Advertisement
Advertisement

Breaking News

জ্বালানি

জ্বালানিতে বাড়তি সেস কি মূল্যবৃদ্ধির কারণ হবে? কী বলছেন অর্থনীতিবিদরা

জ্বালানিতে সেস বসিয়ে সড়ক ও পরিকাঠামো উন্নয়নে ২৮ হাজার কোটি টাকা তুলতে চাইছে কেন্দ্র।

General Budget 2019: Will cess of petrol-diesel fuel inflation?

জ্বালানিতে সেস বসিয়ে সড়ক ও পরিকাঠামো উন্নয়নে ২৮ হাজার কোটি টাকা তুলতে চাইছে কেন্দ্র।

Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:July 6, 2019 11:05 am
  • Updated:July 6, 2019 11:06 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তরল সোনা আর সোনা এই দুই ক্ষেত্রে নির্মলা সীতারমণের উন্নয়নমুখী বাজেট সামান্য হলেও টাল খেল। জ্বালানি আর দামি ধাতুর উপর অতিরিক্ত কর চাপিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির অসন্তোষের কারণ হলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। যদিও অর্থনীতিবিদদের একাংশ মনে করছে তাঁর এই পদক্ষেপ তেমন ভুল কিছু নেই।

[আরও পড়ুন: বাজেট ২০১৯: মধ্যবিত্তদের স্বস্তি দিয়ে উচ্চবিত্তদের উপর কর বাড়াল সরকার]

Advertisement

পেট্রোল ও ডিজেলের উপর অতিরিক্ত সেস বসিয়ে দেশের সড়ক ও পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে ২৮ হাজার কোটি টাকা তুলতে চেয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। এবারের বাজেটে সড়ক পথে উন্নয়নের জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থও বরাদ্দ করেছেন তিনি। তবে তাঁর এই ভালে চাওয়া পদক্ষেপের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় দেশবাসীকে মুদ্রাস্ফীতির মুখে পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুদ্রাস্ফীতি দেশের মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত এবং দরিদ্রদের শুধু যে আর্থিকভাবে বিপন্ন করে তুলবে, তা নয়, দেশের গড় জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ভারত যেখানে ২০২৫ সালের ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে, সেখানে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে এই বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া একেবারেই কাম্য নয়। এদিকে পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়লে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে এই বৃদ্ধিতেই। সুতরাং ২০২৫ সালে ভারতকে পাঁচ ট্রিলিয়নের অর্থনীতি হতে হলে যেখানে কম করে ৮-৮.৫ শতাংশ বৃদ্ধির হার রাখতে হবে সেখানে মুদ্রাস্ফীতি সেই হার বজায় রাখতে বাধা দিতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।

Advertisement

যদিও আরেকটি মহলের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম যেহেতু কমছে। তাই এই সেস চাপালেও আদতে পেট্রল-ডিজেলের দাম সেভাবে বাড়বে না। আমজনতার উপর বড় ধরনের প্রভাবও পড়বে না। সেক্ষেত্রে যদি কখনও আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ে তখন এই সেস প্রত্যাহারও করে নিতে পারে সরকার। তাঁদের যুক্তি, এমনটা আগেও বেশ কয়েকবার হয়েছে।

শুক্রবারের বাজেট বক্তৃতায় নির্মলা সীতারমণ জ্বালানির উপর করের বোঝা বাড়িয়েছেন। পেট্রল ডিজেলে লিটার প্রতি দু’টাকা করে সড়ক ও পরিকাঠামো সেস বসিয়েছেন তিনি। এছাড়া অপরিশোধিত তেলের উপরেও চাপানো হয়েছে আমদানি শুল্ক। প্রতি টনে এক টাকা করে। এর ফলে সড়ক ও পরিকাঠামো সেস হিসাবে ২৮ হাজার কোটি টাকা এবং অপরিশোধিত তেলে আমদানি শুল্ক হিসাবে অতিরিক্ত ২২ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে আসার কথা। অন্যদিকে পেট্রোল ও ডিজেলের লিটার প্রতি দাম বাড়বে যথাক্রমে ২.৫ টাকা এবং ২.৩ টাকা করে। আর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের পরই ভারতের তেল সংস্থাগুলির শেয়ারের দাম পড়েছে। হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন, ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন এবং ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের শেয়ারের দাম যথাক্রমে, ০.৭১ শতাংশ, ২.৮০ শতাংশ এবং ২.৮৬ শতাংশ কমেছে।

জ্বালানি ছাড়াও ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের নতুন বাজেটে দাম বাড়বে সোনা, রুপো এবং অন্যান্য বহুমূল্য ধাতুর। এইসব বহুমূল্য ধাতুর আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২.৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আর সেই প্রস্তাবেরই সার্বিক বিরোধিতা করেছে স্বর্ণকার ও স্বর্ণব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলি। তারা সরকারকে অনুরোধ করেছে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিতে। অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিল জানিয়েছে, “বিষয়টি খুবই হতাশাব্যাঞ্জক এবং দুর্ভাগ্যজনক। জিএসটির সঙ্গে যদি সোনার উপর বর্ধিত অন্তঃশুল্কও জুড়ে যায় তবে সোনার আরও বহুমূল্য হবে। এতে সোনা পাচারকারীরা উৎসাহিত হবে। তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি বাড়বে। আর আইন মেনে যাঁরা ব্যবসা করেন তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সরকার যে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন, এই সিদ্ধান্ত মোটেই তাকে উৎসাহিত করে না।” একই মত ইন্ডিয়ান গোল্ড পলিসি সেন্টার আইআইএম-এর চেয়ার পার্সন অরবিন্দ সহায়েরও। সোনা দুর্মূল্য হলে যে সোনা পাচারকারীরা উৎসাহিত হবে, সে ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনিও। তিনি বলেছেন, এর প্রভাব সার্বিকভাবে পড়বে ভারতের গয়না শিল্পের উপর।

[আরও পড়ুন: ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও পাবেন পেনশন, বাজেটে ঘোষণা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ