Advertisement
Advertisement

Breaking News

কলকাতা পুরসভায় প্রশাসকদের কাজের মেয়াদ

কলকাতা পুরসভায় প্রশাসকদের কাজের মেয়াদ বাড়াল হাই কোর্ট, স্বস্তি রাজ্যের

কতদিন বাড়ল কাজের মেয়াদ, দেখে নিন।

Calcutta High Court extends the tenure of administrators at KMC
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:May 12, 2020 3:05 pm
  • Updated:May 12, 2020 3:06 pm

শুভঙ্কর বসু: কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর কাজের মেয়াদ বাড়াল হাই কোর্ট। আজ বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। যার জেরে ৮ জুনের পরিবর্তে ২০ জুলাই পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন প্রশাসকরা। এর আগে কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ ৮ জুন পর্যন্ত এই প্রশাসকমণ্ডলীকে কাজ চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল। সেই রায়ের পর কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন মামলাকারীরা। আজকের রায়ে স্বস্তিতে রাজ্য সরকার তথা শাসকগোষ্ঠী।

এর আগে এই প্রশাসক গোষ্ঠী বা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বোর্ডকে পুরসভার কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের সিঙ্গল বেঞ্চ। মঙ্গলবার সিঙ্গল বেঞ্চের সেই রায় বহাল রেখে বোর্ডের কার্যকালের মেয়াদ আরও বৃদ্ধি করল বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত জানিয়ে দিয়েছে, বর্তমান মহামারি পরিস্থিতির জেরেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে এই ধরনের বোর্ড গঠনের সাংবিধানিক বৈধতা ও আইনি যৌক্তিকতা বিচার করা হবে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: সরানো হল রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব বিবেক কুমারকে, দায়িত্বে এলেন নারায়ণ স্বরূপ নিগম]

কলকাতা পুরসভার বিদায়ী মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করে একটি প্রশাসক গোষ্ঠী গঠন করে রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। পুরসভার নির্বাচিত বোর্ডের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার একদিন আগেই আপৎকালীন আইন প্রয়োগ করে বোর্ড গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ডেপুটি মেয়র ও মেয়র পারিষদ দেরও ‘বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর’-এর সদস্য হিসেবে নিয়োগ করা হয়। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন উত্তর কলকাতার অরবিন্দ সরণির বাসিন্দা শরদ সিং নামে এক ব্যক্তি। সেই মামলায় বিচারপতি সুব্রত তালুকদার বোর্ড গঠনের সাংবিধানিক ও আইনি বৈধতার প্রশ্ন সরিয়ে রেখে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বোর্ডকে এক মাসের জন্য কাজের অনুমতি দেন। তিনি জানিয়ে দেন, জনপরিষেবা সচল রাখতে পুরসভার গুরুত্ব অনেকটাই। তাই এই এক মাস কেয়ারটেকার হিসেবে পুরসভার কাজকর্ম দেখভাল করবে নবনিযুক্ত প্রশাসক গোষ্ঠী।

Advertisement

এরপর সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন শরদ সিং। এদিন বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে মামলাটির শুনানিতে ওই একই দাবি জানান মামলাকারী। দাবি করেন, কলকাতা পুর আইনে (১৯৮০) প্রশাসক বসানোর কোন সংস্থান না থাকলেও করোনা সংক্রমণ বা মহামারিকে ঢাল করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। কলকাতা পুর আইন অনুযায়ী, একটি বোর্ডের কার্যকাল পাঁচ বছর। কিন্তু এক্ষেত্রে ‘রিম্যুভাল অফ ডিফিকাল্টিস’ অ্যাক্ট প্রয়োগ করে আদতে পুরো বোর্ডের কার্যকালের মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যা কিনা মৌলিক অধিকার এবং সংবিধানের ১৪, ১৯ ও ২১ নম্বর ধারার পরিপন্থী। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের যে দফতরের তরফে ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করে যাঁকে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে ঘটনাক্রমে তিনিই ওই দপ্তরের মন্ত্রী। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে মন্ত্রী নিজেকেই পুরসভার প্রশাসক গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করেছেন, যা চূড়ান্ত বেআইনি ও সাংবিধানিক কাঠামোর পরিপন্থী।

[আরও পড়ুন: রাজ্যের ১৩ রুটে চালু সরকারি বাস, পরিষেবা মিলবে অ্যাপ ক্যাবেও]

যদিও রাজ্য সরকারের তরফে পাল্টা জানিয়ে দেওয়া হয়, বর্তমান অতিমারির পরিস্থিতির জেরে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য সরকার। তাছাড়া সংবিধানের ১৫৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘রিম্যুভাল অফ ডিফিকাল্টিস’ অ্যাক্ট প্রয়োগের ক্ষমতা রয়েছে রাজ্য সরকারের। আর এক্ষেত্রেও তাই-ই করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর অবশ্য রাজ্য সরকারের এমন সিদ্ধান্তের সাংবিধানিক বৈধতা ও আইনি প্রশ্ন আপাতত সরিয়ে রেখে সিঙ্গল বেঞ্চে সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছে ডিভিশন বেঞ্চ। এবং আগামী ২০ জুলাই পর্যন্ত অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বোর্ডের কার্যকালের মেয়াদ ধার্য করেছে। এদিনের শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, বিশেষ আইন প্রয়োগের পরিবর্তে অর্ডিন্যান্স জারি করেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতির জেরেই আদালত এমন অন্তর্বর্তী সিদ্ধান্তে উপনীত হচ্ছে আদালত। এই ধরনের বোর্ড গঠনের সাংবিধানিক ও আইনি বৈধতা নিয়ে পরবর্তী শুনানিতে আলোচনা হবে। দু’পক্ষকে এ নিয়ে হলফনামাও জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ২০ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ