Advertisement
Advertisement
জয়ন্ত সিনহা

বাবার ছায়া পেরিয়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে যশবন্তপুত্র, জয় নিয়ে প্রত্যয়ী জয়ন্ত

বিহার-ঝাড়খণ্ড মিলিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় জয়ন্ত সিনহার জনপ্রিয়তা সবথেকে বেশি।

Will win Lok Sabha polls by 3 lack votes, claims Jayant Sinha
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:April 30, 2019 12:55 pm
  • Updated:April 30, 2019 12:55 pm

সন্দীপ চক্রবর্তী, হাজারিবাগ: রাঁচি থেকে হাজারিবাগ। এই পথেই ডেমু টাউনে মহারাজা হোটেলের পাশ দিয়ে সরু রাস্তায় ৫০০ মিটার এগলেই ‘ঋষভ ভবন’। ওই ভবনের পরিচয় বদলে গিয়েছে। কিছুদূরে গত শতাব্দীর খ্যাতনামা আইনজীবী যদুনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে আসতেন রবীন্দ্রনাথ, নেতাজি। স্বাস্থ্য উদ্ধারে আসেন কেশবচন্দ্র সেনও। বাঙালির আবেগে জড়িয়ে হাজারিবাগ।

ঋষভ ভবনকে ‘বাগানবাড়ি’ বললেও কম বলা হবে। প্রচুর আম গাছের ছায়ায় বসে ৭৫-৮০ জন যুবক। প্রত্যেকের মাথায় বিজেপি লেখা ও পদ্মফুল আঁকা গেরুয়া টুপি। একটু দূরে রান্না চলছে। ওই যুবকদের পই পই করে শিখিয়ে চলেছেন এক রাজস্থানি যুবক। সিদ্ধার্থ জৈন। যোধপুর আইআইটি থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছেন ২০১৪ সালে। সিদ্ধার্থ বছর দুয়েক আগে ব্রিলিয়ান্ট কেরিয়ারের হাতছানি ছেড়ে একটা ই-মেল করেছিলেন এ বাড়ির নামকরা মালিককে। হপ্তাখানেকের মধ্যেই দিল্লি আইআইটি-র বিখ্যাত ওই ছাত্র ডেকে নিয়েছিলেন তাঁকে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন, নোটিস পাঠিয়ে রাহুলের কাছে জবাব চাইল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক]

হাজারিবাগের সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্ত সিন্‌হা এসেই দাঁড়িয়ে পড়লেন ফেসবুক লাইভে। গেরুয়া পাঞ্জাবি। মোদির ছবিকে ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে ‘জয় ভারত’ বললেন। তিন-চারদিন পরপরই এমন লাইভ অনুষ্ঠান করছেন। নিজেকে ‘ইঞ্জিনিয়ার’ ও ‘বিজ্ঞানী’ পরিচয় দিতে ভালবাসেন। সেই তিনি ফেসবুককে প্রচারের বড় মাধ্যম করবেন স্বাভাবিক। সিদ্ধার্থ তথ্য দিয়ে দাবি করলেন, বিহার-ঝাড়খণ্ড মিলিয়ে রাজনীতিবিদদের মধ্যে জয়ন্তবাবুর জনপ্রিয়তা ও ফলোয়ার সবথেকে বেশি। কিন্তু সিদ্ধার্থ কেন এলেন জয়পুরের বাড়ি ছেড়ে? খুব স্মার্ট ছেলে লাইভের ক্যামেরা পজিশন দেখতে দেখতে বললেন, “এমন শিক্ষিত মানুষ যুবকদের প্রেরণা মনে করি, তাই।”

Advertisement

জয়ন্ত সিন্‌হা কীভাবে যেন বাবার রাজনৈতিক পরিচয়কে ফেলে এসেছেন। যশবন্ত সিন্‌হার নাম একবারই বললেন সাক্ষাৎকারে। যশবন্ত সিন্‌হা ২০০০ সালে রেললাইন চালু করেছিলেন, কিন্তু কংগ্রেস বন্ধ করে দেয়। কোথায় সেই যশবন্ত? বাগানে ঘেরা, সুবিশাল এই বাড়ির কেউই উত্তর দিলেন না, দিতে চাইলেন না। জয়ন্ত এ বিষয়ে জবাব দিতে চাইছেন না। শুধু বোঝা গেল, তিনি দিল্লিতে। ছেলের হয়ে প্রচারে তাঁর থাকার প্রশ্নও নেই। তিনি তো ‘বাগী’।

[আরও পড়ুন: চাচা-ভাতিজির সম্মানের লড়াই পাটলিপুত্রে, পারিবারিক দ্বন্দ্বে তপ্ত নির্বাচনী পরিবেশ]

অটলবিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায় অর্থ ও বিদেশ মন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। সেই তিনিই ঠিক একবছর আগে বিজেপি ছেড়ে দেন। মমতার ব্রিগেডে সুর চড়িয়েছিলেন মোদির বিরুদ্ধে। মোদি-বিরোধী বলে পরিচিত যশবন্তের পুত্র অবশ্য মোদি মন্ত্রিসভায় শুরুতেই অর্থমন্ত্রকে রাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। মুদ্রা যোজনা চালুতে বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ জয়ন্তবাবুর অবদান প্রচুর। তাঁকে অবশ্য ভোটের প্রচারে ব্যাঙ্ক লোন পাওয়ার অসুবিধা নিয়ে প্রশ্ন শুনতে হচ্ছে। তিনি বললেন, খুব নিচু স্তরে মিটিং করে সমস্যা থাকলে মেটাতে হবে। অসামরিক বিমান পরিষেবার রাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবেও সফল। কিন্তু এখন তাঁকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে জমি ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন ক্ষেত্রে। অনেকক্ষণ ধরে বোঝালেন, জোর করে জমি নেওয়া হবে না। ক্ষতিপূরণ সর্বোচ্চ দেওয়া হচ্ছে। তিনি স্বীকার করলেন, হাজারিবাগের যুবরা কাজ চান। ৩৩ নম্বর জাতীয় সড়ক যা রাঁচির সঙ্গে যুক্ত করছে, সেখানে কাজ পাচ্ছেন মানুষ।

[আরও পড়ুন: ‘গরম বাড়লেই বিদেশে পালান রাহুল’, ‘অজ্ঞাতবাস’ নিয়ে কটাক্ষ অমিত শাহ’র]

নিজে থেকেই সাফাই দিলেন-‘একজন সাংসদের পক্ষে প্রতিটা গ্রামে তিন বছরে একবার হাজিরা দেওয়া কঠিন। জলের মতো সহজ অংক। মানুষ যে বলছেন, আপনাকে দেখা যায় না? পাটনা, দিল্লি, জার্মানিতে পড়া উচ্চশিক্ষিত মানুষ বোঝালেন, মানুষ কেন সংসদে পাঠান? বিধায়কের কাজের সঙ্গে যে ফারাক আছে বুঝতে হবে। হাজারিবাগের পর্যটনের গৌরব ফেরাব। পত্রাতুতে কাজ চলছে।’ বাঙালির সঙ্গেও নিবিড় যোগ হাজারিবাগের। ‘বাঙালি ভোট’ এখনও ফ্যাক্টর এখানে। সিপিআই প্রার্থী প্রাক্তন সাংসদ ভুবনেশ্বর প্রসাদ মেহতা এবারও লড়াইতে। মহাজোটের কংগ্রেস প্রার্থীও রয়েছেন। তবু জয়ন্ত নিশ্চিত, গতবারের দেড় লক্ষের ব্যবধান এবার ছাড়িয়ে তিন লক্ষ হবে। ছ’মাস ধরে ছাঁকনির মতো তুলে আনা প্রতি গ্রামের বাছাই করা যুবদের কাজে লাগাচ্ছেন তিনি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ