নন্দিতা রায়: অসম, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের উত্তর পূর্ব ভাসছে। অধিকাংশ নদীর জল বিপদসীমার ওপরে। মৃত কয়েকশো, গৃহহীন কয়েক লক্ষ। বন্যার সঙ্গে পরিচিত হলেও এবারের বান অনেকের কাছে অচেনা। এই অচেনা বিপর্যয় নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতির জন্য কি চিনই দায়ী, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ অভিযোগ, ডোকলাম সমস্যার জন্যই চিন ভারতকে জল সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। যার জেরে এই ডুবু ডুবু অবস্থা।
হাইড্রোলজিক্যাল বা জল সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহের বিষয়ে ২০০৬ সালে চিন ও ভারতের মধ্যে একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়৷ সেই চুক্তি অনুযায়ী, বিশেষত ব্রহ্মপুত্রের গতিবিধি সম্পর্কে ভারতকে তথ্য দেওয়ার কথা চিনের৷ নদী ও জলাধারগুলির পরিস্থিতি থেকে শুরু করে বৃষ্টির পূর্বাভাস সম্পর্কে সমস্ত তথ্য ভারতকে জানানো চিনের দায়িত্ব৷ প্রতিবছর ১৫ মে থেকে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে এই তথ্য দিতে হয়। কিন্তু চলতি বছরে এমন কোনও তথ্য বেজিং নয়াদিল্লিকে জানায়নি৷ জল সম্পর্কিত তথ্য দেওয়ার মধ্যেই সিকিম সীমান্তের ডোকলামে দুই দেশের সেনা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে৷ যা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমবর্ধমান।
মউ থাকলেও চিন জল সম্পর্কিত তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও গরজ দেখায়নি বলে জানান বিদেশমন্ত্রকের নয়া মুখপাত্র রবীশ কুমার৷ কুমারের বক্তব্য, “চিন যে জল সম্পর্কিত তথ্য দেয়নি তার সঙ্গে ডোকলাম পরিস্থিতিকে যুক্ত করা ঠিক নয়৷ এর পিছনে প্রযুক্তিগত কারণও থাকতে পারে৷” তবে গত বছর পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র-সহ জল সংক্রান্ত তথ্য চিন দিব্যি দিয়েছিল। এবছর কেন তার ব্যতিক্রম হল তা নিয়ে কূটনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন উঠেছে। অসম, বিহার, বাংলা-সহ দেশের নানা জায়গায় যে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তার পিছনে ব্রহ্মপুত্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য না পাওয়ার কারণ থাকতে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ তাদের ধারণা জল সম্পর্কে ভারতকে অন্ধকারে রেখে পরোক্ষভাবে প্রতিবেশীকে বিপদে ফেলতে চাইছে চিন। এর আগে ব্রহ্মপুত্রর ওপর গোপনে বাঁধ দেওয়া নিয়ে নয়াদিল্লির প্রশ্নের মুখে পড়েছিল বেজিং।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.