সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত ও চিনের সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার নয়াদিল্লিতে জরুরি বৈঠকে বসছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও চিনের স্টেট কাউন্সিলার ইয়াং জিয়েচি। ডোকলাম নিয়ে ৭৩ দিনের অচলাবস্থার পর কেটে গিয়েছে প্রায় চার মাস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও দোভালের দৌত্যে পরিস্থিতি এখন অবশ্য খানিকটা শুধরেছে। নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্কের উষ্ণতা বাড়াতে খানিকটা উদ্যোগী হয়েছে বেজিংও। এই পরিস্থিতিতে আজকের বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
[ডোকলামে আরও সেনা পাঠাল ভারত, তবে কি যুদ্ধ আসন্ন?]
দুই দেশের বিশেষ প্রতিনিধিদের নিয়ে এই বৈঠক ২০০৩ থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। পোশাকি ভাষায় একে বলে ‘স্পেশ্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভস মেকানিজম’। ভারত ও চিনের মধ্যে প্রায় ৪০০০ কিলোমিটার বিস্তৃত সীমান্তবর্তী অঞ্চলে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু মাত্র কয়েক মাস আগেও দুই দেশের মধ্যে নির্ধারিত সমস্ত বৈঠক স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন নয়াদিল্লি ও বেজিংয়ের মধ্যে বরফ গলতেই ফের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরিকল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। এদিনের বৈঠকে বিতর্কিত ডোকলাম ইস্যু নিয়েও আলোচনা হবে। দোভাল ও জিয়েচি শেষবার সেপ্টেম্বর মাসে ব্রিকস সম্মেলনে মিলিত হয়েছিলেন। এদিনের বৈঠকের পরিকল্পনা করেন খোদ বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। গত সপ্তাহে ভারত, রাশিয়া ও চিনের যৌথ সম্মেলনে আজকের বৈঠকের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়।
[ডোকলাম থেকে বাসিন্দাদের সরাচ্ছে ভারতীয় সেনা, তবে কি যুদ্ধ আসন্ন?]
চার মাস আগেও কিন্তু পরিস্থিতিটা এরকম ছিল না। বিতর্কিত ডোকলামে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ছিল ভারত ও চিনের কয়েক হাজার সেনা। ‘নন-কমব্যাট মোড’-এ থাকলেও ছোটখাটো সংঘর্ষের খবর আসছিল মাঝেমধ্যেই। সীমান্ত থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে নাথাং থেকে শতাধিক গ্রামবাসীকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ‘নো ওয়ার নো পিস’ পজিশনে দাঁড়িয়ে থাকে দুই দেশের সেনা। সামরিক পরিভাষায় ‘নো ওয়ার নো পিস’ মানে ‘যুদ্ধের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুত’ দুই পক্ষই। যাকে বলা হয় মিলিটারি ফেস অফ। এক্ষেত্রে কাঁধে ঝোলানো বন্দুকের নল থাকে নিচের দিকে (গান ডাউন অবস্থায়)। এই সময় মানব-প্রাচীর গড়ে শত্রুর আগ্রাসন রুখে দেওয়া হয়। যদিও এখন পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। কিন্তু চিনকে বিশ্বাস করতে নারাজ ভারত। কারণ, এর আগেও একাধিকবার মুখে শান্তির কথা বলেও তলে তলে সেনা মোতায়েন করে গিয়েছে বেজিং। এবার তাই আগেভাগেই সতর্ক নয়াদিল্লি। বৈঠকে বসলেও এখনও ডোকলাম থেকে পুরোপুরি সেনা সরাবে না ভারতও।
[ডোকলামের দখল পেতে চিনের হাতিয়ার ‘থ্রি ওয়ারফেয়ার স্ট্র্যাটেজি’]
Talks between National Security Advisor Ajit Doval and Chinese State Councillor Yang Jiechi begin in Delhi pic.twitter.com/x6ALvM9qXx
— ANI (@ANI) December 22, 2017