সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: লকডাউনের তিন মাসে মুখ থুবড়ে পড়েছিল শিলিগুড়ির আনারস রপ্তানি। দেশজোড়া খ্যাতিসম্পন্ন শিলিগুড়ির বিধাননগরের আনারস রপ্তানি আনলক ওয়ানে (Unlock 1) ফের ছন্দে ফিরছে। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, গুজরাট ও রাজস্থানে রপ্তানি শুরু করেছেন আনারস চাষিরা। ফলে দীর্ঘদিন ক্ষতির মুখে পড়া আনারস উৎপাদকদের মুখে হাসি ফুটেছে। প্রতিদিন বিধাননগর থেকে গড়ে কুড়িটি ট্রাক দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটছে। তবে পানিট্যাঙ্কি সীমান্ত দিয়ে নেপালে এই মুহূর্তে যাতায়াত বন্ধ থাকায় ঘুরপথে আনারস পাঠাতে বেশি টাকা খরচ হচ্ছে বলে চাষিদের একাংশ জানিয়েছেন।
বিধাননগর পাইনাপেল গ্রোয়ার্স ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেসন কিংবা ‘আচাষ’- এর সম্পাদক অরুণ মণ্ডল জানিয়েছেন, “চলতি মরশুমে ছ’লক্ষ মেট্রিক টন আনারস উৎপাদন হয়েছে বিধাননগর এবং চোপড়া এলাকায়। প্রতিদিন গড়ে কুড়িটি ট্রাকে দশ মেট্রিক টন করে দু’শো মেট্রিক টন আনারস দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে।” এ ছাড়া প্রতিদিন শিলিগুড়ি-সহ রাজ্যের বাজারে পাকা আনারস সরবরাহ করছেন তাঁরা। তবে উৎপাদিত আনারসের সিংহভাগ তাই বাইরের রাজ্যে রপ্তানি করে দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। তবে বিধাননগরে উৎপাদন হলেও, পাকা আনারস সংরক্ষণের মতো পরিকাঠামো এখনও গড়ে ওঠেনি। ফলে অপরিপক্ক অবস্থায় আনারস তুলে তা বাইরে পাঠানো হচ্ছে। তাতে গুণগত মানের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। যার দ্রুত সমাধান চাইছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: লক্ষ্য আর্থিক উন্নতি, কোচবিহারে ফল উৎপাদন বাড়াতে মরিয়া উদ্যানপালন বিভাগ]
সাতাত্তরটি কো-অপারেটিভ নিয়ে তৈরি সোনার বাংলা অ্যাগ্রোর সিইও প্রদীপ কুমার সিংহ জানিয়েছেন, নেপালে ব্যবসা করতে প্রচুর হয়রানির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। প্রথমত করোনার আবহে যে দিক দিয়ে প্রবেশ করছেন, সে দিক দিয়ে বেরোতে দিচ্ছে না। বিহার হয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে। ফলে খরচ বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। তবু সারা বছর ব্যবসা করেন, তাই সুসম্পর্ক ধরে রাখার জন্যই সেখানে মাল পাঠাচ্ছেন। তাছাড়া দেশে আর কোনওরকম সমস্যা হচ্ছে না। বিধাননগর আনারস আড়ত খুলে যাচ্ছে কয়েকদিনের মধ্যেই। ফলে আগামী সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে সব জায়গাতেও আনারস পাঠানো সম্ভব হবে বলে বিধাননগরের আনারস চাষিদের আশা।