Advertisement
Advertisement
Amit Shah on Mamata Banerjee

‘বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের সঙ্গে অবিচার করবেন না’, সিএএ নিয়ে মমতাকে নিশানা শাহর

দেশজুড়ে CAA চালু হতেই তুমুল বিতর্কের ঝড় উঠেছে। একাধিক রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে আমজনতা, আঙুল উঠছে মোদি সরকারের দিকে। এহেন পরিস্থিতিতে শাহ সাফ জানালেন, শরণার্থী আর অনুপ্রবেশকারী এক নয়।

Amit Shah challenges Mamata Banerjee on CAA issue
Published by: Anwesha Adhikary
  • Posted:March 14, 2024 10:06 am
  • Updated:March 14, 2024 1:17 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে চরমে বিভ্রান্তি। বিজ্ঞপ্তি জারি হতেই রাজনৈতিক দলগুলোর তরজায় পরিস্থিতি আরও জট পাকিয়েছে। কে নাগরিক, কেই বা শরণার্থী, নতুন আইনে আবেদন করতে হবে কাদের? এমন একাধিক প্রশ্নই এখন মুখে মুখে। তবে উত্তর নেই। এই প্রেক্ষাপটে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শাহর স্পষ্ট বার্তা, সিএএ নিয়ে রাজনীতি করছে বিরোধীরা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি নিশানা করে  বিজেপির ‘চাণক্য’র বক্তব্য, “বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের সঙ্গে অবিচার করবেন না। বাংলাকে অনুপ্রবেশকারীদের থেকে মুক্ত করবই। হাতজোড় করে বলছি সিএএ নিয়ে রাজনীতি করবেন না।”     

২০১৯ সালে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন আনে কেন্দ্রের মোদি সরকার। উদ্দেশ্য, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশে নির্যাতিত অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া। তবে করোনার জেরে তা বলবৎ করা যায়নি প্রায় ৪ বছর। লোকসভা ভোটের আবহে গত সোমবার গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে সিএএ চালু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। শুরু হয় বাংলার মতুয়া গড়ে আনন্দোৎসব। পরেরদিন হাবরার সভা থেকে মমতা (Mamata Banerjee) বলেন, “যেই CAA পোর্টালে দরখাস্ত করবেন, তখনই আপনাদের এতদিনকার নাগরিকত্ব বাতিল হবে। এতদিন যে সুযোগ সুবিধা পেতেন, তা বাদ হয়ে যাবে। তাই দরখাস্ত করার আগে ভালো করে ভেবে দেখবেন।” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “এটা পুরোপুরি ভাঁওতা, জুমলা। আগে আপনাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে। তার পর CAA-র মাধ্যমে নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলবে। কিন্তু সেই অধিকার আবার ফিরে পাবেন কিনা, তার নিশ্চয়তা নেই।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘টাকা নেই, ভোটে লড়ব কীভাবে’, বলছেন আয়কর হানায় জেরবার কংগ্রেস সভাপতি]

এদিন সমস্ত সমালোচনার জবাব দেন শাহ। তাঁর সাফ কথা, “শরণার্থী ও অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে ফারাক বোঝেন না মমতা। হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছেন তিনি। সিএএ নিয়ে প্রতিবাদ তোষণের রাজনীতি। তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের সঙ্গে অবিচার করবেন না। বাংলাকে অনুপ্রবেশকারীদের থেকে মুক্ত করবই। হাতজোড় করে বলছি সিএএ নিয়ে রাজনীতি করবেন না। জাতীয় সুরক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে রাজনীতি করছেন। মানুষ কখনই পাশে থাকবেন না। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ করছি, তিনি দেখান সিএএ-র কোন ধারা নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়।” স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আবারও আশ্বাস, এই আইনের জেরে কেউ নাগরিকত্ব হারাবেন না। কারণ এটা নাগরিকত্ব কাড়ার নয়, নাগরিকত্ব প্রদানের আইন। 

Advertisement

সিএএ নিয়ে কেন এত বিতর্ক? বিরোধীদের দাবি, এই আইনে যেহেতু মুসলিমদের উল্লেখ নেই সেই জন্য দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে সংখ্যালঘু হিন্দুরা ব্যাপক হারে ভারতে চলে আসতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। তাছাড়া, অসমে থাকা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদেরও (বাংলাভাষী) নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ প্রশস্ত হয়ে যাবে। ফলে অসমের জনবিন্যাস বদলে যেতে পারে। বিপন্ন হবে স্থানীয় ভাষা, সংস্কৃতি। সিএএর পরে দেশজুড়ে এনআরসি কার্যকর করে অনেকের নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে কেন্দ্র, এমনটাও অভিযোগ উঠেছে বিরোধীদের তরফে। তবে এনআরসি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে আগামী দিনে বাংলায় বিজেপি সরকার গড়বে বলেই আশাবাদী তিনি। 

তবে অমিত শাহের পালটা দিয়েছে তৃণমূলও। রাজ্যসভা সাংসদ সাগরিকা ঘোষ বলেন, “ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন এনেছে বিজেপি সরকার। যদি হিন্দুদের কথাই বলা হয় তাহলে অসমে এনআরসি করে ১৩ লক্ষ বাঙালি হিন্দুকে বাদ দেওয়া হয়েছে, সেই নিয়ে কী বলবেন? আপনারাই ধর্মের বিভাজন ঘটিয়ে ভোট টানতে চাইছেন।” রাজ্যসভা সাংসদ মনে করিয়ে দেন, সিএএর বিরোধিতা করেছে রাষ্ট্রসংঘও।  

[আরও পড়ুন: রাজ্যপালের মুখেও ‘মোদিজি কি গ্যারান্টি’! ‘বিজেপির লোক’ খোঁচা তৃণমূলের

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ