সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা সংকটের জেরে প্রায় চার দশক পর ‘পরিযায়ী শ্রমিক’ সংজ্ঞা নিয়ে মাথা ঘামাল কেন্দ্র সরকার। বস্তুত, কারা পরিযায়ী শ্রমিক, সেই সংজ্ঞা ঠিক করা হবে। পরিযায়ীদের নাম নথিভুক্ত করে তাঁদের সামাজিক ও স্বাস্থ্য পরিষেবার আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গওয়ার।
[আরও পড়ুন: লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় মৃতের সংখ্যা, মুম্বইয়ে খোঁড়া হচ্ছে গণকবর]
ভারতের অর্থনীতিকে সচল রাখতে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অথচ সামাজিক বা স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে তাঁরাই সবচেয়ে বেশি ব্রাত্য। পরিযায়ীদের সমস্যা যে আগে ছিল না, এমনটা নয়। এবার সেগুলিকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল করোনা মহামারী। সড়ক বা রেলপথে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেওয়া লক্ষ লক্ষ হাড় জিরজিরে শ্রমিকদের ছবি পরিস্থিতির ভয়াবহতা আরও প্রকট করে তুলেছে। এহেন পরিস্থিতিতে একপ্রকার বাধ্য হয়ে ‘পরিযায়ী’ সংজ্ঞা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে কেন্দ্র। জানা গিয়েছে, পরিযায়ীদের নিয়ে নয়া নীতি তৈরি করতে চলেছে শ্রমমন্ত্রক। শীঘ্রই তা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার কাছে পেশ করা হবে। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরের শেষের দিকেই পরিযায়ী শ্রমিকদের সামাজিক ও স্বাস্থ্য পরিষেবার আওতায় আনার জন্য নয়া আইন প্রণয়ন করা হতে পারে। কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গওয়ার জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে এই বিষয়ে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে সংসদীয় কমিটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিযায়ী শ্রমিকদের সঠিক পরিসংখ্যান সরকারের হাতে নেই। কারণ অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করা শ্রমিক বা ভিনরাজ্যে দিনমজুরি করা মানুষদের নথিভুক্ত করা হয় না। তিনি জানান, পরিযায়ীদের জন্য ইন্টার-স্টেট মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কমেন অ্যাক্ট, ১৯৭৯ রয়েছে বটে। তবে পাঁচজন বা তার বেশি পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে যে সংস্থা বা কনট্রাকটর কাজ করে এই আইন তাদের ক্ষেত্রে লাগু হয়। ফলে বৃহৎ সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক এর আওতার বাইরে থেকে যায়। তাই এবার প্রত্যেক শ্রমিকের কথা মাথায় রেখে নয়া আইন আনা হতে পারে।
উল্লেখ্য, দেশজুড়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ব্যবস্থায় ফাঁক রয়েছে। এমন পর্যবেক্ষণ করে কেন্দ্র ও রাজ্যকে নোটিশ ধরিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সেই নোটিশের জবাব দেয় কেন্দ্র। জানানো হয়, ইতিমধ্যে ৯১ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে ঘরে ফেরানো হয়েছে। বাকি সকলকে ঘরে ফেরাতে বদ্ধপরিকর কেন্দ্র সরকার। তবে এদিনও একের পর এক কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় কেন্দ্রের প্রতিনিধিকে। পরিযায়ী শ্রমিকদের অন্ন, পরিবহণ, বাসস্থান নিয়ে অন্তত ৫০টি প্রশ্ন করা হয় সলিসিটর জেনারেলকে।