সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা মহামারীর সঙ্গে সর্বশক্তিতে লড়ছে ভারত। এবার বিপদ বাড়িয়ে পঙ্গপাল বাহিনীর হানায় দেখা দিয়েছে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা। এহেন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ উসকে বিশেষজ্ঞদের দাবি, পাকিস্তানে রোজ জন্ম নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ রাক্ষুসে পতঙ্গ। আর খিদের জ্বালায় তারা হামলা চালাচ্ছে একের পর এক অঞ্চলে।
[আরও পড়ুন: ৪৮ ঘণ্টায় শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনেই মৃত ৯ জন, রেলের ভূমিকায় উঠছে প্রশ্ন]
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, পঙ্গপালের নতুন প্রজনন ক্ষেত্রে হয়ে উঠেছে পাকিস্তান। যার ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে ভারতকে। রাজস্থানের কৃষিদপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর বিআর কাদওয়া জানিয়েছেন, পাকিস্তানের মরুভূমি অঞ্চল বিশেষ করে বালোচিস্তান হয়ে উঠেছে পঙ্গপালের নয়া প্রজনন ক্ষেত্র। সেখান থেকেই ভারতে ‘অনুপ্রবেশ’ ঘটছে এই রাক্ষুসে পোকার। তিনি আরও জানিয়েছেন, একদিনে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে পারে পঙ্গপাল বাহিনী। এক বর্গমাইল জুড়ে উড়া পঙ্গপালের ঝাঁকে থাকতে পারে প্রায় ৮ কোটি পতঙ্গ যা মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার মানুষের খাবার সাবাড় করে দিতে পারে। খাদ্যশস্য, পাতা, ফুল, ফল বা গাছের ছল কোনও কিছুতেই অরুচি নেই রাক্ষুসে পোকাগুলির। জানা গিয়েছে, গত এপ্রিল মাসে পাকিস্তান থেকে রাজস্থানে প্রবেশ করে পঙ্গপাল বাহিনী। তারপর পশ্চিম ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে সেগুলি। পতঙ্গের হানায় বিস্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজস্থান, পাঞ্জাব, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশ। পরিবেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, পতঙ্গের হানায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রাজস্থানে।
উল্লেখ্য, পশ্চিম ও মধ্য ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে পঙ্গপালের হানা চাষিদের অথৈ জলে ফেলেছে। আগে থেকে এই পঙ্গপাল হানার সতর্কতা থাকলেও সেভাবে কোনও পদক্ষেপই করেনি কেন্দ্র। কোটি কোটি টাকার ফসলের ক্ষতির পর অবশেষে ঘুম ভেঙেছে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রকের। বুধবার কেন্দ্র পঙ্গপাল হানা রুখতে কয়েকটি পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে। কৃষিমন্ত্রক সূত্রে খবর, পাঁচ রাজ্যে মোট ২০০টি অস্থায়ী পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রক দপ্তর তৈরি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন এবং রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রণের কাজ করে চলেছে এই দপ্তরগুলি। এখনও পর্যন্ত রাজস্তানের ২১টি, মধ্যপ্রদেশের ১৮টি, পাঞ্জাবের একটি এবং গুজরাটের ২টি জেলায় পঙ্গপালের হানা নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। কীটনাশক ছড়ানোর জন্য দমকলের ৮৯টি ইঞ্জিন, ১২০টি পর্যবেক্ষক যান, ৪৭টি পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রক যান, এবং ৮১০টি ট্রাক্টর নামানো হয়েছে। ব্রিটেন থেকে আরও ৬০টি অত্যাধুনিক স্প্রে করার যন্ত্র আমদানি করা হচ্ছে। অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকও কৃষিমন্ত্রককে তাঁদের নিজেদের পরিকাঠামো ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে।