সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাথুরাম গডসে ছাড়া কি আর কোনও ব্যক্তি জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল? গান্ধীকে হত্যার ঘটনায় কি কোনও বিদেশি রাষ্ট্রের হাত ছিল? সিআইএ-সহ দু’টি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা কি গান্ধীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল? এ সব প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল সুপ্রিম কোর্টে। ৬ অক্টোবর এই মামলার শুনানি হবে।
অভিনব ভারত নামে মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি সংস্থার সদস্য পঙ্কজ ফড়নবিস মামলাটি দায়ের করেছেন। পঙ্কজের দাবি, নতুন করে গান্ধী হত্যার তদন্ত হোক। গান্ধী হত্যার মতো সবচেয়ে বড় কোনও ঐতিহাসিক ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে কি না যথাযথভাবে তার তদন্ত করা হোক। চলতি বছরের মে মাসে আমেরিকা গিয়েছিলেন পঙ্কজ। এই সফরে পঙ্কজ আমেরিকার ন্যাশনাল আর্কাইভস অ্যান্ড রিসার্চ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে গিয়েছিলেন। সে সময়ই তিনি গান্ধী হত্যার দিন দিল্লির মার্কিন দূতাবাস থেকে ওয়াশিংটনে পাঠানো একাধিক টেলিগ্রাম বার্তার মধ্যে একটি চাক্ষুষ করেন।
[উৎসবের মরশুমে ফের দাম বাড়ল রান্নার গ্যাসের]
ফড়নবিসের বক্তব্য, ১৯৪৮-এর ৩০ জানুয়ারি গান্ধী হত্যার পরেই দিল্লির মার্কিন দূতাবাস থেকে ওয়াশিংটনে বেশ কয়েকটি টেলিগ্রাম যায়। ওই সব টেলিগ্রামগুলির উপর ভিত্তি করে এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি হয়। আমেরিকার ন্যাশনাল আর্কাইভস অ্যান্ড রিসার্চ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে গিয়ে পঙ্কজ নিজে সেই সন্ধ্যায় পাঠানো একটি টেলিগ্রাম পড়ে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। ওই টেলিগ্রামে বলা হয়েছে, গান্ধীর উপর যখন গুলি চালানো হয় সে সময় হার্বার্ট টম রিনার নামে এক মার্কিন অফিসার খুব কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। গান্ধীর সঙ্গে তাঁর ব্যবধান ছিল বড় জোর ৫ ফুট। ভারতীয় নিরাপত্তারক্ষীদের সাহায্যে হার্বার্ট ধরে ফেলেন হত্যাকারীকে।
সেই অভিশপ্ত সন্ধ্যাতেই গান্ধী হত্যার ব্যাপারে একটি রিপোর্ট ফাইল করেন হার্বার্ট টম। কিন্তু জাতির জনকের হত্যার পর ৭০ বছর কেটে গেলেও আজও সেই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। ১৯৪৮-এর ৩০ জানুয়ারি অর্থাৎ গান্ধী হত্যার দিন সন্ধ্যায় দিল্লির মার্কিন দূতাবাস থেকে ওয়াশিংটনে যে সব টেলিগ্রাম করা হয়েছিল তার একটিরও বক্তব্য জানা যায়নি। এ ঘটনার প্রেক্ষিতেই ফড়নবিসের প্রশ্ন, গান্ধী হত্যার সঙ্গে শুধু কি গডসেই জড়িত ছিল? না কি এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে আরও কেউ জড়িত ছিল? গান্ধী হত্যার ঘটনায় কি কোনও বিদেশি শক্তির হাত ছিল? আমেরিকার তথ্য জানার স্বাধীনতা আইনে ওই ফাইলের তথ্য প্রকাশের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন পঙ্কজ। সোমবার গান্ধীর জন্মদিন। গান্ধীর জন্মদিনেই গোপন টেলিগ্রামের বক্তব্য জানতে চেয়ে পঙ্কজ হোয়াইট হাউসে একটি অনলাইন পিটিশন দাখিল করবেন বলে জানিয়েছেন।