Advertisement
Advertisement

Breaking News

সংগ্রামী শিক্ষিকা

নদী,পাহাড় পেরিয়ে রোজ স্কুলে! প্রকৃত শিক্ষাদাত্রীর নজির কেরলের উষাকুমারীর

পড়া শেষে মিড-ডে মিল রান্না করেও খাওয়ান দিদিমণি।

A teacher in Keala, struggles everyday to reach school
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:September 8, 2019 8:38 pm
  • Updated:September 8, 2019 9:19 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিক্ষাদানের তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল। আর ছিল সমস্ত বাধা পেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তরকঠিন জেদ। এই দুই অস্ত্রকে হাতিয়ার করেই একদিন পছন্দর পেশায় চলে এসেছিলেন। সেই থেকে শুরু। কণ্টকময় দীর্ঘ রাস্তা পেরিয়ে স্কুলে যাওয়া এখন রোজকার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে কেরলের শিক্ষিকা আর কে উষাকুমারীর কাছে। এই দশভুজার নিত্য সংগ্রামের কথা জানলে, তাঁকে স্যালুট না করে উপায় নেই।

[আরও পড়ুন: ১০০ দিনে কোনও বিকাশ নেই! মোদি সরকারকে কটাক্ষ রাহুল গান্ধীর]

তিরুঅনন্তপুরমের অমবুরি গ্রামে বাড়ি উষাকুমারীর। বাড়ি থেকে রোজ ঘড়ি ধরে সাড়ে সাতটা নাগাদ বেরোন তিনি। প্রথমে স্কুটি নিয়ে পৌঁছন কাদাভু। সেখান থেকে নদীপথ। বেশ খানিকটা দূরে জঙ্গল লাগোয়া অগস্ত্যবনম। তারপর জঙ্গলের ভিতর পাহাড়ের গা বেয়ে শুরু হয় ট্রেকিং। একটি মাত্র লাঠি সম্বল করে চড়াই-উতরাই পেরনো। প্রতি মুহূর্তে দোসর জঙ্গলের ভয়ংকর প্রাণীদের আক্রমণের আশঙ্কা। সেসব
পেরিয়ে তবে অগস্ত্য একা আদ্যপক স্কুলে পা রাখেন দিদিমনি। তাঁর জন্য সেখানে অপেক্ষা করে থাকে ১৪জন খুদে পড়ুয়া। এরা সকলে পিছিয়ে পড়া কান্নি উপজাতির। স্কুলে পড়ার তেমন সুযোগ তারা পায় না। আর এখানেই উষাকুমারীর জেদ আরও বেড়েছে। তিনি খুব ভাল বুঝতে পারেন যে, এখানে পড়াতে না এলে এরা চিরকাল শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিতই থেকে যাবে।
প্রথমে গাছতলায় বসে ছাত্রছাত্রীদের পড়াতেন উষাকুমারী। তারপর তাঁর উদ্যোগেই স্কুলবাড়ি তৈরি হয়। দিদিমনি একাই খুদেদের ভাষা, অঙ্ক আর বিজ্ঞানের পাঠ দেন। সকলে মন দিয়ে তাঁর ক্লাস করে। পড়াশোনা শেষে খাওয়ার পালা। সেখানেও উষাকুমারী একাই সব। একাই রেঁধে-বেড়ে খাওয়ান। বেতনের টাকা থেকে বাঁচিয়ে পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য নিয়মিত দুধ, ডিম দেন। এভাবেই তাঁর একটা দিন শেষ
হয়।
সবদিনই অবশ্য এমন মসৃণভাবে কাটে না। ঝড়-জল আছে, আছে অসুস্থতাও। তেমন অসুবিধায় পড়লে পডুয়াদের কারও একটা বাড়িতে থেকে যান উষাকুমারী। যাতে পরেরদিন স্কুলে যেতে সমস্যা না হয়। একটি দিনও কামাই দেন না দিদিমণি। তাহলে যে খুদেরা পিছিয়ে পড়বে!

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘১০০ দিনে যা হয়েছে তা ৭০ বছরে হয়নি’, বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি]

প্রতিটি দিন এমন সংগ্রামকে সঙ্গী করে নিয়ে নিজের কর্তব্যে অবিচল থাকা শিক্ষিকা বহু সম্মান, বহু পুরস্কারও পেয়েছেন। তবে তিনি মনে করেন, এই ছাত্রছাত্রীরা বড় হয়ে প্রতিষ্ঠিত হলেই তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ পুরস্কারটি পাওয়া হবে। উষাকুমারীর মতো শিক্ষিকাই সমাজের প্রকৃত শিক্ষাদাত্রী, সেইসঙ্গে নারীশক্তির এক বড় প্রতিভূ। উষাকুমারী, আপনাকে অন্তরের শ্রদ্ধা, কুর্নিশ।

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ