সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাওড়ায় (Howrah) তিন কংগ্রেস বিধায়কের গাড়ি থেকে লক্ষাধিক টাকা উদ্ধারের ঘটনায় বিতর্ক চরমে। কোথা থেকে এল এই টাকা, এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। তৃণমূল এবং কংগ্রেসের অভিযোগ, মহারাষ্ট্রর পর ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) কংগ্রেস সরকার ফেলতে ঘোড়া কেনাবেচা করতে চাইছে বিজেপি। সেই টাকাই মিলেছে বিধায়কদের (Congress MLA) গাড়িতে। যদিও তিন বিধায়কের পরিবার এবং আইনজীবীর দাবি, বড়বাজার থেকে আদিবাসী উৎসবের শাড়ি কিনতে এসেছিলেন ওই তিনজন। প্রতিবছরই বিপুল সংখ্যক শাড়ি কেনা হয়। উদ্ধার হওয়া নগদ আদপে সেই শাড়ি কেনারই টাকা। যদিও পুলিশের তরফে এবিষয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।
শনিবার রাতে পাঁচলার রানিহাটি মোড়ে একটি কালো গাড়ি থেকে প্রচুর নগদ উদ্ধার করে পুলিশ। গাড়িতে ছিলেন ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ক। রাতভর পাঁচলা থানায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চলে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে থানায় সিআইডি এবং আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরাও পৌঁছে গিয়েছেন। তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছেন। মোট ৪৯ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে সূত্রের দাবি। এদিকে রবিবার সকাল চারটে নাগাদ পাঁচলায় আসেন তিন বিধায়কের পরিবারের সদস্যরা। সঙ্গে রয়েছেন তাঁদের আইনজীবীও। কিন্তু পরিবার এবং আইনজীবীদের অভিযোগ, বিধায়কদের সঙ্গে তাঁদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি। ইতিমধ্যে এই টাকা উদ্ধার ঘিরে বেড়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও।
শনিবার রাতেই টাকার উৎস সন্ধান নিয়ে ইডিকে খোঁচা দিয়েছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের অভিযোগ, “ঝাড়খণ্ডের সরকার ফেলার জন্য টাকার খেলায় মেতেছে বিজেপি। কংগ্রেস ভাঙার জন্যই যে বিজেপি টাকা দিচ্ছিল তা স্পষ্ট। এখন ইডি কোথায় গেল?” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও টাকার উৎস নিয়ে বিজেপির দিকেই আঙুল তুলেছেন। তাঁর দাবি, “ঝাড়খণ্ডের সরকার ভাঙার জন্য বিজেপি টাকা দিয়েছিল। কোথায়, কীভাবে এই টাকা দেওয়া হয়েছে তা পুলিশ তদন্ত করুক। সত্যিটা বেরিয়ে আসবে।”
কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের ভাবনাচিন্তাও একইরকম। কংগ্রেসের প্রচার বিভাগের প্রধান তথা বর্ষীয়ান নেতা জয়রাম রমেশ টুইটারে লেখেন, “ঝাড়খণ্ডেও অপারেশন লোটাসের চেষ্টা করেছিল বিজেপি। তাঁদের সেই পরিকল্পনা হাওড়ায় ফাঁস হয়ে গিয়েছে। দিল্লির ‘হাম দো’ সরকার মহারাষ্ট্রে একনাথ-দেবেন্দ্রকে নিয়ে যা করেছে, ঝাড়খণ্ডেও তাই করতে চেয়েছিল।” একই সুর ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস প্রধান রাজেশ ঠাকুরের গলাতেও। তিনি জানিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে রিপোর্ট দেওয়া হবে।
এদিকে এই অভিযোগ মানতে নারাজ তিন বিধায়কের পরিবার। সংবাদমাধ্যমকে তারা জানিয়েছে, নগদের প্রয়োজনীয় নথি তাঁদের কাছে আছে। প্রতিবারই আদিবাসী উৎসব, দুর্গাপুজো উপলক্ষে নিজেদের বিধানসভা অঞ্চলে শাড়ি বিতরণ করেন বিধায়করা। সেই শাড়ি কেনা হয় কলকাতার বড়বাজার থেকে। এবার সেই শাড়ি কিনতেই এসেছিলেন বিধায়করা। পরিবার যতই দাবি করুক না কেন, খটকা থেকেই যাচ্ছে। নগদ ভরতি গাড়িটি তো কলকাতা থেকে জামতাড়া ফিরছিল। শাড়ি কিনতে টাকা আনা হলে, কেন গাড়িতে একটিও শাড়ি মিলল না? প্রশ্ন অনেক, কিন্তু উত্তর এখনও অধরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.