সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লকডাউনের জেরে চরম হতাশায় মহারাষ্ট্রের এক আঙুর চাষি। দিনের পর দিন কষ্ট করে ফল চাষের পরেও তা কেনার কেউ নেই। তাই প্রায় একটন আঙুর রাস্তায় ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন মহারাষ্ট্রের এই আঙুর চাষি, হর্ষদা চৌহান। লকডাউনের মধ্যে আঙুর বিক্রি করতে গিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। তাই শেষে কষ্ট করে উৎপন্ন ফসল রাস্তায় ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
মহারাষ্ট্রের সাংলি (Sangli) শহর থেকে প্রায় ৩০ কিমি দূরে রাস্তার ধারে প্রায় এক টন সুপার সোনাকা আঙুর উপুড় করে দিয়ে গেলেন আঙুর ব্যবসায়ী হর্ষদা চৌহান। তবে কেন তিনি এই কাজ করলেন? কারণ লকডাউনের মরশুমে তাঁর ক্ষেতের ফসল কেনার মতো কেউ নেই। তাই এভাবে রাস্তার ধারে ফেলে যাচ্ছে সুস্বাদু রসালো আঙুর। রাস্তায় ফেলে দিলে অন্তত গবাদি পশু, পাখি কিংবা ঘরছাড়া পরিযায়ী শ্রমিকরা খেয়ে বাঁচবেন। এই আশাতেই রাস্তায় ফেলে দিয়েছেন প্রায় এক টন সুপার সোনাকা আঙুর। চলতি বছরে করোনার প্রকোপ দেখা না দিলে এই সময়ে আঙুর কেনার জন্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুম্বই এবং পুনের ব্যবসায়ীরা। হর্ষদা বলেন, “আমরা চেষ্টা করেছিলাম আঙুর শুকিয়ে কিসমিস তৈরি করার। কিন্তু তাতে দেখলাম আঙুর পচতে শুরু করল। এবছর পুরো ফসলই নষ্ট হয়ে গেল।”
[আরও পড়ুন:‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা’, গৃহবন্দি থেকেই তারকাদের ১লা বৈশাখ যাপন]
মহারাষ্ট্রে যে সব অঞ্চলে আঙুর চাষ হয়, প্রায় প্রত্যেক জায়গার একই ছবি। সব জায়গাতেই প্রচুর পরিমাণে ফল চাষ করা হলেও তা বিক্রির বাজার নেই। মহারাষ্ট্র রাজ্য গ্রেপ গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের নাসিক বিভাগের সভাপতি রবিন্দ্র বোরাদে জানিয়েছেন, “আঙুর চাষের ব্যবসা থেকে প্রায় ২৫০০-৩০০০ কোটি টাকা আসে। আমার অনুমান প্রায় ৪০ শতাংশ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে এবছর।”
[আরও পড়ুন:করোনা হটস্পটে থাকা ট্রেন চালকদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ, ক্ষুব্ধ রেলকর্মীরা]
রাজ্যে মোট ৩ লাখ হেক্টর জমি জুড়ে হয় আঙুর চাষ করা হয়। তার মধ্যে ৮০ শতাংশই রয়েছে নাসিক বেল্টে। বাকি ২০ শতাংশ আঙুর ক্ষেত রয়েছে সাংলি, সোলাপুর এবং পুনেতে। ডিসেম্বরে যখন প্রথম দফার ফসল বাজারে আসে, তখন কেজি প্রতি দাম ছিল ১০০ টাকা। পরে তা নেমে হয় কেজি প্রতি ৭০ টাকা। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আঙুরের দাম এসে ঠেকেছে তলানিতে। মাত্র ২ টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি করতে চাইলেও তা কেনার কেউ নেই। ফলে ব্যয়ের উপযুক্ত দাম না পেয়ে হতাশায় ডুবে যাচ্ছেন চাষিরা।