Advertisement
Advertisement

Breaking News

মদ-মহিলা-ভায়াগ্রা: জঙ্গিযোগে ধৃত কাশ্মীরের পুলিশ কর্তার ‘রঙিন’ কাহিনি

দাভিন্দরকে জেরা করে এনআইএ কার্যত নিশ্চিত, তিনি ছিলেন ‘লোন উল্‌ফ’।

Wine, women and viagra: DSP Davinder Singh succumbs to greed
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:February 8, 2020 9:19 am
  • Updated:February 8, 2020 11:48 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আপাতত হিরানগরের জেল কুঠুরিতে বসে মাথা ঠান্ডা করছেন জম্মু ও কাশ্মীরের সাসপেন্ড হওয়া ডিএসপি দাভিন্দর সিং। জঙ্গিদের সঙ্গে একই গাড়ি থেকে ধরা পড়েছিলেন তিনি। উদ্ধার হয়েছিল মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রও। এনআইএ আদালত তাঁকে ১৫ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে। আর তদন্তের প্রয়োজনে দাভিন্দরের ফোন, কল রেকর্ড, উত্তর ও দক্ষিণ কাশ্মীরের একাধিক জায়গায় হানা দিয়ে উদ্ধার করা নথিপ্রমাণ খতিয়ে দেখার কাজে নেমেছে এনআইএ। তা থেকে বেরিয়ে আসছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ‌্য।

দাভিন্দরকে জেরা করে এনআইএ কার্যত নিশ্চিত, তিনি ছিলেন ‘লোন উল্‌ফ’। অর্থাৎ কোনও শত্রুদেশের গুপ্তচর সংস্থা বা জঙ্গি সংগঠনের হয়ে তিনি কাজ করতেন না। নিজের ‘টাকার খিদে’ মেটাতে ব‌্যক্তিগতভাবে জঙ্গিদের সাহায‌্য করতেন। বিনিময়ে মিলত মোটা টাকা। সূত্রের খবর, বহুদিন ধরেই দাভিন্দরের নৈতিক অধঃপতন হয়েছিল। তাই তাঁর উপর পুরোপুরি ভরসা করত না রাজ‌্য পুলিশ ও প্রশাসন। তাঁকে নজরে রাখা হয়েছিল। কেন হয়েছিল তাঁর অধঃপতন? এত টাকারই দরকার হত কেন তাঁর? দাভিন্দরের ফোন রেকর্ড, বার্তা, হোয়াটসঅ‌্যাপ মেসেজ থেকে তার কিছুটা সূত্র মিলেছে।

Advertisement

এনআইএ সূত্রের দাবি, দাভিন্দরের জীবন ছিল জটিল, রঙিন। নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে মদ‌্যপান তো করতেনই, অন্তত এক ডজন মহিলার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। এবং এই বান্ধবীদের পিছনে জলের মতো টাকা ওড়াতেন তিনি। নিজেকে ‘তীব্র যৌন আসক্ত’ বলে জেরায় স্বীকার করেছেন দাভিন্দর। এবং সে জন‌্য ‘ছোট্ট নীল বড়ি’ (ভায়াগ্রা) নিতেন তিনি। রঙিন জীবন আর নেই। চার সপ্তাহের মধ্যেই তাই দাভিন্দরের চেহারা শুকিয়ে বিবর্ণ হয়ে গিয়েছে। বুড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। এখন তাই জেলে বসে প্রায়শই পুলিশকে ইউটিউবে ‘স্তব’ চালাতে অনুরোধ করছেন দাভিন্দর।

Advertisement

এনআইএ সূত্র বলছে, ‘বিলাসী জীবন’ চালাতে দাভিন্দরের লোভ দিনের পর দিন বেড়ে চলেছিল। নিজে ‘প্লেবয়’। একই সঙ্গে বাংলাদেশে ডাক্তারি পাঠরত তঁার দুই মেয়ে এবং শ্রীনগরের নামী ইংরাজি মাধ‌্যম স্কুলে পড়া ছেলের খরচ ছিল। শ্রীনগরে বিরাট বাড়ি তৈরি করতে গিয়েও তাঁর প্রচুর টাকার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তাই এসওজি ইউনিটে থাকার সময়েই তোলাবাজি, নিষিদ্ধ মাদক বিক্রি ও দামী ধাতু পাচারে জড়িয়ে যান। কিন্তু তাতেও লোভ মেটেনি। নিজেকে আরও ধ্বংসের পথে নিয়ে যান। জেরার সময় যা নিয়ে তিনি বারবার আক্ষেপও করেছেন। অবসরের প্রাক মুহূর্তে কীভাবে সাড়ে তিন দশকের পুলিশ জীবনে কালি লেগে গেল, তা নিয়ে চোখ ভিজেছে ক্ষণে ক্ষণে। কিন্তু এটাও বুঝেছেন, কলঙ্কের কালি আর মুছবে না।

তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একটি সূত্র জানিয়েছে, হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার নাভিদ বাবু ও তার দুই সঙ্গীকে সক্রিয়ভাবে সাহায‌্য করতেন দাভিন্দর। এছাড়া অন‌্য কোনও ‘দেশবিরোধী’ শক্তির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের প্রমাণ মেলেনি। সন্ত্রাসদমন অভিযানে পরিচিত নাম ৫৫ বছরের দাভিন্দর গত ১১ জানুয়ারি হাতেনাতে ধরা পড়েন। তঁার সঙ্গে গাড়িতে ছিল জঙ্গি নাভিদ ও তার দুই সঙ্গী রফি আহমেদ, ইরফান আমেদ। দু’মাস পর তাদের পাক অধিকৃত কাশ্মীরে চলে যাওয়ার কথা। তার আগে তাদের নিরাপদে উপত‌্যকা পার করে নিজের বাড়িতে লুকিয়ে রাখার চুক্তি করেছিলেন দাভিন্দর। বিনিময়ে পেতেন ৪০ লক্ষ টাকা।

ধৃত ইরফান আমেদ পেশায় আইনজীবী। অভিযোগ, চার-পাঁচবার তিনি পাকিস্তানে গিয়ে হিজবুল নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করেছেন। এক বছর আগেও নাভিদ ও তার সঙ্গীদের নিজের জম্মুর বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন দাভিন্দর। সে সময় নগদে ১২ লক্ষ টাকা, একটি এলইডি টিভি এবং অন‌্য জিনিসপত্রে রফা হয়। এনআইএ-র দাবি, দাভিন্দরের শ্রীনগর যাত্রা-সহ বেশ কিছু উড়ানের টিকিট কেটে দিয়েছিলেন ইরফান। পাকিস্তান থেকে আসা হিজবুল নেতৃত্বের নির্দেশে। অবশ‌্য জেরায় দাভিন্দর দাবি করেছেন, হিজবুলের থেকে টাকা নিলেও পরে ওই জঙ্গিদের এনকাউন্টারে মেরে দিতেন। কিন্তু তা নিজেকে বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

[আরও পড়ুন: ক্যাবে বসে CAA বিরোধী কথাবার্তা, যাত্রীকে থানায় নিয়ে গেলেন চালক]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ