প্রণব সরকার, আগরতলা: পেশায় ঠেলাচালক। পেটের দায়ে মাঝে মধ্যে দিনমজুরিও করতে হয়। কোনও রকমে দিন যাপন করেন আগরতলার প্রতাপগড়ের বাসিন্দা গৌতম দাস। বেশ কয়েক বছর ঠেলা চালিয়ে ৮ হাজার টাকা জমিয়ে ছিলেন তিনি। বলতে গেলেই এই টাকাই ছিল তাঁর সারা জীবনের সঞ্চয়। কিন্তু সামর্থ্য সীমাবদ্ধ হলেও মানুষের প্রতি তাঁর ভালবাসা সীমাহীন। তাই করোনা ভাইরাসের হামলা ঠেকাতে লকডাউন হবার পর মানুষের দুর্দশা দেখে নিজের কষ্টার্জিত অর্থ তুলে দেন দিনমজুরদের মধ্যে।
[আরও পড়ুন: এবার করোনায় আক্রান্ত ICMR-এর বিজ্ঞানী, স্যানিটাইজ করা হচ্ছে গোটা হেড কোয়ার্টার]
নিজে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় করে ঠেলা নিয়ে বেড়িয়ে গরীব মানুষের হাতে সেগুলি তুলে দেন গৌতম বাবু। তাঁর এহেন সেবার কথা প্রকাশ্যে আসতে প্রশাসনের নজরে আসেন তিনি। রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গৌতমবাবুর নাম উল্লেখ করে তাঁর সমাজ সেবার দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন। তিনি গৌতমবাবুকে তাঁর এই অসামান্য অবদানের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। এরপরই গৌতমবাবু স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে তাঁর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের অনুরোধে তিনি তাঁর সঙ্গেও দেখা করেন। দারিদ্রের সঙ্গে লড়াইয়ের করুণ কাহিনী শুনে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব তাঁর ছেলের জন্য একটি চাকরীর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পাশাপাশি তাকে সম্বর্ধনাও দিয়েছেন। আপ্লুত গৌতম বাবু জানিয়েছেন, তিনি ভাবতেই পারেননি প্রধানমন্ত্রী তাঁর নাম উচ্চারণ করবেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন। পাশাপাশি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের কাছেও।
উল্লেখ্য, লকডাউনের জেরে ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ থাকে বিপাকে পড়েছেন বহু দিনমজুর। বিগত দু’মাসে কাজকর্ম হারিয়ে বহু মানুষ দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের ব্যবস্থা করতে হিমশিম খেয়েছেন। এহেন পরিস্থিতিতে কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী বিলপব দেব জানিয়েছেন, কিছুদিনের মধ্যেই বিমান, ট্রেন ও সড়কপথে বহিঃরাজ্য থেকে ৪০-৫০ হাজার মানুষ ফিরবেন রাজ্যে। আগতদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে। তাই এখন রাজ্যবাসীকে সতর্কতার সঙ্গে করোনা প্রতিরোধে সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে।