় ।
  • হরমোন ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর স্ত্রী ও পুরুষ উভয় মাছকে হাচিং পুল বা ট্যাঙ্কের মধ্যে থাকা ব্রিডিং হাপায় ছেড়ে দিতে হবে।
  • ব্রিডিং হাপায় জলের কৃত্রিম ঝর্নার ব্যবস্থা করতে হবে।
  • ব্রিডিং হাপায় জলের উচ্চতা ৪-৫ সেমি এবং ট্যাঙ্কের জলের উচ্চতা ৮-১০ সেমি রেখে অতিরিক্ত জল ক্রমাগত বেরিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
  • ট্যাঙ্কের যে স্থান দিয়ে জল বেরিয়ে যাবে, সেখানে প্ল্যাঙ্কটন নেট দিয়ে ভালো করে বেঁধে দিতে হবে যতে ডিম না বেরিয়ে যায়।
  • হরমোন ইঞ্জেকশন দেওয়ার ৬-১০ ঘণ্টার মধ্যে প্রজননের মাধ্যমে স্ত্রী মাছ হাপায় ডিম দেওয়া শুরু করে।
  • এই মাছের ডিম আকারে ছোটো হওয়ায় খুব সহজেই ব্রিডিং হাপা থেকে বেরিয়ে হ্যাচিং ট্যাঙ্কের তলায় ছড়িয়ে পড়ে।
  • ডিম দেওয়ার প্রক্রিয়া সাধারণত ৪-৫ ঘণ্টা স্থায়ী হয়।

[আরও পড়ুন: চড়া দামেও দেদার বিকোচ্ছে নবাবগঞ্জের ‘নবাবি বেগুন’, মুখে হাসি কৃষকদের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ