সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৯ (CAB)-এর বিরোধিতায় ১৯ ডিসেম্বর দেশজুড়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বামফ্রন্ট। ওইদিন সমস্ত বাম গণ সংগঠনগুলিকে সংঘবদ্ধভাবে রাস্তায় নামার নির্দেশ দিয়েছে দলীয় নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, সংসদে সদ্য পাশ হওয়া নাগরিকত্ব বিল দেশের গণতান্ত্রিক চরিত্র বদলে দিচ্ছে। ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। আর তাই এই বিল পাশের বিরোধিতায় সরব হয়েছে বাম সংগঠনগুলি। তবে তার আগে ১৬ ডিসেম্বর কলকাতায় আন্দোলনে নামছে বামেরা।
বুধবারই সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়েছে বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল। রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলেই আইনে পরিণত হবে এই বিল। বিলে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় পীড়নের কারণে এ দেশে শরণার্থী হিসেবে হিন্দু, পার্সি, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা আশ্রয় নিতে বাধ্য হলে, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। সেখানে প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা মুসলিমদের বিষয়ে কোনও উল্লেখ নেই। এই বিলকে সাম্প্রদায়িক ও সংবিধান পরিপন্থী বলেও সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
[আরও পড়ন : নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে চাকরি থেকে ইস্তফা পুলিশকর্তার]
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বামেদের তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই বিল সংবিধানের কাঠামো নষ্ট করছে। দেশের ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক পরিচয় বদলে দিতে উদ্যোত হয়েছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন সরকার। তাই বামদলগুলি সম্মিলিতভাবে এই বিলের বিরোধিতা করছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, এই বিল পাশ করে সারা দেশে এনআরসি করতে চাইছে মোদি-শাহের সরকার। আর এই পদক্ষেপ দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো ধ্বংস করে দেবে। বামেদের মতে, এনআরসি আর নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের মাধ্যমে আদপে আরএসএসের লক্ষ্য মেনে হিন্দুরাষ্ট্র তৈরি করার নামান্তর মাত্র।
[আরও পড়ন : নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ, সুপ্রিম কোর্টে মামলা ইন্ডিয়ান মুসলিম লিগের]
কিন্তু ১৯ ডিসেম্বর কেন? এ বিষয়ে বামেদের ব্যাখা, ১৯২৭ সালে এই দিনই গোরক্ষপুর জেলে স্বাধীনতা সংগ্রামী রামপ্রসাদ বিসমিল, ফৈয়জাবাদের জেলে আসফাকুল্লা খান এবং নয়নী জেলে আরেক অভিযুক্ত রোশন সিংয়ের ফাঁসি হয়েছিল। ব্রিটিশদের অত্যাচার থেকে দেশকে স্বাধীন করতে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে লড়াই করেছিল ভারতবাসী। আর এই সম্প্রীতিই যে ভারতে পরিচয় সেই বার্তা দিতেই ১৯ থেকেই আন্দোলনে নামছে বামেরা।