Advertisement
Advertisement
সদ্যোজাত

এক মেয়ে, ৩ বাবা! হাসপাতালে সদ্যোজাতর পিতৃত্ব নিয়ে নজিরবিহীন লড়াই

মেয়ের আসল বাবা কে? এনিয়ে নিরুত্তর সদ্যোজাতের মা৷

3 men claim to be the father of a new born in Kolkata's hospital

ছবিটি প্রতীকী

Published by: Bishakha Pal
  • Posted:July 23, 2019 9:27 am
  • Updated:July 23, 2019 9:27 am

স্টাফ রিপোর্টার, কলকাতা: “আমিই সদ্যোজাত সন্তানের বাবা।” তিন ব্যক্তির মুখে এই একই দাবি শুনে মাথায় হাত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। শেষ পর্যন্ত পিতৃ পরিচয়ের সমস্যা সমাধানে তিনজনই দারস্থ হলেন থানায়। আতান্তরে পড়া পুলিশও জানাল, মা সুস্থ হওয়ার পরই জানা যাবে ভূমিষ্ঠ শিশুর আসল বাবা কে৷ 

রবিবার দক্ষিণ কলকাতার গাঙ্গুলিবাগানের এক বেসরকারি হাসপাতালে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন হুগলির উত্তরপাড়ার বাসিন্দা স্বপ্না মিত্র। বছর একুশের স্বপ্নাদেবীকে শনিবার হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্থানীয় রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা দীপঙ্কর পাল নামে এক যুবক। হাসপাতাল সূত্রে খবর, নিজেকে স্বপ্নার স্বামী বলে পরিচয় দেন ওই ব্যক্তি। তিনিই স্বপ্নাকে হাসপাতালে ভরতি করান। হাসপাতালের কাগজপত্রেও রোগীর আত্মীয় হিসাবে লেখা হয় দীপঙ্করের নাম। রবিবার কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার পর হোয়াটস অ্যাপে স্টেটাস আপডেট দেন স্বপ্না। ঘটনা মোড় নেয় তারপরই।

Advertisement

রবিবারই হাসপাতালে এসে নিউটাউনের ভিস্তা গার্ডেনের বাসিন্দা হর্ষ ছেত্রী দাবি করেন, তিনিই ওই সন্তানের বাবা। যে দাবি শুনে কার্যত ফাঁপরে পড়ে যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সমস্যা অন্য আকার নিচ্ছে, এটা অনুমান করে স্বপ্না মিত্র ও তাঁর সদ্যোজাত সন্তানের দেখভালের জন্য নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। মা ও শিশুর সঙ্গে দেখার করার জন্য কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়, পিতৃ পরিচয় নিয়ে যে গোলযোগ বেঁধেছে, তা আইনি জট৷ তাই তারা থানার দ্বারস্থ হবে। সেইমতো খবর দেওয়া হয় পুলিশেও।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: সল্টলেকে বিএসএনএল অফিসে আগুন, নিয়ন্ত্রণে আনতে তৎপর দমকল বাহিনী ]

এরইমধ্যে দীপঙ্কর পালের আগেই নেতাজিনগর থানার দ্বারস্থ হয়েছেন হর্ষ। কন্যসন্তানের বাবা তিনিই এবং স্বপ্না তাঁরই স্ত্রী, এমন দাবি পুলিশের কাছেও করেন। পুলিশকে হর্ষ জানিয়েছেন, স্বপ্না ও তাঁর ম্যারেজ সার্টিফিকেট রয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মধ্যে কথা হয়েছে। হাসপাতালের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, তারা শুধু চিকিৎসার বিষয়টি দেখবেন। আসল বাবা কে, তা খুঁজবে পুলিশ।

সোমবার সকালে ফের নেতাজিনগর থানায় আসেন হর্ষ ছেত্রী। পুলিশকে তিনি ম্যারেজ সার্টিফিকেট দেখান। দীপঙ্কর পালও পুলিশকে জানিয়েছেন, স্বপ্নার সঙ্গে তাঁরও ম্যারেজ সার্টিফিকেট রয়েছে। মঙ্গলবার সেই সার্টিফিকেট নিয়ে তিনিও থানায় আসবেন। পিতৃত্বের দাবিদারের এই বিচিত্র গোলযোগের সমাধানে পুলিশ আপাতত কাউকেই স্বপ্নার সঙ্গে দেখা করতে দিচ্ছে না। তাছাড়া অস্ত্রোপচারের পর স্বপ্না দুর্বল হয়ে পড়েছেন। স্পেশ্যাল কেয়ারে তাঁর চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হয়ে উঠলেই তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চায় পুলিশ।

এপর্যন্ত মেয়ের পিতৃত্ব নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল দু’জনের মধ্যে৷ আসল বাবা নিয়ে ক্লাইমেক্সের টুইস্ট যে আরও বাকি রয়েছে, তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেনি পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সোমবার সন্ধ্যাবেলায় হাসপাতালে এসে প্রদীপ রায় নামে এক ব্যক্তি দাবি করেন, তিনিই ওই কন্যসন্তানের বাবা। স্বপ্নার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কেরও তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নেওয়ায় এরপর আর ঝুঁকি নিতে রাজি হয়নি পুলিশ। পিতৃত্বের দাবিদার নিয়ে এই বেনজির ঘটনার সমাধানে এখন ভরসা স্বপ্নার বক্তব্যই। সে সুস্থ হয়ে উঠলে, তারপরই ঘটনার কিনারা সম্ভব বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্বপ্নার নিরাপত্তায় পুলিশ পিকেটও বসানো হয়েছে। 

[ আরও পড়ুন: সাংসদ হয়েই রাষ্ট্রপতির সফরসঙ্গী হিসেবে বিদেশ যাচ্ছেন দিলীপ ঘোষ ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ