Advertisement
Advertisement
Abhishek Banerjee

নিজেকে গুটিয়ে নিতে চান অভিমানী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়! সিদ্ধান্ত সোমবার

দলনেত্রীর প্রতি আস্থা রেখেই বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

Abhishek Banerjee set to deceide his political future soon | Sangbad Pratidin
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:February 11, 2022 8:51 am
  • Updated:February 11, 2022 10:25 am

বিশেষ সংবাদদাতা: দলনেত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) উপর পূর্ণ আস্থা রেখেও নিজেকে দূরে সরিয়ে নিতে কি কোনও বড় সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়? বৃহস্পতিবার তাঁর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, প্রবল অভিমানে নিজেকে গুটিয়ে নিতে চান তিনি। গোয়ার ভোটপর্ব মিটলে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল পাঁচটার পর বা ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে তিনি একটি টুইট করে তাঁর বক্তব্য ঘোষণা করবেন।

Abhishek Banerjee set to deceide his political future soon

Advertisement

কী বলবেন তা জানা নেই। কিন্তু ইঙ্গিত স্পষ্ট। যদিও এদিনও গোয়ায় তিনি প্রচার করেছেন। বিজেপি ও কংগ্রেসকে কড়া আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসকে জয়ী করার আহ্বান জানান। তবে এদিন অভিষেক যাঁদের সঙ্গে গোয়া থেকে ফোনে কথা বলেছেন, তাতে তাঁর অভিমানী মনোভাব স্পষ্ট। সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধেও তিনি সাড়া দিচ্ছেন না। তৃণমূলের অভ্যন্তরে সম্প্রতি যে চোরাস্রোত তৈরি হয়েছে এবং পুরভোটের প্রার্থীতালিকা ঘিরে যে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি সামনে এসেছে, তার পরিণতিতেই এই পরিস্থিতি বলে খবর।

Advertisement

[আরও পড়ুন: পুরভোটের আগে বাড়তি দায়িত্ব অরূপ বিশ্বাসের, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বদলে ২ জেলার কো-অর্ডিনেটর]

জানা গিয়েছে, দশ রকম সরকারি কাজের মধ্যে দলের ভিতরের এই টানাপোড়েনে যথেষ্ট বিরক্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। বিষয়টি দাঁড়িয়ে গিয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সির (Subrata Baksi) মতো অতি সিনিয়র ও পুরনো নেতার সঙ্গে আইপ্যাক ও অভিষেকের দূরত্ব। আবার সৌগত রায়ের মতো বর্ষীয়ান সাংসদ-সহ অনেকে অভিষেকের পক্ষে আছেন। একপক্ষ আই-প্যাকের কাজের উপযোগিতার সমর্থক। অন্য শিবিরের মতে, আই-প্যাক কাজের গণ্ডির বাইরে দলীয় বিষয়ে ঢুকছে বলে জটিলতা বাড়ছে। সংগঠন নিয়ে অভিষেকের কিছু ভাবনা নিয়েও শীর্ষনেতৃত্ব বিভক্ত। নেত্রীর কাছে অভিযোগ গিয়েছে আই-প্যাক পার্থবাবুকে অপমান করেছে। পার্থ এবং সুব্রত, দু’ জনেই কিছু বিষয়ে অনড়। এমনকী তাঁরা রাজনীতি ছেড়ে দিতে তৈরি বলে নেত্রীকে জানিয়েছেন।

Abhishek Banerjee set to deceide his political future soon

এই পরিস্থিতিতে নেত্রী সিনিয়রদের সম্মান দিয়ে পুরভোটের দায়িত্ব পার্থ (Partha Chatterjee) এবং বক্সির হাতেই তুলে দিয়েছেন। ক্রমশ এই দূরত্ব এমনভাবে ডালপালা মেলেছে যে অভিষেক তীব্র অভিমানাহত। গোয়া থেকেও একাধিক নেতা, কর্মীর সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন তিনি। জানা গিয়েছে, কোনও বিতর্কে না জড়িয়ে নিজেকে গুটিয়ে আনতে চান তিনি। আরও জানা গিয়েছে, এক নেতাকে তিনি বলেছেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের আগে সর্বশক্তি দিয়ে লড়েছি। কিন্তু এখন কোনও বিতর্কে জড়াতে চাই না। পার্থদা, বক্সিদা সিনিয়র। ওঁরাই দল চালান। আমি শুধু আমার ডায়মন্ডহারবারে সাংসদের কাজ করব। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ব। গোয়ার ভোট আছে বলে এখন সিদ্ধান্ত কিছু বলব না। ১৪ তারিখ ভোট শেষ হলেই টুইট করে আমার বক্তব্য জানিয়ে দেব।’’

এক মন্ত্রীকে এদিন অভিষেক বলেন, ‘‘দিদিই তো নেত্রী। আমি বারবার বলছি আগামী কুড়ি বছর কোনও প্রশাসনিক পদে বসব না। আমি সংগঠনে কাজ করতে ভালবাসি। কিন্তু কোনও কোনও মহল থেকে যে অপপ্রচার চলছে, তাতে আমি অপমানিত। বিজেপি আর বিরোধীরা আমাকে টার্গেট করে চক্রান্ত করল। এত কিছু সহ্য করলাম। আবার এখনও যদি এসব হয়, সেটা সহ্য করব না। নিজেই সরে থাকব।’’ ওই মন্ত্রী তাঁকে খানিকটা নরম করার চেষ্টা করলেও তিনি নরম হননি। এদিকে এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় দলীয় বৃত্তে বলেছেন তিনি কোনও ভুল বোঝাবুঝি চান না। আরেক নেতা মদন মিত্র প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘‘উপরে মমতা। তারপর অভিষেক। ওকে দেখলে আমার প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির কথা মনে পড়ে। মাঝখানে অন্য কেউ নন।’’ এই ‘অন্য কেউ’ বলতে গিয়ে তিনি বেশ কিছু নেতিবাচক বিকৃত শব্দ ব্যবহার করেন। এনিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘মদনদা সিনিয়র নেতা। ওঁর কথার বিষয় নিয়ে কিছু বলব না। শুধু অনুরোধ করব কোনও কুরুচিকর ইঙ্গিতের শব্দব্যবহার না করতে। এতে মূল বক্তব্য জোলো হয়ে যায়।’’ দিল্লির খবর, দলের লাইনগত অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয়ে প্রকাশ্য মন্তব্য আর যাতে না করেন, সেজন্য সৌগত রায়কে বার্তা দিয়েছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

[আরও পড়ুন: ‘কাউকে ফেরাবেন না, কাজ করে দিন’, উদ্বাস্তুদের জমির দলিল বিলিতে ভূমি দপ্তরকে কড়া বার্তা মমতার]

দলীয় সূত্রে খবর, বেশ কিছু ঘটনাক্রমে দলনেত্রী রীতিমতো বিরক্ত। তাঁর কাছে যেসব তথ্য আসছে, তাতে তাঁর ক্রোধ বেড়েছে। একাংশের সিনিয়রদের সঙ্গে আই-প্যাক এবং অভিষেকের দূরত্ব এখন এতটাই বেড়েছে যে নেত্রীকে নিজে দলের পিছনে অনেক সময় বাড়াতে হচ্ছে। দলের অধিকাংশই মনে করেন অবিলম্বে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া জরুরি। এখন পুরভোটের মরশুম চলছে। এই পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে মিডিয়া ও কর্মীমহলে কোনও জল্পনা যাতে না চলে, তার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন দলের শুভানুধ্যায়ীমহল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ