গৌতম ব্রহ্ম: একদিকে নিজের দাপট দেখিয়ে চলেছে নোভেল করোনা ভাইরাস (coronavirus)। প্রতিদিনই সংক্রমণের গ্রাফ উর্ধ্বমুখী। আর অন্যদিকে এই আবহেই রাজ্যে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু। মশাবাহিত এই রোগ নির্ধারণের জন্য অত্যন্ত জরুরি নমুনা পরীক্ষা। কিন্তু মারণ ভাইরাসের প্রকোপের জেরে চূড়ান্ত ব্যস্ত শহর তথা রাজ্যের সমস্ত ল্যাবরেটরি। তবে এই পরিস্থিতিতেও যাতে কোনওভাবেই ডেঙ্গু উপেক্ষিত না হয়, তার জন্য তৎপর রাজ্য সরকার। ডেঙ্গুর নমুনা পরীক্ষা সচল রাখতে একাধিক সিদ্ধান্ত নিল স্বাস্থ্যভবন।
বর্ষার প্রবেশ ঘটতেই কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে নিঃশব্দে থাবা বসাচ্ছে ডেঙ্গু। এই খবর কানে যেতেই নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। শুক্রবার এ নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করে স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিকদের মধ্যে। শেষমেশ সিদ্ধান্ত হয়, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বিভিন্ন হাসপাতালে এলাইজা পদ্ধতিতে ডেঙ্গুর নমুনা পরীক্ষার জন্য বাড়তি পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল, বিদ্যাসাগর হাসপাতালের মতো যেখানে করোনার নমুনা পরীক্ষা হয় না, সেখানে আর নতুন করে করোনা টেস্টের ব্যবস্থা না করে হবে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা। ব্লক স্তরে বিভিন্ন হাসপাতালের ল্যাবকে ডেঙ্গু পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করা হবে। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে টেকনিশিয়ারও নিয়োগ করবে রাজ্য সরকার।
[আরও পড়ুন: ভেন্টিলেশনে থাকা করোনা রোগীর উপর প্লাজমা থেরাপি, ইতিহাসের সামনে বেলেঘাটা আইডি]
এতদিন পর্যন্ত মোট ৭২টি কেন্দ্রে এলাইজা পদ্ধতিতে ডেঙ্গুর নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্যই বর্তমানে ব্যস্ত অধিকাংশ সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ল্যাব। ফলে এইসব ল্যাবে এলাইজা পদ্ধতিতে ডেঙ্গুর নমুনা পরীক্ষা সম্ভব হচ্ছে না। সেই কারণেই দ্রুত বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য বাড়তি পরিকাঠামোর ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। করোনার দাপটের জন্য যাতে কোনওভাবেই ডেঙ্গুকে উপেক্ষা না করা হয়, সে বিষয়ে সচেষ্ট প্রসাশন। কারণ করোনার সংক্রমণের মাত্রা বেশি হলেও ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার তুলনামূলক অনেকটই বেশি। সেই জন্যই ডেঙ্গু নিয়ে কোনওরকম ঝুঁকি নিতে রাজি নয় সরকার।
কলকাতার বাইরে শহরতলি এবং জেলাগুলির ল্যাবেও যাতে এলাইজা পদ্ধতিতে ডেঙ্গুর নমুনা পরীক্ষা করা যায়, তার জন্য কয়েকদিনের মধ্যেই পরিকাঠামো তৈরির ব্যবস্থা শুরু হবে।