প্রতীকী ছবি।
নন্দিতা রায়: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বাংলাকে কোনও টাকা দেবেন না। যে কোনও উপায়ে বাংলার প্রাপ্য সমস্ত টাকা পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত আটকে রাখুন। অমিত শাহর দরবারে হাজির হয়ে এমনটাই অনুরোধ করেছেন রাজ্যের বিজেপি সাংসদরা। বাংলার প্রাপ্য টাকা আটকাতে রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কাছে এই অনুরোধ করেছেন। চলতি সপ্তাহেই সুকান্তর নেতৃত্বে বঙ্গ বিজেপি সাংসদরা শাহর বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। সূত্রের খবর, সেখানেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বাংলাকে টাকা দিলে বিজেপি অসুবিধার মুখে পড়বে বলে যুক্তিও দিয়েছিলেন সুকান্ত। শাহ অবশ্য আবেদনের জবাব দেননি বলেই সূত্রের খবর। এটাই অবশ্য প্রথমবার নয়। বাংলার প্রাপ্য টাকা আটকাতে এর আগে বঙ্গ বিজেপি নেতারা দফায় দফায় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের কাছে দরবার করেছেন।
রাজ্যের প্রাপ্য আটকাতে বহুদিন আগে থেকেই তৎপর বঙ্গ বিজেপি। অথচ রাজ্যের প্রাপ্য দীর্ঘদিন আটকে রাখা কেন্দ্রের পক্ষেও সম্ভব নয়। তাই এবার গিরিরাজের উপর ভরসা রাখতে না পেরেই বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের দু’নম্বর ব্যক্তির কাছে পৌঁছে গিয়েছেন, এমন জল্পনাও উঠে এসেছে। তাঁরা হাতিয়ার করেছেন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে। একশো দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মতো প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে বাংলার যে বকেয়া রয়েছে, তা যাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কোনওভাবেই রাজ্য সরকার না পায়, সেদিকে নজর দিয়েছেন সুকান্তরা। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, বঙ্গ বিজেপি কি বাংলাকে আর্থিকভাবে পঙ্গু করতে চাইছে! পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজনৈতিকভাবে তৃণমূলের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারবে না বুঝেই অন্য রাস্তা খুঁজতে বসেছে! অথচ রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে বিন্দুবিসর্গও আগ্রহ নেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। বরং তারা এখন থেকে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য বাংলায় সংগঠন মজবুত করতে নির্দেশ দিয়েছে বঙ্গ বিজেপিকে।
তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বঙ্গ বিজেপির এহেন আচরণে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। বলেছেন, “আমরা তো প্রথম থেকেই বলে আসছি, বাংলাকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এবং এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকার নয়, দলের তরফে নেওয়া হচ্ছে। বিজেপি বাংলা-বিরোধী। বাংলাকে আটকাতে এরা আরও অনেক নিচে নামবে। না হলে একজন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের পাওনার দাবি নিয়ে দু’দিন ধরনায় বসলেন। অথচ তাঁর কাছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে একটা ফোন পর্যন্ত এলো না যে, আসুন আলোচনায় বসি। ন্যূনতম সৌজন্যটুকু দেখানোর প্রয়োজন বোধ করেনি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.