সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। স্বামী বিবেকানন্দের এই বাণী আজও গুরুরা শিষ্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দেন। এই আদর্শেই সন্তানদের শিক্ষিত করেন অভিভাবকরা। মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে শেখান। আর সেই বিবেকানন্দের তৈরি বেলুড় মঠই কিনা চূড়ান্ত অমানবিকতার পরিচয় দিল। বাবার হাত ধরে মঠের ভিতর ঢুকতে দেওয়া হল না মেয়েকে। কারণ? মেয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী।
হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও এমন ঘটনাই ঘটেছে বেলুড় মঠে। নিজের ফেসবুকে এই মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ৪৩ বছরের সৈকত বর্মন। লন্ডনবাসী সৈকত দেশে ফিরে শনিবার মেয়েকে নিয়ে গিয়েছিলেন বেলুড় মঠে। তিনি জানান, হুইলচেয়ারে মেয়েকে বসিয়ে মঠে ঢুকতে যাওয়ার সময়ই বাধা দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁরা জানান, মঠের ভিতর হুইলচেয়ারে প্রবেশের অনুমতি নেই। নিরাপত্তারক্ষীরা আটকে দেওয়ায় সেখানকার ভলান্টিয়ার ও সন্ন্যাসীদের সঙ্গেও কথা বলেন সৈকতবাবু। তাঁদের একাধিকবার অনুরোধ করেন। যাতে মেয়েকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। মঠের কর্মীদের এমন অমানবিক ব্যবহারে হতাশা ও লজ্জায় কেঁদে ফেলেন সৈকতবাবু কন্যা। প্রতিবন্ধকতা কি অপরাধ? যদি নয়, তাহলে কেন এমন আচরণ করা হল তাঁর সঙ্গে? চরম হতাশায় মাথা নত হয়ে যাওয়া মেয়ের পাশে দাঁড়িয়ে তখনও চেষ্টা চালিয়ে যান সৈকত বর্মন। মেয়ে যাতে মঠে ঢুকতে পারেন, তার জন্য মঠের মহারাজকেও অনুরোধ জানান তিনি। কিন্তু সেখানেও মেলে হতাশাজনক উত্তর।
[বালি থেকে গ্রেপ্তার নিহত তৃণমূল নেতা তপন দত্তর স্ত্রী]
হুইলচেয়ার ভিতরে না ঢোকানোর কারণও ব্যাখ্যা করেন মহারাজ। জানান, রাস্তার ধুলো, কাদা লেগে থাকে হুইলচেয়ারের চাকায়। তাই তা নিয়ে মঠের ভিতর ঢুকলে মঠ শুধু নোংরাই নয়, অপবিত্রও হয়ে যাবে। এমন আজব যুক্তি খাড়া করেই সৈকতবাবুর মেয়েকে আটকে দেওয়া হয়। গোটা ঘটনায় মর্মাহত বাবা ও মেয়ে। যে মন্দিরে সকলের অবাধ প্রবেশ, সেখানেই এক প্রতিবন্ধীর সঙ্গে এমন নির্মম আচরণ করা হল।