Advertisement
Advertisement

Breaking News

Congress

কীভাবে ফিরবে হৃতগৌরব, কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরে কি মিলবে উত্তর?

চিন্তন শিবিরে উপস্থিতি ছিলেন 'বিদ্রোহী' নেতা গুলাম নবী আজাদ।

Sonia Gandhi urges change in organization to combat BJP at Chintan Shibir | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:May 13, 2022 8:10 pm
  • Updated:May 16, 2022 9:10 pm

সোমনাথ রায়, উদয়পুর: ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। ‘দ্য গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি’। সফর শুরু হয়েছিল ব্রিটিশ আমলা তথা রাজনৈতিক সংস্কারক অ্যালেন অক্টাভিয়ান হিউমের হাত ধরে। দলের যাত্রাপথে রয়ে গিয়েছে মহাত্মা গান্ধী থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মতো মহানায়কদের অমরকীর্তি। কিন্তু কোথায় সেই গৌরবোজ্জ্বল দিন? আজকের কংগ্রেস যেন অতীতের প্রেতরূপী ছায়া মাত্র। শুধু নির্বাচনী বিপর্যয় নয়, মানুষের কাছে বিজেপির বিকল্প এবং দেশের চালিকাশক্তি হিসেবে নিজের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে দলটি। এহেন পরিস্থিতিতে মুমূর্ষু কংগ্রেসকে কীভাবে চাঙ্গা করা যায়, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে রাজস্থানে শুরু হয়েছে ‘চিন্তন শিবির’।

[আরও পড়ুন: ‘জনগণমন’ গেয়ে ক্লাস শুরু করতে হবে মাদ্রাসায়, যোগীরাজ্যের পর একই ভাবনা মধ্যপ্রদেশেরও]

এদিন চিন্তন শিবিরে দলীয় পরিকাঠামোয় ‘দ্রুত পরিবর্তনের’ ডাক দেন সোনিয়া গান্ধী। তিনি বলেন, “সময়ের দাবি মেনে দলে দ্রুত পরিবতন আনতে হবে। আমাদের কর্মপদ্ধতিতে বদল আনতে হবে। দলকে ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে রেখে সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে। এটা মাথায় রাখতে হবে যে দল আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে। এবার প্রতিদানের পালা। আমি আমার সহকর্মীদের কাছে নির্দ্বিধায় দলের উন্নতির জন্য মত পেশ করার আহ্বান জানাচ্ছি। দেশের মানুষ দেখুক আমাদের দল শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ। বিজেপির সঙ্গে একজোট হয়ে লড়াই করতে হবে।”

Advertisement

এদিকে, বদল আনার কথা বললেও সংগঠনের কোন স্তরে এবং সময়োপযোগী কী পরিবর্তন করা উচিত, সেই প্রশ্নের উত্তর কংগ্রেস সভানেত্রীর ভাষণে মিলল না। যদিও গতকাল ‘জি-২৩’ নেতা বিবেক তানাখা ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন। এবং এদিন চিন্তন শিবিরে উপস্থিতি ছিলেন ‘বিদ্রোহী’ নেতা গুলাম নবী আজাদ। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে মুখে চওড়া হাসি নিয়ে কথা বলতেও দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এটাও স্পষ্ট নয় যে, নেত্রীর ইঙ্গিতপূর্ণ ভাষণের পর নিজের অবস্থান কি নমনীয় করবে বিদ্রোহী শিবির।

Advertisement

শুক্রবার অর্থাৎ ১৩ মে মরুরাজ্যের উদয়পুরে শুরু হয়েছে কংগ্রেসের চিন্তন শিবির। চলবে ১৫ মে পর্যন্ত। গোটা দেশ থেকে মোট ৪২২ জন নেতা উদয়পুরের ওই শিবিরে অংশ নিচ্ছেন। রয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, গুলাম নবী আজাদ, পি চিদম্বরম, দিগ্বিজয় সিং, কমল নাথ, অধীর চৌধুরী-সহ অনেকেই। কংগ্রেস সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল যে, রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) দিল্লি থেকে বিমানের বদলে ট্রেনে উদয়পুর যাবেন। সেইমতো গতকাল দিল্লির সরাই রোহিল্লা স্টেশন থেকে উদয়পুরের উদ্দেশে রওনা দেন রাহুল। সূত্রের খবর, তাঁর সঙ্গে কংগ্রেসের জনা পঞ্চাশেক নেতা ট্রেনেই দিল্লি গিয়েছেন। এদের মধ্যে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির হেভিওয়েট সদস্যরাও রয়েছেন। ট্রেনে রাহুলের সফরসঙ্গী যাঁরা হন, তাঁদের মধ্যে জয়রাম রমেশ, পবন বনসলরাও ছিলেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আসলে, প্রায় আট বছর কেন্দ্রে ক্ষমতায় নেই কংগ্রেস। একে একে হাতছাড়া হয়েছে বেশিরভাগ রাজ্য। এই মুহূর্তে একার ক্ষমতায় গোটা দেশের মাত্র দু’টি রাজ্যে ক্ষমতায় সোনিয়া গান্ধীরা (Sonia Gandhi)। তাই বহুদিন আগেই দলের নেতাদের বলে দেওয়া হয়েছে, খরচে যতটা সম্ভব রাশ টানতে হবে। বিমানের জায়গায় যতটা সম্ভব ট্রেনে যাতায়াত করতে হবে। রাহুল গান্ধী নিজেই সেটার উদাহরণ তুলে ধরতে চান।

এদিকে, কংগ্রেস যে বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে তার প্রমাণ গোয়া। ওই রাজ্যে তৃণমূলের কিছুই ছিল না। প্রাক্তন মুখ‌্যমন্ত্রী লুইজিনো ফালেইরো আচমকা তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা হাতে নিয়ে চমক দেন। ভাঙতে শুরু করে কংগ্রেস। এক ‘আঞ্চলিক দলে’র কামড় ঠেকাতে না পারায় বুঝিয়ে দেয় যে কতটা রক্তাল্পতায় ভুগছে ‘দ্য গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি’। রাজনীতিবিদদের মতে, নির্বাচনী বিপর্যয়ের ‘পোস্টমর্টেম’ করার বিপরীতে রাহুল গান্ধী নতুন বছরে ছুটি কাটাতে বিদেশে যান। তিনি ঘুরতে যেতেই পারেন, অন্যায় নেই। কিন্তু গুজরাটের মতো একটা সংবেদনশীল রাজ্যে নেতারা কী চাইছেন, তাঁদের কী অসুবিধা হচ্ছে- সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার মতো কোনও নেতৃত্ব নেই সেখানে। রাহুল গান্ধী তো আনুষ্ঠানিকভাবে দলের সভাপতিও নন। কাজেই তাঁর দায়িত্বই বা কতটুকু! অথচ তিনিই যে সমস্ত কিছুর দায়িত্বে আছেন, সেটাও অজানা নয়। অর্থাৎ, ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’। ফলে প্রশ্ন উঠছে, কংগ্রেসের মতো একটি শতাব্দী প্রাচীন দল কি সাংগঠনিকভাবে এইরকম পরাবাস্তবতার মাধ্যমে চলতে পারে? এমন কিছু ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হওয়া প্রয়োজন, যা জনতা চোখের সামনে দেখতে পাব। কিন্তু চিন্তন শিবিরে কি সেই দিশার ইঙ্গিত দিয়ে যাবে? তার উত্তর দেবে সময়। 

[আরও পড়ুন: মদ্যপ অবস্থায় সাংসদদের হুমকি! ত্রিপুরার উপ-মুখ্যমন্ত্রীর ছেলেকে তোপ তৃণমূলের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ