সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অব্যাহত মধ্যপ্রদেশে মহানাটক। করোনা আতঙ্ককে হাতিয়ার করে ২৬ মার্চ পর্যন্ত সময় পেয়ে গেল কমল নাথ সরকার। ওইদিন পর্যন্ত মুলতুবি মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার অধিবেশন। আর এর জেরে ‘অধরাই’ রয়ে গেল আস্থা ভোট। বিজেপিকে হতাশ করে আপাতত নিজের লক্ষ্যপূরণে সফল হলেন কমল নাথ।
পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, আজ সকাল ১১টা থেকে শুরু হয় মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার অধিবেশন। তবে আস্থা ভোট হবে? না পিছিয়ে যাবে? এই দোলাচলের মধ্যেই রাজ্যপাল লালজি ট্যান্ডন ও মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের মধ্যে চলতে থাকে চোরা সংঘাত। গতকাল আস্থা ভোট চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথকে চিঠি লেখেন রাজ্যপাল। তবে বিধানসভা শুরুর প্রথম দিনের কার্যসূচিতে আস্থা ভোটের উল্লেখমাত্র ছিল না। আর আজ অধিবেশন শুরুর আগেই আস্থা ভোট পিছোতে সকালে রাজ্যপালের কাছে চিঠি লিখে কমল নাথ নিজের বক্তব্য পেশ করেন, “স্পিকারের কাজে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। “
[আরও পড়ুন:‘রাজ্যপালদের কোনও কাজ নেই’, গোয়ার দায়িত্ব নিয়েই বিতর্কিত মন্তব্য সত্যপাল মালিকের]
নির্দিষ্ট সময়ে বিধায়করা বিধানসভায় হাজির হলে আস্থা ভোট পিছিয়ে দিতে স্পিকার এন প্রজাপতির কাছে আবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, “এখনও কয়েকজন বিধায়ক আটক হয়ে রয়েছেন। তাই যতক্ষণ না তাঁরা পুরোপুরি মুক্তি পাচ্ছেন, ততক্ষণ এই আস্থা ভোট পিছিয়ে যাক।” মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে সরব হয়ে ওঠে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা। এমনকি স্পিকার এন প্রজাপতিকেও রাজ্যপাল আস্থা ভোটের জন্য প্রস্তাব দিলে, স্পিকার তা নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন।
তবে কমল নাথের এই চালে গেরুয়া শিবির যে বেজায় ক্ষুব্ধ, তা প্রকাশ পায় মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংয়ের বক্তব্যে। তাঁর মতে, নিজের গড় রক্ষার্থে ইচ্ছে করে স্পিকারকে দিয়ে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিল কংগ্রেস। কারণ আস্থা ভোট হলে কংগ্রেস কোনওভাবেই তার শক্তি প্রমাণ করতে পারত না। কংগ্রেস ইচ্ছা করে ‘বাহানা’ তৈরি করে এই আস্থা ভোট পিছিয়ে দিচ্ছে বলে সরব হন বিধানসভায় বিজেপি বিধায়করা। এরই মাঝে ক্ষোভপ্রকাশ করে বিধানসভা ছাড়লেন রাজ্যপাল। তবে যাওয়ার আগে তিনি বিধায়কদের ‘সংবিধান রক্ষার’ ও ‘বিধানসভার আইন মেনে চলার’ প্রস্তাব দেন। এতে অবশ্য দমে যাননি শিবরাজ সিং চৌহান, যেনতেন প্রকারে আস্থা ভোট চেয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। তবে সুুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত তা সময়ই বলবে।
[আরও পড়ুন:চিন ও ইউরোপের মতো ভারতে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না করোনা, আশার বাণী গবেষকদের]
আপাতত করোনার আতঙ্কে ২৬ মার্চ পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা মুলতুবির ঘোষণা করেন স্পিকার এন প্রজাপতি। জয়ের হাসি হেসে নিজের বিধায়কদের সঙ্গে বিধানসভা ত্যাগ করেন কমল নাথ।