স্টাফ রিপোর্টার: সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদার গল্পের বিখ্যাত স্মাগলার মগনলাল মেঘরাজের নাম কারও অজানা নয়। প্রাচীন বহুমূল্য জিনিস বিদেশে পাচার করত সে। এমনই তিন স্মাগলারকে এবার হাতে নাতে ধরল সশস্ত্র সীমা বলের (এসএসবি) জওয়ানরা। রবিবার ভোররাতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে তাদের আটক করে আমডাঙা থানার পুলিশের হাতে তুলে জওয়ানরারা।
[মনুয়া কাণ্ডের ছায়া, প্রেমিকের সাহায্যে স্বামীকে খুনে ধৃত স্ত্রী-সহ ৩]
পুলিশ সূত্রে খবর, এই পাচারকারীদের থেকে ছ’টি প্রাচীন মূর্তি উদ্ধার হয়েছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, বাঙ্গুর থেকে মূর্তিগুলি পাচারের জন্য উত্তরবঙ্গে নিয়ে যাচ্ছিল তারা। তবে শুধু মূর্তি নয়, পাচারকারীদের কাছ থেকে ডিআরডিও এবং নাসার দুটি শংসাপত্রও পাওয়া গিয়েছে। যা তদন্তকারীদের কাছে যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ। শংসাপত্রগুলি আসল না জাল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এবং যদি জাল হয়, তবে সেগুলি কী কাজে ব্যবহার হত সেটাই এখন কপালে ভাঁজ ফেলেছে পুলিশের। ধৃতদের আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। আমডাঙার সাধনপুরে এসএসবি-এর ৬৩ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট ডি কে সিং জানান, এই ছটি মূর্তির মধ্যে কয়েকটি অষ্টধাতুর এবং কয়েকটি পাথরের। তবে প্রত্যেকটি প্রাচীন ও বহুমূল্য। মূর্তিগুলির আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় আট কোটি টাকা। গাড়ির সামনে মানবাধিকার কমিশনের নকল বোর্ড লাগিয়ে মূর্তিগুলি পাচার করা হচ্ছিল।
[নিউটাউনে প্রতারণা চক্র, ধৃতদের জেরা করতে শহরে জার্মান পুলিশ]
এসএসবি সূ্ত্রে আরও খবর, নাসা ও প্রতিরক্ষা দপ্তরের গবেষণা বিভাগ (ডিআরডিও) দুটি শংসাপত্র পাওয়া গিয়েছে। ‘নভেল্টি ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি সংস্থার নামে রয়েছে সেগুলি। পুলিশ ধৃতদের জেরা করে শংসাপত্রগুলির সম্বন্ধে জানার চেষ্টা চালাচ্ছে। কী কারণে এবং এগুলি কোথায় ব্যবহার হত, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে সক্রিয় রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক পাচারচক্র। কয়েকদিন আগে এক রিপোর্টে এমনটাই জানিয়েছিলেন গোয়েন্দারা। নেপাল, ব্যাংকক-সহ অন্যান্য দেশে বহু প্রাচীন মূর্তি পাচার করেছে ওই চক্রটি। ওই রিপোর্ট পাওয়ার পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। মনে করা হচ্ছে এদিনের গ্রেপ্তারি পাচারচক্রের বিরুদ্ধে বড়সড় সাফল্য।