সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী নিজে বাড়িতে আসুন, ন্যায়বিচার ও চাকরির আশ্বাস দিন। নইলে শেষকৃত্য হবে না। উন্নাওয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত নির্যাতিতার পরিবার এবার এই দাবিতে এককাট্টা হল। সদস্যদের জোরদার দাবি, যতক্ষণ না যোগী আদিত্যনাথ গ্রামে পৌঁছবেন, ততক্ষণ দেহ ওভাবেই শায়িত থাকবে।
ধর্ষণের পর বিচার চেয়ে মামলা এবং সেই মামলার সাক্ষ্য দিতে গিয়ে অভিযুক্তদের হাতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রায় চারদিন লড়াইয়ের পর সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু উন্নাওয়ের তেইশ বছরের তরুণীর। শুক্রবার দিনটার শেষ হওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে হাসপাতালের বিছানায় সমস্ত লড়াইয়ের কাছে হার মেনেছিলেন। তাঁর ৯০ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ, নিথর দেহ যখন উন্নাওয়ে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছল, তখন প্রায় ২১ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। শনিবার গভীর রাতে স্বজনরা হাতে পেলেন ঘরের মেয়ের দেহ। নিয়মমতো সৎকার হওয়ার কথা রবিবার। কিন্তু দিনের শুরুতেই কার্যত শেষকৃত্য করতে বেঁকে বসেন আত্মীয়-পরিজনরা। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গ্রামের বাড়িতে গিয়ে একবার দেখুন, তাঁদের মেয়ের কী অবস্থা। ততক্ষণ পর্যন্ত দেহ সৎকার করা হবে না।
[আরও পড়ুন: প্রধান শিক্ষিকার স্বামীর যৌন লালসার শিকার, তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকা]
এমন নৃশংস ঘটনার পর যদিও ‘ব্যথিত’ বলে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের দ্রুত এর বিচার হবে বলে আশ্বাসও দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর কথা ততটা ভরসা মোটেই জোগাচ্ছে না নির্যাতিতার পরিবারকে। আশঙ্কা একটাই, যে অভিযুক্তরা সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার পথেই প্রমাণ লোপাটের জন্য নির্যাতিতার উপর এমন হামলা চালাতে পারে, তাদের আক্রোশ কি এত তাড়াতাড়ি মিটে গিয়ে মনে ভীতির সঞ্চার হবে? নাকি আরও বড় আঘাতের জন্য নিজেদের গোপনে প্রস্তুত করবে? বিচার শেষ হওয়ার আগেই যদি তাঁদের উপর আরও বড় আঘাত নেমে আসে, এই আশঙ্কায় কাঁটা নির্যাতিতার পরিবার। মুখ্যমন্ত্রী নিজে গিয়ে তাঁদের আশ্বাস দিলে, হয়ত বা সেই আশঙ্কার মেঘ কিছুটা হলেও কাটবে।
শুধু নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাই নয়, উন্নাওয়ের নির্যাতিতার বোন আরও বলেছেন, ”যোগী স্যারের উচিত এখানে এসে এ বিষয়ে কী হচ্ছে না হচ্ছে, তা আমাদের জানানো। আমি আরও দাবি করছি, আমাকে একটা সরকারি চাকরি দেওয়া হোক।” রাজ্যের দুই মন্ত্রী ইতিমধ্যেই তাঁদের বাড়ি গিয়ে, স্বজনদের পাশে দাঁড়িয়ে আর্থিক সাহায্য পৌঁছে দিয়েছেন। জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে যে কোনও প্রয়োজনে তাঁরা পাশে থাকবেন। কিন্তু তাঁদের কথায় তেমন ভরসা পাননি প্রান্তিক এই পরিবারটি। তাঁদের মাথার উপর একমাত্র ভরসার হাত রাখতে পারেন যোগী আদিত্যনাথই।