অর্ণব আইচ, কলকাতা: বেহালায় রহস্যমৃত্যু বৃদ্ধ দম্পতির। মৃতদের নাম রথীন্দ্র রায় ও মীনাক্ষী রায়। স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার পর নিজে আত্মঘাতী হন রথীন্দ্রবাবু। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই মনে করছে পুলিশ। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বেহালার পর্ণশ্রী থানা এলাকার বেনি মাস্টার লেনে। ইতিমধ্যেই দেহ দুটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। খবর দেওয়া হয়েছে মৃত দম্পতির ছেলে ও মেয়েকে।
জানা গিয়েছে, প্রায় বন্ধুহীন হয়েই দিন কাটত দম্পতির। রথীন্দ্রবাবু পেশায় অবসরপ্রাপ্ত রাজ্য সরকারি কর্মী। তিনি মহাকরণে চাকরি করতেন। বছর দুয়েক আগে স্ত্রী মীনাক্ষীদেবীর সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়। তারপর থেকে শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি। একা একাই থাকতেন দুজনে। অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার ছেলে পেশার কারণে গুরগাঁওতে থাকেন। মেয়ের বিয়ে কলকাতাতেই দিয়েছেন। অভিযোগ, তারপরেও বাবা মাকে দেখেন না মেয়ে। প্রায় নির্বান্ধব জীবনযাপন করতে করতে অবসাদে ভুগছিলেন দম্পতি।
[বিয়ার-বিরহে মুক্তি চলতি সপ্তাহেই, কত দাম বাড়ছে জানেন?]
এই প্রসঙ্গে প্রতিবেশী উমা রায় বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরেই মীনাক্ষীদেবী অসুস্থ। ঘরের মধ্যে ঘোরাফেরা করতেন শুধু রথীন্দ্রবাবু একা। মাঝে মাঝেই বলতেন, তিনি মারা গেলে মীনাক্ষীদেবীকে কে দেখবে। তাই হয়তো স্ত্রী কে মেরে নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে রথীন্দ্রবাবু আত্মঘাতী হলেও স্ত্রী মীনাক্ষীদেবীর মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। গতকাল নিজেই নাকি স্ত্রীর মৃত্যুর খবর প্রতিবেশীদের দিয়েছিলেন। প্রতিবেশীরাই চিকিৎসকের থেকে ডেথ সার্টিফিকেট জোগাড় করে। অন্ত্যেষ্টির বন্দোবস্তের জন্য রথীন্দ্রবাবুর সঙ্গে দেখা করতে আসে। তখনই দেখা যায় মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন ওই বৃদ্ধ।
তবে অবসাদ নাকি অন্য কোনও কারণে মৃত্যু হয়েছে, তা তদন্তের পরেই স্পষ্ট হবে। মনোবিদদের মতে, অবসাদ থেকে স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী হতে পারেন রথীন্দ্রবাবু। অথবা স্ত্রীর মৃত্যুতে একা হয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা থেকেও এই ঘটনা ঘটাতে পারেন। তবে জানতে হবে গত দু’বছরে তাদের দাম্পত্য সম্পর্ক কেমন ছিল। শারীরিকভাবেও রথীন্দ্রবাবু কতটা সুস্থ ছিলেন। আর্থিকভাবেও কতটা স্বচ্ছলতা ছিল রায় পরিবারে। এমনিতেই ছেলেমেয়েরা বাবাকে দেখত না। নির্বান্ধব অবস্থায় থাকতে থাকতে হয়ত মৃ্ত্যুকেই সঠিক পথ হিসেবে মনে করেছিলেন ওই দম্পতি।