সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুজফ্ফরপুর শেল্টার হোম (Muzaffarpur shelter home) যৌন নির্যাতন মামলায় মূল অভিযুক্ত ব্রজেশ ঠাকুরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল দিল্লির একটি আদালত। সে ছাড়াও একই সাজা দেওয়া হয়েছে বাকি ১০ জনকে। এর পাশাপাশি ব্রজেশ ঠাকুরকে ৩২ লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ২০ জানুয়ারি এই মামলায় তাকে দোষী সাবস্ত্য করেছিলেন আদালতের বিচারক। মঙ্গলবার সাজা ঘোষণা করা হল।
২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে একটি বেসরকারি সংস্থার অডিট রিপোর্টের পর মুজফ্ফরপুরের ঘটনাটি সামনে আসে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘সেবা সংকল্প এভম বিকাশ সমিতি’ পরিচালিত ওই হোমে কিশোরীদের উপর যৌন নির্যাতন চলছে বলে অভিযোগ ওঠে। মেডিক্যাল পরীক্ষায় ধরা পড়ে ৪২ জন কিশোরীর মধ্যে ৩৪ জনের উপরই প্রায় চার বছর ধরে যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছে। এরপরই ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে মুজফ্ফরপুর পুলিশ। ওই বছরের জুন মাসের শুরুতেই পাঁচ মহিলা-সহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। যদিও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে মামলাটির তদন্তের ভার দেওয়া হয় সিবিআইকে।
[আরও পড়ুন: ট্রেনে মিনারেল ওয়াটারের বোতলে শৌচাগারের জল, কর্মীকে হাতেনাতে ধরলেন যাত্রীরা ]
বিস্তারিত তদন্তের পর মূল অভিযুক্ত তথা হোমের মালিক ব্রজেশ ঠাকুরের বিরুদ্ধে ৭৩ পাতার চার্জশিট পেশ করে CBI। তাতে উল্লেখ করা হয় ওই হোমের আবাসিক কিশোরীদের উপর যৌন নির্যাতনের বিবরণ। পকসো আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক আর পি তিওয়ারির এজলাসে পেশ করা চার্জশিটে সিবিআই জানায়, প্রায় প্রতি রাতেই হোমে অতিথি আসত। আর অতিথি এলেই বসত মজলিশ। আবাসিক কিশোরীদের খোলামেলা পোশাক পরতে বাধ্য করা হত। তারপর স্বল্পবাসে নাচতে হত উত্তেজক ভোজপুরী গানের সঙ্গে। অতিথিদের উত্তেজনা চরমে পৌঁছালে তাদের যৌন লালসা পূরণের দায়িত্বও পড়ত আবাসিক নাবালিকাদের উপরই।
[আরও পড়ুন: বিভাজনের রাজনীতিকে হারিয়ে জিতল উন্নয়ন, বিজেপিকে কটাক্ষ বিরোধীদের ]
হোম কর্তৃপক্ষের এই নির্দেশ মানতে রাজি না হলে জুটত মার। তাতেও কাজ না হলে রাতে জুটত শুকনো রুটি আর নুন। মুখ বুজে যারা এই নির্দেশ মেনে নিত, রাতে তাদের পাতে অবশ্য ভাল ভাল উপাদেয় খাবার পড়ত। তবে মার ও শুকনো রুটির বদলে যে সব সময় হোম কৃর্তৃপক্ষ ও অতিথিদের যৌন লালসা থেকে নিষ্কৃতি মিলত এমনটা নয় বলেই জানিয়েছে সিবিআই। রিপোর্টে উঠে এসেছে, অনেক সময়ই অনিচ্ছুক আবাসিকদের ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ধর্ষণ করা হত। মূল অভিযুক্ত ব্রজেশ ঠাকুরও কারণে অকারণে কিশোরীদের গোপনাঙ্গে অত্যাচার চালাত।