Advertisement
Advertisement
Doctors

গলায় মরণফাঁস, সাতদিন কোমায় থাকা ১০ বছরের শিশুর জীবন বাঁচালেন চিকিৎসকরা

যমের দুয়ার থেকে মায়ের কোলে ফিরল সন্তান।

Doctors saved a 10-year-old child from death | Sangbad Pratidin
Published by: Paromita Kamila
  • Posted:February 16, 2021 10:38 am
  • Updated:February 16, 2021 11:26 am

অভিরূপ দাস: শহরের বুকে আবার চিকিৎসকদের মানবিক মুখ। মৃত্যুর মুখ থেকে টেনে এনে ১০ বছরের বাচ্চা শুভ্রাংশুকে ফিরিয়ে দিলেন মায়ের কোলে। সাতদিন যমে-মানুষে টানাটানির পর তাঁকে দ্বিতীয় জন্ম দিয়েছে ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের (Institute Of Child Health) চিকিৎসকরা। আজ তাঁরাই পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) বাসিন্দা শুভ্রাংশুর পরিবারের কাছে আসল মসীহা।

ঘটনাটা পয়লা ফেব্রুয়ারির। কাঁথির মারিশদা গ্রামের বাসিন্দা শুভ্রাংশু। সকালবেলা তার মা-বাবা মাঠের কাজে বেরিয়ে যান। ছোট্ট শুভ্রাংশু ঠাকুমার সঙ্গে যায় পুকুরে শাক তুলতে। সেখানে ঠাকুমা নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে যান। শুভ্রাংশুও আপনমনে পাশে খেলতে থাকে। ছবি দেখে হোক বা সিনেমা দেখে, কাঁঠাল গাছে উঠে গলায় গামছা বেঁধে ফাঁসি ফাঁসি খেলতে থাকে শুভ্রাংশু। বিপত্তি বাধে তারপরেই। খেলাই যে তাঁকে ঠেলে দেবে মৃত্যুর দিকে বোঝেনি ১০ বছরের ছোট্ট শুভ্রাংশু। গলায় লেগে যায় মরণফাঁস। সেভাবেই গাছের ডালে ঝুলে ছিল টানা ১০ মিনিট। মৃত্যু নেমে আসে শিয়রে। বারবার খোলার চেষ্টা করেও বিফল ছোট্ট শুভ্রাংশু যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে। বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টায় হাত-পা ছুড়তে থাকে একরত্তি ছেলেটি। পুকুর থেকে উঠে এসে ঘটনাটি চোখে পড়ে ঠাকুমার। তিনি চিৎকার করে ডাকেন আশপাশের বাসিন্দাদের।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ভোটের আগে তৃণমূল স্তরের সংগঠনে নজর মুখ্যমন্ত্রীর, বৈঠক ডাকলেন বুথকর্মীদের নিয়ে]

তড়িঘড়ি স্থানীয়রা তাকে গাছ থেকে নামিয়ে নিয়ে যান হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় চিকিৎসকরা প্রায় মৃত শিশুটিকে কলকাতার হাসপাতালে রেফার করেন। ওই অবস্থায় শহরে আরও এক হাসপাতাল ঘুরে অবশেষে বাচ্চাটিকে ভর্তি করা হয় ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে। মায়ের কাতর অনুরোধে জান-প্রাণ লাগিয়ে দেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. প্রভাসপ্রসূণ গিরি জানিয়েছেন, শুভ্রাংশুকে দেখে প্রথমে বোঝা যায়নি তার মধ্যে তখনও একটু হলেও প্রাণ রয়েছে। গলায় দীর্ঘক্ষণ ফাঁস লেগে থাকায় আশপাশের ধমনি-শিরা চুপসে গিয়েছিল তার। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলও। ফুসফুসের অবস্থাও ছিল খুব খারাপ। এই অবস্থায় টাকা পয়সার কথা না ভেবে চিকিৎসকরা বাচ্চাটির ট্রিটমেন্ট শুরু করেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘কেন সরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হল না?’, মইদুলের মৃত্যুতে পালটা প্রশ্ন পুলিশের]

ডা. প্রভাসপ্রসূণ গিরি আরও জানিয়েছেন, প্রথমেই বাচ্চাটির গলার জায়গাটাকে ইমোবিলাইজ করা হয়। মস্তিষ্কে যথেষ্ট পরিমাণ অক্সিজেন পৌঁছানোর বন্দোবস্ত করা হয়। তারপরেই সাড়া দিতে থাকে নিস্তেজ শরীর। লাংস এফেক্টিভ স্ট্যাটেজি-তেই ক্রমশ জীবনের পথে পা বাড়ায় একরত্তি প্রাণ। মঙ্গলবার বিকেলে পরিবারের সঙ্গে বাড়ি ফিরবে শুভ্রাংশু। কথায় বলে রাখে হরি মারে কে! তাই ১০ বছরের শুভ্রাংশুকে ফিরে পেয়ে তার বাবা-মাও যেন হাতে স্বর্গ পেয়ে গিয়েছেন। ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের (Institute Of Child Health) চিকিৎসকরা শুভ্রাংশুর মা-বাবার কাছে ভগবানের আর এক রূপ যেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ