সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাইরে থেকে দেখলে বোঝাই যায় এটি একটি গাড়ি। কিন্তু জানলা দিয়ে মুখ বাড়ালেই ভাবনা বদলে যাবে। কারণ, তাহলেই দেখতে পাবেন গাড়ির ভিতর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রচুর বই এবং নানা অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্র। যা দেখলে প্রাথমিকভাবে একটি বাড়ির বসার ঘর মনে হতেই পারে। নিশ্চয়ই ভাবছেন এ আবার কী? গাড়ি না বাড়ি, তা নিয়ে এত ধোঁয়াশা কীসের? আপনার অবাক লাগলেও শুধুমাত্র পরিজনদের সংক্রমণের আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে গাড়িতেই
অস্থায়ী আশ্রয়স্থল বানিয়ে ফেলেছেন করোনা রোগীদের চিকিৎসক।
ছোট থেকেই ভোপালের শচীন নায়েকের স্বপ্ন ছিল সাধারণ মানুষের সেবা করবেন। একটু বড় হওয়ার পর তাই ঠিক করেন ডাক্তারি পড়বেন। সেই অনুযায়ী পড়াশোনাও শুরু করেন। ইচ্ছাশক্তির সঙ্গে মেধার মিশেলে আজ তিনি ভোপালের জেএন হাসপাতালের একজন প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক। করোনাকে রুখতে সকলেই যখন ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন, তখন একেবারে প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ে চলেছেন। করোনা আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ করে তোলার জন্য নাওয়া খাওয়া ভুলে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে সংক্রমণের আশঙ্কাও রয়েছে যথেষ্টই। এদিকে, বাড়িতে স্ত্রী এবং ছোট্ট সন্তান রয়েছে শচীনের। তাঁর সংস্পর্শে আসলে যেকোনও মুহূর্তে তাঁদেরও শরীরে মারণ ভাইরাস বাসা বাঁধার সম্ভাবনা বেড়ে যায় বেশ খানিকটা। তাই সেই আশঙ্কায় হাসপাতালের কাজ শেষের পর বাড়িতে যাওয়াও ছেড়ে দিয়েছেন ওই চিকিৎসক। পরিবর্তে হাসপাতালে সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা ব্যক্তিগত গাড়িকেই দিনকয়েকের জন্য বাড়ি বানিয়ে ফেলেছেন তিনি। গাড়িতে রয়েছে বইপত্র এবং তাঁর প্রয়োজনীয় সামগ্রী। চিকিৎসার পর বাকি সময় ওই বই পড়েই কাটাচ্ছেন তিনি। এই কয়েকদিন পরিজনদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগে একমাত্র ভরসা ভিডিও কল। চিকিৎসকের বক্তব্য, “করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকে নিজের সন্তান ও স্ত্রীকে দূরে রাখতে চাই তাই এই সিদ্ধান্ত।”
চিকিৎসকের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। নজরে পড়েছে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের। টুইট করে করোনা যোদ্ধাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.