Advertisement
Advertisement

Breaking News

Bonedi Barir Durga Puja 2023

Bonedi Barir Durga Puja 2023: পলাশির যুদ্ধ থামার কিছুদিন পরই শুরু শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো, জানুন ইতিহাস

শহরের বনেদিয়ানায় আজও অপরিবর্তিত বিখ্যাত এই পুজোর কাহিনি।

Bonedi Barir Durga Puja 2023: History and rituals of Sovabazar Rajbari | Sangbad Pratidin
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:October 1, 2023 9:09 pm
  • Updated:October 2, 2023 1:50 pm

পলাশির যুদ্ধ থামার কিছুদিন পরই শুরু শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো। শহরের বনেদিয়ানায় আজও অপরিবর্তিত বিখ্যাত এই পুজোর কাহিনি। জানালেন ইন্দ্রজিৎ দাস।

ইতিহাস
১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে পলাশির যুদ্ধ থামল। ইংরেজরা চাইল এই যুদ্ধের বিজয়োৎসব পালন করতে। এই বিজয়োৎসবের ভার পড়ল লর্ড ক্লাইভের বিশ্বস্ত মুন্সি রাজা নবকৃষ্ণ দেবের ওপর। কিছুদিন বাদেই দুর্গাপুজো। শোভাবাজার রাজবাড়িতে নিমেষে গড়ে উঠল ঠাকুরদালান। আয়োজন হল মা দুর্গার আবাহনের। শোভাবাজার রাজবাড়িতে শুরু হল এক জাঁকজমকপূর্ণ দুর্গাপুজো। অনেকে বলে, রাজা নবকৃষ্ণ দেবের দুর্গাপুজো ছিল পলাশির যুদ্ধের বিজয়োৎসব। পুজোর সময় অনেক গণ্যমান্য লোকেরা এলেন। এলেন লর্ড ক্লাইভও। নাচগানের সঙ্গে থাকল সাহেব ও গণ্যমান্য অতিথিদের জন্য পানভোজনের অঢেল আয়োজন। এসব সত্ত্বেও পুজো পদ্ধতি কিন্তু চলল শাস্ত্র মেনেই এবং সম্পূর্ণ নিয়মনিষ্ঠার সঙ্গে।

Advertisement

৩৬ বছর পর্যন্ত নবকৃষ্ণের কোনও সন্তান না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বংশরক্ষার জন্য ১৭৬৮ সালে দাদার ছেলে গোপীমোহনকে দত্তক নেন। এর ১৩ বছর বাদে রাজার পঞ্চম রানি জন্ম দিলেন পুত্র রাজকৃষ্ণের। পণ্ডিতেরা গণনা করে বললেন, রাজকুমারের পক্ষে উত্তরের বাড়ি মঙ্গলজনক নয়। নবকৃষ্ণ সঙ্গে সঙ্গে গড়ে তুললেন ঠাকুরদালান সমেত দক্ষিণের ছয় মহলা বাড়ি। রাজা নবকৃষ্ণ প্রথমে উত্তরদিকের বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরে দক্ষিণদিকের বাড়িটাতেও ১৭৯০ সালে দুর্গাপুজোর সূচনা করেন। ওই বছরই সম্পত্তি ভাগাভাগি হয় গোপীমোহনের সঙ্গে রাজকৃষ্ণের। এরপর থেকেই দুই বাড়িতে আলাদা পুজো শুরু হয়। উত্তরদিকেরটি গোপীমোহনের ছেলে রাধাকান্ত দেবের আর দক্ষিণ দিকেরটি রাজকৃষ্ণ দেবের পুজো বলে চিহ্নিত করা হয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ঐতিহ্যবাহী এই বনেদি বাড়ির পুজোর বিসর্জনে গাইতে হয় ‘বঙ্গ আমার জননী…’]

প্রথা
রাধাকান্তের বাড়িতে রথের দিন ও রাজকৃষ্ণের বাড়িতে উলটোরথের দিন কাঠামো পুজো করে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়। দু’বাড়িতেই ডাকের সাজের একচালার সাবেকি মূর্তি। রাধাকান্ত দেবের বাড়ির প্রতিমার সিংহটি সাদা রঙের ঘোড়ামুখো সিংহ, যাকে বলে নরসিংহ। মহিষাসুর সবুজ বর্ণের। রাজকৃষ্ণদেবের বাড়ির প্রতিমার সিংহটি স্টিলরঙা ও মহিষাসুরের রং সবুজ। রাজকৃষ্ণ দেবের বাড়ির প্রতিমার সামনে সার দিয়ে বেশ কয়েকটা জরির সুতো ঝোলানো থাকে। মা ঘরের মেয়ে তাই চিকের আড়ালে থাকেন। বাইরের মানুষ যাতে মাকে সরাসরি বা না-দেখতে পায়, সেইজন্য এই ব্যবস্থা।

দুর্গানবমীর ঠিক আগের নবমীতে বোধন হয়। বোধনের দিন থেকে প্রত্যেকটি দিন ১৫ জন ব্রাহ্মণ পণ্ডিত চণ্ডী, রামায়ণ ও অন্য বহু শাস্ত্রপাঠ করেন। সপ্তমীর সকালে একটা রুপোর ছাতা মাথায় নিয়ে নবপত্রিকাকে বাগবাজারের ঘাটে স্নান করাতে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে দেবীকে অন্নভোগ দেওয়া হয় না, আতপচাল, ফল, মিষ্টি দই, দেবীকে ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হয়। একসময় বাড়িতে ভিয়েন বসত, তৈরি হত নানারকমের মিষ্টি। সন্ধিক্ষণের পুজো আজও নিষ্ঠার সঙ্গে হয়। আগে সন্ধিপুজোর সময় বন্দুক ফাটানো হত। দশমীর সকালে দর্পণ বিসর্জন। পিতৃ আলয় ছেড়ে মা দুর্গা শ্বশুরালয় যাত্রা করার আগে কনকাঞ্জলি দেওয়া হয় রুপোর থালায়। সোনার সিঁদুর কৌটো, আতপ চাল, ধান, দূর্বা ও গিনি দিয়ে কনকাঞ্জলি দেওয়া হয়। আগে বিসর্জনের সময় নীলকণ্ঠ পাখি উড়িয়ে দেওয়া হত স্বর্গে গিয়ে মায়ের আগমনবার্তা মহাদেবকে পাঠানোর জন্য। এখন মাটির দু’টো নীলকণ্ঠ পাখি বানিয়ে দশমীর দিনে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে, বিসর্জনের সময় পাখি দু’টোকে গঙ্গায় নিক্ষেপ করা হয়। একদিন যে পুজোতে শুধু গণ্যমান্য ব্যক্তিরাই আসতেন, আজ দু’বাড়ির ঠাকুরদালানই ভরে ওঠে সাধারণ মানুষের ভিড়ে।

[আরও পড়ুন: পুজোর মুখে ডেঙ্গুর ভয়াল রূপ, দক্ষিণ দমদমে ফের প্রাণহানি তরুণীর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ