Advertisement
Advertisement
Lok Sabha 2024

‘হাওয়া’ কই? ভরসা চোরাস্রোত, ভোটের মুখে অঙ্ক কষছে শাসক-বিরোধী দুপক্ষই

যে রকম প্রচার হচ্ছে, সেই তুলনায় অনেক বেশি সমানে সমানে টক্কর হবে, বিশ্বাস কংগ্রেসের।

Lok Sabha 2024: Congress claims it will give a tough fight to BJP
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:April 6, 2024 5:06 pm
  • Updated:April 6, 2024 5:06 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আব কি বার-৪০০ পার। তাল ঠুকে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। বিজেপি কর্মীদের বলে দিয়েছেন, যে করেই হোক ৩৭০ আসন লাও। লাও তো বটে কিন্তু আনে কে? আর আসবেই বা কোথা থেকে? অঙ্ক কষতে কষতে মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় গেরুয়া শিবিরের। আবার কংগ্রেস বলছে, সংবাদমাধ্যম এবং সমাজমাধ্যমে যেমন প্রচার করা হচ্ছে বাস্তব ছবিটা মোটেই তেমন নয়। এবার লড়াইটা বেশ ভালোই হবে। সমানে সমানে টক্কর হবে।

বিরোধীদের এই জোরাল দাবির কারণ কী? তাঁরাও অঙ্ক কষছেন। কংগ্রেস সূত্র বলছে, মোদি যতই জনসভায় গিয়ে ৪০০ আসনের ধুয়ো তুলুন না কেন, ওই বিপুল আসন জয়ের জন্য যে ‘ঝড়ে’র প্রয়োজন, সেই ঝড়ের কোনও ইঙ্গিত অন্তত তৃণমূল স্তরে নেই। ঝড় তো দূরের কথা ২০১৪ এবং ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে যে বিপুল মোদি হাওয়া ছিল, সেই হাওয়াও গায়েব। রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) যেমন শুক্রবার কংগ্রেসের ইস্তেহার প্রকাশের অনুষ্ঠানে জোরাল দাবি করেছেন, “আমি ভবিষ্যৎদ্রষ্টা নই। তবে আমার বিশ্বাস যে রকম প্রচার হচ্ছে, সেই তুলনায় অনেক বেশি সমানে সমানে টক্কর হবে।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: পণ্ডিতের জন্য মানসিক অবসাদে ভুগতেন পাঞ্জাব ক্রিকেটার, ফের তোপের মুখে নাইট কোচ]

কোন অঙ্কে সমানে টক্কর দেওয়ার দাবি করছে কংগ্রেস? দলীয় সূত্র বলছে, ২০১৪ সালে ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা, ১০ বছরের বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগ এবং সেই সঙ্গে আচ্ছে দিনের স্বপ্ন মোদির পক্ষে হাওয়া তুলে দিয়েছিল। আবার ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলা (Pulwama Attack) দেশজুড়ে জাতীয়তাবাদের ঢেউ বইয়ে দিয়েছিল। ওই দুটি নির্বাচনই স্বাভাবিক নির্বাচনের মতো হয়নি। কিন্তু এবার তেমন কোনও হাওয়া নেই। জানুয়ারিতে রাম মন্দির উদ্বোধন করে হাওয়া তোলার চেষ্টা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু মন্দির উদ্বোধনের পরও আড়াই মাস কেটে গিয়েছে। তার পর ইলেক্টোরাল বন্ডের মতো জ্বলন্ত ইস্যু চলে এসেছে বিরোধীদের হাতে। তাছাড়া মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বের মতো ইস্যু তো আছেই। ফলে একপেশে হিন্দুত্বের যে ঝড় উঠবে বলে বিজেপি আশা করেছিল, তেমন কিছু অন্তত তৃণমূল স্তরে নেই। তাছাড়া হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলির বাইরে রাম মন্দিরের (Ram Temple) বিরাট ফ্যাক্টর হওয়ার কথা নয়। বরং, স্থানীয় স্তরে বিজেপির বহু সাংসদের বিরুদ্ধে ১০ বছরের প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া বইছে। সুতরাং লড়াইটা বিজেপির জন্য সহজ হবে না। আর সেটা বুঝতে পেরেই শেষ মুহূর্তে বিরোধী নেতা-নেত্রীদের ইডি-সিবিআই (CBI) জুজু দেখানো হচ্ছে। অপপ্রচার শুরু হয়েছে।

Advertisement

বিজেপির অঙ্ক অন্য। তারা বলছে, ২০১৪ বা ২০১৯-এর মতো মোদি ঝড় হয়তো নেই। কিন্তু হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলিতে রাম মন্দিরের প্রভাব অস্বীকার করা যায় না। শুধু হিন্দি বলয় কেন, গোটা দেশেই একটা ‘চোরাস্রোত’ রয়েছে। এমনকী দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতেও হিন্দুত্বের প্রচারে সাড়া মিলছে রাম মন্দিরের দৌলতে। এটা ঠিক যে আগের দুটো নির্বাচনের মতো এ বছর প্রকাশ্যে মোদিকে ঘিরে উন্মাদনা কম, ভোট নিয়েও মানুষের সেভাবে উৎসাহ নেই। তবে সেটার কারণ সম্ভবত ফলাফলের নিশ্চয়তা। ভোটাররা ধরেই নিচ্ছেন ‘আয়েগা তো মোদি হি।’ তাছাড়া ইন্ডিয়া জোটের হাতে মোদির বিকল্প কোনও নেতাও নেই।

[আরও পড়ুন: জাদেজার আউটের আবেদন প্রত্যাহার, ‘বিশ্বকাপে কোহলি থাকলে কী করতে’, প্রশ্ন প্রাক্তন তারকার]

কংগ্রেস (Congress) তথা ইন্ডিয়া জোট আবার স্থানীয় স্তরের অঙ্ক কষছে। চেষ্টা হচ্ছে, লড়াইটা কোনওভাবেই মোদি বানাম ইন্ডিয়া বা মোদি বনাম রাহুল না করে স্থানীয় স্তরে নামিয়ে আনার। আলাদা আলাদা লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে, সাংসদের বিরুদ্ধে যে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা রয়েছে সেগুলিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কেন্দ্র ধরে ধরে জাতিগত সমীকরণ, ধর্মীয় সমীকরণ মাথায় রেখে প্রার্থী বাছাইয়ের চেষ্টা হচ্ছে। তবে এসব শেষেও একটা আশঙ্কা রয়ে গিয়েছে। ভোট আসতে আরও প্রায় দুসপ্তাহ বাকি। আর এই দু’সপ্তাহে এমন কোনও ঘটনা মোদি ঘটিয়ে ফেলতেই পারেন, যাতে তীব্র মেরুকরণ বা জাতীয়তাবাদের তাস খেলা যায়। সেই চেষ্টাও হচ্ছে। ভোটের দু’সপ্তাহ আগে রাজনাথ সিং হঠাত বলে দিচ্ছেন, সন্ত্রাস দমন করতে হলে প্রয়োজনে পাকিস্তানে ‘ঘুস কে মারেঙ্গা।’ আবার প্রধানমন্ত্রী নিজেও কংগ্রেসের ইস্তেহারকে ‘মুসলিম লিগে’র ইস্তেহারের সঙ্গে তুলনা করে গিয়েছেন।  আশঙ্কার এখানেই শেষ নয়, বিরোধী শিবিরের কোনও নেতাও বেফাঁস কিছু বলে ফেলতে পারেন, যাতে মোদির সুবিধা হয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ