সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এতদিনের বিজ্ঞান মিথ্যে। বিজ্ঞানীদের অর্জনও বৃথা। কেননা খোদ ডারউইনের তত্ত্বকেই এক লহমায় খারিজ করে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যপাল সিং। তা নিয়ে বিস্তর হাসাহাসি ও সমালোচনা। সেই চাপের মুখে পড়েই সাফাই দিলেন মন্ত্রী। জানালেন, তিনি নিজেও বিজ্ঞানের লোক।
[ আধাসেনাদের সাহায্যে কল্পতরু বি-টাউনের ‘খিলাড়ি’ বয় ]
দেশের শিক্ষামন্ত্রকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে রয়েছেন সত্যপাল সিং। তাঁর মুখে এহেন কথা শুনে রীতিমতো হতভম্ব দেশবাসী। খোদ ডারউইন সাহেবের তত্ত্ব যে এভাবে কেউ বাতিল করে দিতে পারেন, তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। কিন্তু মন্ত্রীর দাবি, কেউ কখনও বাঁদর থেকে মানুষের বিবর্তন দেখেনি। মানুষ গোড়া থেকেই মানুষই ছিল। ফলত ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্বের কোনও যৌক্তিকতা নেই। তাঁর এই মন্তব্য সামনে আসার পরই হইচই পড়ে। খোদ মন্ত্রীর এ ধরেনর মন্তব্য ভুল বার্তা ছড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে। সিলেবাস থেকেও এই তত্ত্ব বাদ দেওয়ার পরামর্শ ছিল মন্ত্রীর। ফলে আরও বিভ্রান্তি ছড়ায়। এরপরই সমালোচনায় সরব হয়ে ওঠেন বিজ্ঞানীরা। প্রবীণ বিজ্ঞানী রাঘবেন্দ্র গডকড় জানান, বিজ্ঞানকে এভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করা দেশের জন্য ভাল বিজ্ঞাপন নয়। বায়োকন প্রধান কিরণ মজুমদার বলেন, এ ধরনের মন্তব্য বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীদের প্রতিই অপমান।
[ বিয়ের পরেও মহিলাদের জাতিগত পরিচয় বদলায় না, রায় সুপ্রিম কোর্টের ]
তীব্র সমালোচনার মুখে এদিন মন্ত্রী জানান, ভিত্তিহীন কোনও কথা তিনি বলেননি। তিনি নিজেও বিজ্ঞানেরই লোক। রসায়নে ডক্টরেট পর্যন্ত করেছেন। ডারউইনের তত্ত্ব সারা পৃথিবীতেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে বলে দাবি মন্ত্রীর। ঠিক সে কারণেই ডারউইনের তত্ত্ব ভুল বলে দাবি করেছেন তিনি। বিজ্ঞানের অবমাননা হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে যে সমালোচনা চলছে তা আজ ধামাচাপা দিতে উদ্যোগী মন্ত্রী। বরং নিজেকে বিজ্ঞানের লোক বলে সাফাই দিয়েই নিজের অবস্থানে অনড় থাকলেন।
[ বিবর্তনবাদ তত্ত্ব ভুল! আজব দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যপাল সিংয়ের ]
যদিও তাঁর এই মন্তব্য জুড়ে গোটা দেশে সমালোচনা আজও থামছে না। বিজেপি জমানায় একাধিক তত্ত্ব নেতারা সামনে এনেছেন, যা সরাসরি বিজ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ করে। কিন্তু তার কোনও যুক্তিসম্মত ভিত্তি তাঁরা দেখাতে পারেননি। যেমন, গোমূত্রে ক্যানসার সারার দাবি। কিংবা গণেশ মূর্তি হচ্ছে প্লাস্টিক সার্জারির উদাহরণ। কিন্তু বিজ্ঞানের প্রচারকরা কোনওভাবেই এর কোনও ভিত্তি খুঁজে পাননি। মানুষের দেহে হাতির মুণ্ড যে কীভাবে জোড়া সম্ভব হতে পারে, তা সাধারণ বিচারবুদ্ধিতেই বোধগম্য হয় না। অথচ নেতাদের দাবি তেমনটাই। বিজ্ঞানীদের পালটা প্রশ্ন, নেতারা বা তাঁদের আত্মীয়রা কি ক্যানসারে আক্রান্ত হলে গোমূত্রেই ভরসা রাখবেন? এ অবশ্য কোনও উত্তর নেই। একদিকে দেশে কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস ঘোচাতে বিজ্ঞানকর্মীরা নিরলস পরিশ্রম করছেন। অন্যদিকে এই ধরনের মন্তব্য ক্রমাগত বিভ্রান্তি বাড়িয়ে চলেছে। খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাই যখন ডারউইনের তত্ত্ব খারিজ করে দেন, তখন সে ধন্দ বাড়ে বই কমে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.