সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পদে আসিন হওয়ার পর থেকেই বেআইনি মাংস বিক্রেতারদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বেআইনি কসাইখানাগুলি। যোগীর দেখানো পথে হেঁটেছে উত্তরাখণ্ড, ছত্তিশগড়-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য। ফলে মাথায় হাত মাংস বিক্রেতাদের। মাংসের অভাবে বিভিন্ন রাজ্যে এক ঝটকায় বেড়ে গিয়েছে মাছের দাম। এবার তার প্রভাব খাদ্যের বাইরেও পড়তে চলেছে। শোনা যাচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে দাম বাড়বে চামড়ার তৈরি পণ্য সামগ্রীর।
কোলাপুরি জুতো থেকে ক্রিকেট বল, ব্যাগ থেকে বেল্ট, চামড়ার তৈরি জিনিসপত্রের দাম এক লাফে অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে। তবে শুধু উত্তরপ্রদেশই নয়, এর প্রভাব পড়তে পারে দেশ জুড়ে। গাড়িতে ব্যবহৃত বিভিন্ন চামড়ার বস্তু থেকে মহিলাদের পার্স, সবকিছুই তৈরি হয় মোষের চামড়া থেকে। কিন্তু গো-হত্যা ও গো-মাংস বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় এবার সমস্যায় পড়েছে চর্মশিল্পের কারখানাগুলি। ক্রিকেট বল, ভলি বল, সাবান তৈরির কারখানার কর্মচারীরাও কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছেন। গোটা দেশে ১৬৮টি শিল্প কারখানার সঙ্গে যুক্ত গো-মাংস ব্যবসা। কিন্তু প্রশাসনের কড়া নিয়মের বেড়াজালে পড়ে তালা লেগেছে গো-মাংসের ব্যবসায়। ফলে সরাসরি ক্ষতির মুখে সংশ্লিষ্ট বাকি শিল্পগুলিও।গোটা দেশে যা চর্মজাত দ্রব্য পাওয়া যায়, তার অর্ধেই তৈরি হয় উত্তরপ্রদেশে। যার ফলে মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাবের মতো রাজ্যগুলিতেও মার খাচ্ছে চামড়া কারখানাগুলি।
২০১৫ সালে মহারাষ্ট্রে কোলাপুরি জুতোর কারখানার কর্মী ছিল কমপক্ষে ৬০০ জন। তবে সেই রাজ্যেও বেআইনি কসাইখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আপাতত সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০০ জনে। এবার আরও কর্মী ছাঁটাই হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ২০১৪ সালে যে শিল্প থেকে ১৮০০ কোটি টাকা লাভের মুখ দেখা যেত, সেখান থেকে এখন ৮০০ কোটি টাকাও আসছে না। একই ছবি এ রাজ্যেরও। চামড়া কারখানার এক মালিক জানাচ্ছেন, তাঁর ৩৪ জন কর্মী প্রতি সপ্তাহে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা ও খাওয়া-দাওয়া পেতেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁরা আর বেতন পাচ্ছেন না। হাতে তেমন আর কাজও নেই। এখন দেখার, এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.