সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোনটা আগে প্রাণ না অধিকারের লড়াই? এখন সেই প্রশ্নই বার বার ঘুরপাক খাচ্ছে দিল্লির শাহিনবাগে। করোনার আতঙ্ক দমাতে পারেনি শাহিনবাগের সংশোধীত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধী আন্দোলনকারীদের। নিজেদের লক্ষ্যে এখনও অনড় তারা।
এই সেই শাহিনবাগ, যা একসময় গোটা দেশকে আন্দোলনের পথ দেখিয়েছিল সিএএ-র বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার জন্য। কিন্তু করোনার আতঙ্কে ধীরে ধীরে হারিয়ে গেছে সেই প্রতিবাদ প্রতিবাদকারীরা। তবে নিজেদের অবস্থানে এখনও অনড় শাহিনবাগের আন্দোলনকারীরা। আজই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ঘোষণা করেন সামাজিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক কোনও কারণেই পঞ্চাশ জনের বেশি কেউ এক জায়গায় একত্রিত হতে পারবেন না। ফলে পরোক্ষভাবে দ্রুত তিনি শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু অবস্থান ছেড়ে উঠে যাওয়া মানে তো করোনার ভয়ে আন্দোলনকে মাঝপথে স্থগিত করে দেওয়া? এই প্রশ্নের জেরেই আন্দোলন ভঙ্গে নারাজ তিনমাস ধরে একটানা আন্দোলনে রত শাহিনবাগের মহিলারা। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেজরিওয়াল বলেন,”এই নিয়ম সকলের জন্য প্রযোজ্য। কোনও রাজনৈতিক মিটিং হোক বা মিছিল সবক্ষেত্রেই এই নিয়ম মানুতে হবে।” কাজি এমাদ শাহিনবাগ আন্দোলনের মধ্যস্থতাকারী জানান,”সংক্রমণ রোধে সিনেমা হল ও আইপিএল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়াকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। এই ধরণের স্থানগুলোয় মানুষ বিনোদনের স্বার্থে একত্রিত হন। তবে এগুলোর সঙ্গে অধিকারের লড়াইকে মিশিয়ে দেওয়া উচিৎ নয়। দুটোক্ষেত্র এক নয়। তবে সুপ্রিম কোর্ট যতক্ষণ না সরাসরি কোনও নির্দেশ দেয় ততক্ষণ কেউ আমাদের কোনও নির্দেশ দিতে পারে না।” তবে দেশে প্রথম করোনায় আক্রান্তের সন্ধান মেলে দিল্লিতেই। এখন দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ১১৮। করোনার সংক্রমণ রোধে দিল্লিতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল-কলেজ, সিনেমা হলগুলি। বেশ কয়েকটি অফিসে ছুটি দিয়ে সেখানের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। ফলে আবার নতুন করে দিল্লিতে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ রোধে কড়া পদক্ষেপ নিতে চাইছে কেজরি সরকার।
[আরও পড়ুন:বুধবার থেকেই পুরোদমে কাজ করবে ইয়েস ব্যাংক, জানালেন রিজার্ভ ব্যাংকের গর্ভনর]
ডিসেম্বর থেকে এনআরসি ও সিএএ-র প্রতিবাদে প্রায় শতাধিক আন্দোলনকারীরা শাহিনবাগের রাস্তা বন্ধ করে রেখে দেয়। যার জেরে ব্যহত হয় যান চলাচল। সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়ে শুনানি চলার সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৩ মার্চ। তাই আন্দোলন ভঙ্গের আগে শীর্ষ আদালতের পরবর্তী শুনানির ওপরেই আস্থা রাখতে চান শাহিনবাগের আন্দোলনকারীরা।