সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “গুলি বোমার শব্দে আলোচনা হয় না”। দিল্লির মসনদে বসার আগেও সাফ জানিয়েছিলেন গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সন্ত্রাস ও সীমান্তে পাকিস্তানের উসকানিমূলক কার্যকলাপ যে মেনে নেওয়া হবে না তা স্পষ্ট করেছিলেন তিনি। দিল্লির মসনদে বসে মেরুদন্ডহীন বিদেশনীতি ও বস্তাপচা কৌশলগত বিচারধারায় আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে গতবছর পাকিস্তানের মাটিতে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন মোদি। এবার কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর তিনি।
[ডোপ কেলেঙ্কারিতে নাম জড়াল ভারতীয় গোলকিপার সুব্রত পালের]
এবার কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে পাকিস্তানপন্থী হুরিয়তের সঙ্গে আলোচনায় বসতে নারাজ কেন্দ্র। নিষ্ফল আলোচনার বদলে এবার কাশ্মীরে জঙ্গি ও পাথর নিক্ষেপকারীদের মেরুদন্ড ভেঙে দিতে ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ নেওয়ার আদেশ দিয়েছে কেন্দ্র। সোমবার, শান্তিবার্তা শুরু করার আবেদন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। বাজপেয়ী সরকারের মতোই আলোচনা চালানো হোক বলে আবেদন করেন মুফতি। তবে পাকপন্থী হুরিয়তের সঙ্গে কোনও ভাবেই আলোচনা চালাতে রাজি নয় কেন্দ্র বলে সূত্রের খবর। কেন্দ্র মনে করে কয়েক দশক থেকে চলে আসা নিষ্ফল আলোচনার পর শান্তিবার্তা চালিয়ে যাওয়ার মানে হয় না। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাসংস্থা ও সেনাকে আদেশ দেওয়া হয়েছে যেকোনও মূল্যে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক গুঁড়িয়ে দিতে। তাই ভূস্বর্গে শান্তি ফিরিয়ে আনতে ‘দোভাল ডকট্রাইন’ মেনে চলবে কেন্দ্র। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের তৈরি এই নীতিতে জঙ্গিদমনে সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তাঁর মতে এক নির্দিষ্ট সময়ের পর বিক্ষোভকারীরা থিতিযে যাবে। ওই নীতিতে বলা হয়েছে জঙ্গিদলগুলির উৎসে চরম আঘাত হানতে হবে। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ার উপরও লাগাম টানা হচ্ছে। পাথর নিক্ষেপকারীদের উসকানি দেওয়ার জন্য প্রায় ৩০০টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ বন্ধ করেছে প্রশাসন।
[অসাড় অঙ্গে সাড় ফেরাতে রোগিণীর সঙ্গে সঙ্গম ডাক্তারের]
কাশ্মীরে শান্তি ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রের উপর বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে, বুদ্ধিজীবী মহল থেকেও চাপ আসছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে আলোচনা চালাক সরকার এমনটাই চাইছেন তাঁরা। তবে চাপের মুখে নতি স্বীকার করবে না কেন্দ্র তা গতকাল মোদি-মুফতি সাক্ষাতের পর স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কাশ্মীরে অশান্তির মূলে রয়েছেন হুরিয়ত কনফারেন্সের অশীতিপর নেতা সৈয়দ আহমেদ শাহ গিলানি। সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে স্থানীয় মানুষের জন্য রীতিমত স্ট্রাইক ক্যালেন্ডার ইস্যু করেছেন তিনি। তাতে বলা আছে, কখন, কোথায় নিরাপত্তা বাহিনী ও ভারত সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে হবে। দেখা যাচ্ছে, নিরাপত্তা রক্ষীর কনভয় ও টহলদার দলের ওপর পাথর ছুঁড়তে বিক্ষোভকারীদের টাকা দেওয়া হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদী সরকারের ধারণা, ইসলামাবাদ এই হুরিয়ত নেতাদের ব্যবহার করছে ভারতকে বেকায়দায় ফেলার জন্য ,তাই তাদের সঙ্গে আলোচনা নিষ্প্রয়োজন।