সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আচার-আচরণ, রীতিনীতি ছাড়া বস্তুত ধর্মে-ধর্মে বিভেদ নেই। সব ধর্মের মূল মন্ত্র শান্তিস্থাপন, মানবসেবা। সেই শান্তিমন্ত্রেই মিলেমিশে যান হজরত মহম্মদ, শ্রীরাম সকলে। ছত্তিশগড়ের ফৈয়াজ খান তাই শ্রীরামের শরণ নিয়েছেন। রামভক্ত এই মুসলিম যুবক ৮০০ কিলোমিটার পথ হেঁটে পেরচ্ছেন, ৫ আগস্ট অযোধ্যায় (Ayodhya) রাম মন্দিরের ভূমি পুজোয় হাজির থাকবেন বলে।
ছত্তিশগড়ের চন্দখুড়ি গ্রামের বাসিন্দা ফৈয়াজ। কথিত আছে, এই চন্দখুড়ি গ্রাম নাকি রানি কৌশল্যার জন্মস্থান। তার মাটিও পবিত্র। সেই পবিত্র স্থান থেকে মাটি সংগ্রহ করে ফৈয়াজ রওনা দিয়েছেন অযোধ্যার উদ্দেশে। দূরত্বের হিসেব ছত্তিশগড়ের চন্দখুড়ি থেকে উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা ৮০০ কিলোমিটারের একটু কমবেশি। তাতে কী? ছোটবেলা থেকে আরাধ্যা দেবতা রামের মন্দির (Ram Temple) তৈরি ভারতের ইতিহাসে যে এক বড়সড় তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। তার সূচনার সাক্ষী থাকবেন না ফৈয়াজ? তাই ভূমি পুজোয় যোগ দিতে হেঁটে চলেছেন তিনি। আপাতত পৌঁছেছেন মধ্যপ্রদেশের অনুপপুরে।
[আরও পড়ুন: চিনের সঙ্গে সংঘাতের আবহেই আমজনতার জন্য সিয়াচেনের দরজা খুলল ভারতীয় সেনা]
ফৈয়াজ বলছেন, ”নাম এবং ধর্ম অনুযায়ী আমি মুসলিম। কিন্তু বরাবর রামচন্দ্রের ভক্ত। আমার পূর্বপুরুষরা হিন্দু ছিলেন। আমি জানি, ভারতের আসল দেবতা রামই। বংশগতভাবে আমরা হিন্দু ধর্মাবলম্বী।” এমন অস্থির সময়ে রামের প্রতি ভক্তিপ্রকাশের জন্য কোনও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়নি কখনও? এই প্রশ্নের উত্তরে ফৈয়াজ হেসেই জবাব দিলেন, ”পাকিস্তানের কেউ কেউ ভুয়ো পরিচয়পত্র বানিয়ে হিন্দু অথবা মুসলিম নাম নিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ছে। আর তাদের লক্ষ্য, ভারতে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা। পাকিস্তান তো রাম মন্দির তৈরি নিয়েও এদেশের মধ্যে সাম্প্রদায়িক অশান্তি করার চেষ্টা করছে।” না বলেও আসলে ফৈয়াজ যা বলতে চাইলেন, তার সারমর্ম অনেকটা এরকম – ধর্মীয় বিভাজন আসলে বাইরের উসকানি। পবিত্র ভারতভূমিতে ধর্মাচরণের ক্ষেত্রে তিনি অন্তত স্বাধীন।
[আরও পড়ুন: পাইলটদের বিধায়ক পদ বাতিলের মামলা প্রত্যাহার করলেন স্পিকার, নয়া জল্পনা রাজস্থানে]
এই প্রথম নয়, দেশের বিভিন্ন হিন্দু মন্দিরে পুজো দেওয়ার জন্য তিনি অন্তত ১৫ হাজার কিলোমিটার পথ হেঁটেছেন বলে জানালেন ছত্তিশগড়ের যুবক। রাত কাটিয়েছেন বিভিন্ন মঠ, মন্দিরে। নিজের অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়ে ফৈয়াজ বলছেন, ”আমাকে কেউ কখনও কোনও কথা শোনায়নি।” ফৈয়াজরাই আসলে ভারতের মুখ। প্রকৃত ধার্মিক। ফৈয়াজদের জন্য বারবার উড়তে পারে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার জয়পতাকা।