Advertisement
Advertisement

Breaking News

Biman Basu

‘মাকে বলে বাড়ি ছেড়েছিলাম’, রাজনীতি থেকে বিদায়বেলায় স্মৃতিকাতর বিমান বসু

সাড়ে তিন দশক পর সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সরলেন তিনি।

'I left home after telling my mother', Biman Bose recollected on the way to leave party | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 10, 2022 5:11 pm
  • Updated:April 10, 2022 8:14 pm

বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, কান্নুর: জীবনে রাজনীতি ছাড়া আর কিছুই নেই। নিশ্বাস এবং প্রশ্বাসে শুধুই শ্রেণি সংগ্রাম, শোষিতের জন্য লড়াই। শয়নে, স্বপনে এবং জাগরণে শুধুই সাম্যবাদের গান। সকালের কৈশোর থেকে সন্ধের অবসর, পুরোটাই রাজনীতিতে নিবেদিত। যাঁর সঙ্গে এই সব কথা মিলে যায়, তিনি বিমান বসু (Biman Basu)। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান। বঙ্গ সিপিএমের প্রাক্তন সম্পাদক। সিপিএম (CPM) পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্যপ্রাক্তন সদস্য। রবিবার কেরলের (Kerala) কান্নুরে সিপিএম পার্টি কংগ্রেসের শেষদিনেই তাঁর রাজনৈতিক জীবন কার্যত সমাপ্তির পথে এগিয়ে গেল কয়েকধাপ। পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যপদ ছাড়তে হল বয়সের কারণে। তবে কেন্দ্রীয় কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে থাকবেন তিনি।

Advertisement

সেই কবে ১৯৮৫ সালে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যপদ পেয়েছিলেন বিমান বসু। তখন তাঁর বয়স ছিল ৪৬ এর আশপাশে। পলিটব্যুরোর সদস্য হন ১৯৯৮ সালে। এখন তিনি তিরাশি। বয়সের কারণেই ছাড়তে হল আলিমুদ্দিনের একমাত্র বাসিন্দাকে। রবিবার ২৩ তম পার্টি কংগ্রেসের নয়া সিদ্ধান্তের পর এই মুহূর্তে বিমান বসুর পদ বলতে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান এবং সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য। এই বিদায়বেলায় বারবার তিনি ফিরে যাচ্ছিলেন অতীতে, রাজনৈতিক জীবনের শুরুর দিনগুলিতে। কান্নুরের ই কে নয়নার নগরে লালে মোড়া চত্বরে দাঁড়িয়ে বারবার বলছিলেন মায়ের কথা। মা কী বলতেন, কীভাবে সংস্কার ছড়িয়ে গিয়েছিল পরিবারে, সেসব শোনা গেল। বললেন, ”শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত পার্টি করব। পার্টি ছাড়া আর কিছু নেই।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: কর্মসংস্থানে এগিয়ে বাংলা! ১০০ দিনের কাজে দেশের মধ্যে প্রথম পশ্চিমবঙ্গ]

মাস কয়েক আগে ‘সংবাদ প্রতিদিন’কে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময়ও তাঁর কথায় উঠে এসেছিল মায়ের প্রসঙ্গ। বলেছিলেন, ”মাকে আমি খুব ভালবাসতাম। তার জন্যই কমিউনিস্ট পার্টিতে আসা। সেই মাকেই আমি নাকি জন্মের সময় খুব কষ্ট দিয়েছিলাম। পরিবারের বড়দের মুখে শুনেছি। আমি যখন গর্ভে, পূর্ববঙ্গ থেকে মাকে নিয়ে বাবা স্টিমারে গোয়ালন্দ হয়ে ট্রেনে কলকাতা এসেছিলেন। শুনেছি, স্টিমারযাত্রায় মায়ের রক্তক্ষরণ হয়। ট্রেনে উঠে রক্ত বন্ধ হয়। কলকাতায় এসে তখনকার ক্যাম্পবেল হাসপাতালের নামী ডাক্তার নীলরতন সরকারের কাছে বাবা লিখে পাঠিয়েছিলেন মাকে পরীক্ষা করাতে। প্রসবের সময় আর পাঁচটা শিশুর মতো আমার মাথা আগে বেরেয়নি, বেরিয়েছিল পা। আর কষ্ট পেয়েছিলাম সেই মাকেই যখন ছেড়ে পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী হলাম। বাড়ি ছাড়লাম।”

[আরও পড়ুন: বগটুই কাণ্ডে জারি ধরপাকড়, দীর্ঘক্ষণ জেরার পর আরও একজনকে গ্রেপ্তার করল CBI]

বাড়ি ছাড়ার পরে প্রথমে বেনিয়াপুকুরের কৃষকসভার অফিসে উঠেছিলেন। পরে প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে পাকাপাকি থাকতে শুরু করেন। এখন সেটাই তাঁর ঘরবাড়ি, কর্মী, কমরেডরা পরমাত্মীয়। কান্নুরে দাঁড়িয়ে বললেন, ”এতদিন আমিই পার্টির সব জানতাম। কাউকে কিছু জানাতে হত না। এখন পার্টি আমাকে যা বলবে, সেটাই করব। পার্টিই করব শেষ নিশ্বাস ত্যাগ পর্যন্ত। কারণ, আমার তো পার্টি ছাড়া আর কিছু নেই।” পার্টি কংগ্রেসের শেষদিন লালে সেজে ওঠা কান্নুরের রং ফিকে। আর অস্তগামী সূর্যের মতোই ম্লান দেখাল তিরাশির ‘তরুণ’ বিমান বসুকে। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ